স্বল্প উপার্জনের বাউলরা আছেন মহা বিপদে
স্বাধীনতার আটচল্লিশ বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে গড়ে ওঠেনি সঙ্গীত শিল্পীদের ঐক্যবদ্ধ কোনো সংগঠন। বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেও ঐক্য আসেনি শিল্পীদের মধ্যে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশ বেতার এবং টেলিভিশনে শিল্পীদের রয়্যালিটি স্থগিত করা হলেও পরবর্তীতে আর চালু হয়নি। সেই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং এফএম রেডিওগুলোতেও রয়্যালিটি প্রদানের কালচার গড়ে ওঠেনি।
ফলে শিল্পী সুরকার গীতিকাররা আজ পর্যন্ত তাদের সৃষ্টির অধিকার বুঝে পায়নি। ইন্ডাষ্ট্রির সিনিয়র মিউজিশিয়ানরা উদাসীন ছিলেন তাদের স্বার্থের প্রতি। দেশে গানের বাজার সম্প্রসারিত হলেও আসেনি কোনো টেকসই সুফল। মাঝখানে টেলিফোন কোম্পানিগুলো রিংটোনসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে গান বিপণনের ব্যবস্থা করলেও আইনি জটিলতায় বেশিদূর এগুতে পারেনি।
একশ্রেণির মধ্যস্বত্ত ভোগী কন্টেন্ট প্রোভাইডার শিল্পী প্রযোজকদের অনৈক্যের সুযোগে মুনাফা লুটে নিয়েছে।
নানা অসঙ্গতির মধ্যে দিয়ে চলা সঙ্গীতজগত এই করোনাকালে পড়েছে মহাসঙ্কটে। তাদের কোনোরকম সংগঠন না থাকায় সরকারের কাছ থেকে আদায় করতে পারছেনা কোনো সুবিধা। বেকার সময় পার করা বেশির ভাগ মিউজিশিয়ান আছেন বিপদে।
বিশেষ করে স্টেজ শো’গুলো বন্ধ হওয়াতে এখন যন্ত্রশিল্পীরা মোটামুটিভাবে পেশা পরিবর্তনের চেষ্টায় আছে। শুধুমাত্র ঐক্যহীনতায় মাত্র তিনমাসেই সঙ্গীতাঙ্গনের আর্থিক নিরাপত্তায় দৈন্যতার আসল চিত্র বেরিয়ে এসেছে।
এই ক্রাইসিস থেকে আপাতত বাঁচতে হলে সমস্ত প্রাইভেট টেলিভিশন এফএম রেডিও ষ্টেশন এবং বিভিন্ন অ্যাপসগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। নিউজ চ্যানেলসহ সবাইকে ছোট ছোট করে মিউজিক্যাল প্রোগ্রাম শুরু করতে হবে। যেখান থেকে সব পর্যায়ের শিল্পীরা তাদের পেশা টিকিয়ে রাখার সংগ্রামটা চালিয়ে যেতে পারে।
মফস্বলে আরও বাজে অবস্থা। স্বল্প উপার্জনের বাউলরা আছেন মহা বিপদে। এই সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় সব ডিজিটাল প্লাটফর্মগুলোর জন্য আরটিভি হতে পারে একটি রোল মডেল। ছোট ছোট রিয়্যালিটি শো (বাংলার গায়েন) এবং নানা মাত্রিক সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠান তৈরি করে তারা সংস্কৃতিতে গতি ধরে রাখার চেষ্টায় আছে। আরটিভির মতো সবাই এগিয়ে আসলে আপাতত সংকট মোকাবিলায় কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলতে পারে।
এম
মন্তব্য করুন