ব্যাপটিস্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের মধ্যে বেশ কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে, যেগুলো ধর্মীয় বিশ্বাস, আচরণ এবং গির্জার কাঠামোর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। নিচে প্রধান কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হলো—
১. গির্জার কর্তৃত্ব ও গঠন
ক্যাথলিক: রোমান ক্যাথলিক গির্জা একটি কেন্দ্রীয় গঠন অনুসরণ করে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন পোপ। পোপকে অপরিহার্য ধর্মীয় কর্তৃত্ব হিসেবে মানা হয়।
ব্যাপটিস্ট: ব্যাপটিস্ট গির্জাগুলো স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়। প্রতিটি গির্জাই স্বশাসিত এবং বাইবেলকে তাদের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব হিসেবে মানে।
২. ব্যাপটিজম (Baptism)
ক্যাথলিক: শিশুদের ব্যাপটিজম দেওয়া হয়, যা পাপমোচনের প্রতীক এবং খ্রিস্টান জীবনে প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
ব্যাপটিস্ট: কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক বা সচেতন বিশ্বাসীদের ব্যাপটিজম প্রদান করা হয় এবং তা সম্পূর্ণ জলে ডুবিয়ে করা হয় (immersion)। তাদের মতে, এটি ঈশ্বরের প্রতি ইচ্ছাকৃত আস্থা প্রকাশ।
৩. ত্রাণ ও পরিত্রাণ (Salvation)
ক্যাথলিক: ঈশ্বরের অনুগ্রহ, বিশ্বাস, এবং সঠিক কর্ম (good works)—এই তিনটির সমন্বয়ে ত্রাণ লাভ হয়। পবিত্র কর্ম, যাজকদের মধ্যস্থতা, ও গির্জার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাও গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যাপটিস্ট: কেবলমাত্র ঈশ্বরে বিশ্বাস ও অনুগ্রহের মাধ্যমেই ত্রাণ লাভ সম্ভব। মানবীয় কর্মের মাধ্যমে ত্রাণ অর্জন সম্ভব নয় বলে তারা মনে করে।
৪. পবিত্র পদ্ধতি (Sacraments)
ক্যাথলিক: সাতটি পবিত্র পদ্ধতি (সাক্রামেন্ট) মেনে চলে—যেমন: ব্যাপটিজম, কনফার্মেশন, ইউক্যারিস্ট (Holy Communion), পাপস্বীকার (Confession), বিবাহ, যাজক অভিষেক, এবং অসুস্থদের অভিষেক।
ব্যাপটিস্ট: কেবল দুটি সাক্রামেন্ট মেনে চলে—বাপ্তিস্ম ও লর্ড’স সাপার (Lord's Supper), এবং এগুলোকে প্রতীকী হিসেবে গণ্য করে।
৫. মারিয়া ও সাধুদের ভূমিকা
ক্যাথলিক: কুমারী মারিয়াকে বিশেষভাবে সম্মান করা হয় এবং সাধুদের কাছে প্রার্থনা করা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।
ব্যাপটিস্ট: তারা সরাসরি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে এবং সাধুদের কোনো মধ্যস্থতায় বিশ্বাস করে না।
এ পার্থক্যগুলো খ্রিস্টান ধর্মের ভেতরে বিভিন্ন ধারা ও মতবাদের প্রতিফলন। কেউ যদি ব্যাপটিস্ট বা ক্যাথলিক হতে চায়, তাহলে তার জন্য এসব দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য জানা গুরুত্বপূর্ণ।
আরটিভি/টি