ঢাকারোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩১

হকার মাইকিংয়ে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী, মুক্তি মিলবে কি

এসএম শামীম

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ , ০৫:২৮ পিএম


loading/img
লেখক : এসএম শামীম

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনবহুল শহর রাজধানী ঢাকা। যে শহরে বসবাস করে প্রায় ২ কোটি মানুষ। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের এ শহরে কেউ করেন চাকরি, কেউ পড়ালেখা, কেউ আবার ব্যবসা। প্রকৃত অর্থে থেমে নেই কেউ। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই চলমান এ শহরকে ‘অদ্ভুত শহর’ নামেও আখ্যা দেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

মূলত, এ শহরে বসবাসকারীদের মধ্যে তিন শ্রেণির মানুষের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে—উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত। যদিও প্রত্যেকেই ব্যস্ত থাকেন আপন কর্মে। জীবিকার তাগিদে সকাল থেকে রাত অব্দি ছুঁটে চলেন এ মানুষগুলো। প্রত্যেকেরই রয়েছে ভিন্ন রকমের কর্ম।

আজ কথা বলতে চাই ‘ইদুর মারেন’, ‘তেলাপোকা মারেন’, ‘মাজায় ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা’ প্রভৃতি পেশা নিয়ে।  

বিজ্ঞাপন

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আপনি যেখানেই থাকেন না কেন, কোনো-না কোনো সময় মনের অজান্তে হলেও এ শব্দগুলো আপনার কানে আসবেই। সেটি আপনি অফিসে বসেই হোক আর বাসায় শুয়ে থেকে হোক, শুনবেনই। শোনতে আপনি বাধ্য। কোনো রেহাই নেই আমাদের।

তীব্র যানজটের এ শহরে বাসে বসে থাকেন বা পার্কে হাঁটেন কথা একটাই—‘ইদুর মারেন, তেলাপোকা মারেন’, ‘মাজায় ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা’ ইত্যাদি। এ যেন আমাদের পিছু ছাড়ছে না। কিছুতেই না!

আচ্ছা একটু মনে করে দেখুন তো, আপনি কারও সাথে একান্ত নীরবে মোবাইলে কথা বলছেন, আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করছেন বা কোনো কন্টেন্ট তৈরি করছেন। এমন সময় আপনার প্রয়োজন হবে একটা নিরিবিলি পরিবেশ। কিন্তু আপনার কাজ শুরু করার পরই হঠাৎ বাতাসে একটি শব্দ ভেসে আসলো- ‘ইঁদুর মারেন, তেলাপোকা মারেন’ বা ‘কাগো...জ, পেয়া...জ, ছা...ই’ ইত্যাদি। ঠিক সে সময় আপনার অনুভূতিটা কেমন হবে?

বিজ্ঞাপন

রাজধানী ঢাকা, যেখানে- পরিবেশ দূষণ, বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণসহ এমন কোনো দূষণ নেই যা আপনি পাবেন না! মূলত, প্রয়োজনের তাগিদে শত দূষণ সহ্য করেও ঠিকে থাকতে হচ্ছে আমাদের। ফেরার পথ বন্ধ অনেকের। তাই ইচ্ছে না থাকা সত্যেও ইটপাথরের এ শহরে নিজেকে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।

আজ যাদের নিয়ে কথা বলছি- তারা মূলত, নিম্নভিত্ত বা নিম্ন আয়ের মানুষ। সহজ ভাষায় যাদের ‘হকার’ বলা হয়। যদিও হকারদের মাঝে রয়েছে বিভিন্ন শেণিবিন্যাস। রাজধানীর ফুটপাতে যারা ব্যবসা করেন তাদেরকেও হকার বলা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকমের হকার রয়েছে।

কিছুদিন পূর্বে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন, রাজধানীতে সকল প্রকার যানবাহনের হর্ন বাজানো বন্ধ করবেন। মূলত, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্যই এ উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও তার সে উদ্যোগ বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ পরবর্তীতে আর চোখে পড়েনি।

রাজধানীতে শব্দ দূষণের যে কয়েকটি বিশেষ কারণ রয়েছে, তার মধ্যে ‘হকার মাইকিং’ অন্যতম। শহরের বিভিন্ন স্থানে, অলিতে-গলিতে হ্যান্ডমাইক বা ভ্যানে স্থাপিত মাইকে পণ্যের প্রচারাণা চালিয়ে ব্যপক শব্দ দূষণ করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে দেখা যায় না পরিবেশবিদদের। তবে, অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ‘হকার মাইকিং’ খুবই বিরক্তিকর।

দেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সরকারের যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের উচিত হবে রাজধানীর কোটি কোটি মানুষের বিরক্তি ও সুস্থতার কথা বিবেচনায় ‘হকার মাইকিং’ বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ কর। তবে, অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে- কোনো অবস্থাতেই যেন হকারদের ব্যবসা বন্ধ বা তাদের আয়-রুজিতে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়।

লেখক: সাংবাদিক

আরটিভি/ ডিসিএনই

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |