দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপসহীন থাকতে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে দায়িত্বশীল বক্তব্য দিয়েন। সেদিন সেনাবাহিনী মানুষের পাশে না দাঁড়ালে দেশে গৃহযুদ্ধ হতো। আবেগ দিয়ে আন্দোলন হয়, কিন্তু শুধু আবেগ দিয়ে রাষ্ট্র চলতে পারে না। রাজনীতিতে স্ট্রাটেজি লাগে। জানতে হয় কোথায় থামতে হয়, আবার কোথা থেকে শুরু করতে হয়। আজকাল কিছু বলতেও ভয় লাগে। মতামত পছন্দ না হলেই ট্যাগ দেয়। আগেও বিরোধিতা করলেই বিভিন্ন ট্যাগ দেওয়া হতো।
আমিও চাই বাংলাদেশে আরও নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। ৫ আগস্টের পর অনেকের বিতর্কিত বক্তব্যে মনে হয়েছে ২৪ বা ৩৬ জুলাইকে ১৯৭১ এর বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হচ্ছে। জুলাই আন্দোলনেও আমাদের দেশাত্মবোধক ও মুক্তিযুদ্ধের গান গেয়েই সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল সত্যিকারের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। এরপর কিছু উগ্রবাদী আস্ফালনও দেখলাম। নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর স্পষ্ট অবস্থান দেখতে চায়।
রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে সরকারে যাওয়া যায় না। বাকিরা পদত্যাগ করবে না? নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের স্বপ্ন দেখিয়ে অতীতের পুনরাবৃত্তি করলে মানুষ গ্রহণ করবে না। আপনারা ইফতার করবেন টিএসসি বা সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সাধারণ মানুষের সাথে কিন্তু আপনারা গেলেন ইন্টার কন্টিনেন্টালে। রাজকীয় আয়োজনে ডাকলেন ১৩০০ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। আপনারা শিশু আছিয়ার বাড়িতে গেলেন সরকারি হেলিকপ্টারে।
মবের নামে বিচারহীনতার যে ভয়াবহতা গত কয়েক মাসে দেখেছি এ নিয়ে আপনাদের শক্ত অবস্থান কাম্য ছিলো। যারা এসব উস্কানি দিচ্ছেন তাদের এই জনপ্রিয়তা থাকে নাকি দেখেন। এলাকায় ছাত্র সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। আপনারা ব্যবস্থা নিয়েছেন? আপনারা নির্বাচনের কথা শুনলেই ক্ষেপে যান। মানুষের সম্পূর্ণ আস্থা পেতে আর ভোট ব্যাংক তৈরি করতে আগামী ৫/১০ বছর মাঠের রাজনীতি করতে হবে এটা বোঝা দরকার।
জুলাই আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা রাখা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত অন্তর্ভুক্তি হয়নি। ঐক্য নষ্ট হয়েছে। এত প্লাটফর্ম আর দল, বুঝি না কে কার। আন্দোলনে যে নারীরা সেদিন রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তা অনেক উন্নত দেশের নারীদের পক্ষেও সম্ভব না। কিন্তু ইদানিং খেয়াল করছি নারীদের মনোভাব বদলে যাচ্ছে। সেই চাকরি হারানো সাংবাদিকের গালি শুনলেও বোঝা যায়। শহীদ আবু সাইদের ভাই কালকে বলেছেন, সার্জিস আলমকে ফোন করলেও ফোন ধরে না।
লেখক: রাজনীতি বিশ্লেষক/ আইনজীবী