আমেরিকার মসনদে বাইডেন প্রশাসনের অধীষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো এশীয় পরাশক্তি চীনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হলো এক বৈঠক। আলাস্কায় দু’দেশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সে বৈঠক শেষ হয়েছে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় আর পাল্টাপাল্টি দোষারোপে।
চীনা কর্মকর্তাদের অভিযোগ আমেরিকা সবসময় যে তাদের দেশে আক্রমণ চালানোর জন্য মুখিয়ে থাকে। অন্যদিকে আমেরিকা চীনের ওপর কর্তৃত্ব সৃষ্টি বা জবরদস্তি করার অভিযোগ তোলে। তারপরই বৈঠকস্থলে শুরু হয় তুলকালাম অবস্থা।
আরও পড়ুন : মোদিকে বাংলাদেশে ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণা দিলেন তারা
বছরের পর বছর ধরে এই দুই পরাশক্তির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েই চলেছে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র উইঘুর মুসলিমদের ওপর বেইজিং এর বিতর্কিত ভূমিকা নিয়েও কথা তোলে। জাতিসংঘের মতে, ১০ লাখ উইঘুরকে শিবিরে রেখেছে চীন। চীনের বিরুদ্ধে তাদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে।
উত্তপ্ত ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন স্টেট সেক্রেটারি (রাষ্ট্র সচিব) অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও জাতীয়সুরক্ষা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। অন্যদিকে চীনের হয়ে আলোচনা করেন, দেশটির সিনিয়র ফরেন পলিসি কর্মকর্তা ইয়াং জিয়াচি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ে।
আরও পড়ুন : জন্মদোষ কাটাতে নিজের ছাত্রকেই বিয়ে করলেন শিক্ষিকা!
শুরুতেই চীনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ব্লিংকেন বলেন- জিনজিয়াং, হংকং, তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সাইবার হামলাসহ আমাদের মিত্রদের ওপর চীনের অর্থনৈতিক জবরদস্তি নিয়ে মার্কিনীরা উদ্বিগ্ন। তাদের এহেন কার্যকলাপ বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের অবস্থানেও অ্যামেরিকা খুশি নয়, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন ব্লিংকেন।
তার জবাবে ইয়াং ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অন্য দেশকে দমনে নিজের সামরিক শক্তি এবং আর্থিক আধিপত্যকে ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় সুরক্ষার নামে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যার প্রভাব দুই দেশের বাণিজ্যে পড়ছে। পাশাপাশি কিছু দেশকে চীন আক্রমণে উদ্বুদ্ধও করছে।
তিনি আমেরিকার নেতাদের বিদ্রূপের সুরে বলেন, আপনাদের মানবাধিকার তখন কোথায় ছিল যখন আপনারা কালো আমেরিকানদের হত্যা করেছিলেন।
আরও পড়ুন : তানজানিয়ার প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি হলেন সামিয়া
চীন জানিয়ে দিয়েছে, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনো হস্তক্ষেপ তারা মানবে না। শিনজিয়াং, হংকং বা তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকার হস্তক্ষেপ তারা মেনে নেবে না।
এ সময় সুলিভান সুর নরম করে বলেন, আমেরিকা এখানে চীনের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বে জড়াতে আসেনি। তবে আমরা আমাদের জনগণ, নীতি-আদর্শ ও আমাদের বন্ধুদের পাশে দাঁড়াবই।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এই বৈঠক।
সূত্র : বিবিসি
টিএস