আলোচিত ব্যবসায়ী প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকি, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতির প্রাথমিক অভিযোগ পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা।
রোববার মুসা বিন শমসেরের জবানবন্দি শেষে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মইনুল খান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মইনুল খান বলেন, মুসাকে প্রধান আসামি করে শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় মামলা করবে শুল্ক গোয়েন্দা। পাশাপাশি মানি লন্ডারিংয়ে সহযোগী করে আরেকটি মামলা করা হবে। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে আইনগতভাবে দুর্নীতির বিষয় জানানো হবে।
তিনি বলেন, শুল্ক গোয়েন্দার উপ-পরিচালক (ডিডি) এইচ এম শরিফুল হাসানসহ দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি মুসাকে বিকেল ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে নানাবিদ তথ্য উঠে এসেছে।
শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক বলেন, ইংল্যান্ডের নাগরিক ফরিদ নাবিরের কাছ থেকে ২০১০ সালের ১২ মার্চ দুই কোটি ১৫ লাখ টাকায় ল্যান্ড রোভার গাড়িটি মাত্র ৫০ লাখ টাকায় ক্রয় করেন প্রিন্স মুসা। কিন্তু ফরিদ সে টাকা বাংলাদেশে না রেখে বিদেশে নিয়ে যান। যা মানি লন্ডারিং আইন লঙ্ঘন। তাই ফরিদ নাবিরকে প্রধান ও মুসাকে সহযোগী আসামি করে মানি লন্ডারিং মামলা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, গাড়িটি ক্রয়ে ১৭ লাখ টাকার ভুয়া বিল তৈরি করে শুল্ক ফাঁকি দেন মুসা। তাই শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে মুসাকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হবে।
দুর্নীতি নিয়ে মইনুল বলেন, ল্যান্ড রোভার গাড়িটি বিআরটিএ’র কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ছাড়পত্র নেয়া হয়। যা দুদক আইনে অপরাধ। দুদককে এ বিষয়ে আমরা জানাবো। দুদুক তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে বিকেল ৩টায় ৫ আইনজীবী ও ৩০ দেহরক্ষী নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে হাজির হন মুসা। তবে ৩ জন দেহরক্ষী তার সঙ্গে কার্যালয়ে প্রবেশের সুযোগ পান।
২৩ এপ্রিল শুল্ক ফাঁকি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুসাকে ৭ মে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেয় শুল্ক গোয়েন্দা।
এর আগে তাকে ২০ এপ্রিল হাজির হতে নোটিশ দিয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু ১৯ এপ্রিল সকালে আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও বাকরুদ্ধের মতো নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হবার কারণ দেখিয়ে সময় প্রার্থনা করেন মুসা।
গেলো ২১ মার্চ গুলশান-২ এর রোড নম্বর ১০৪, হাউস ৮’র বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রেঞ্জ রোভার গাড়ি আটক করে শুল্ক গোয়েন্দারা। গাড়িটি ভোলা বিআরটিএ থেকে ভুয়া বিল অব এন্ট্রি দিয়ে ফারুকুজ্জামানের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। গাড়ি নম্বর ভোলা (ঘ ১১-০০৩৫)।
এদিকে গাড়ির চেসিস অনুসারে এটি কার্নেট ডি প্যাসেজের মাধ্যমে আনা হলেও শর্ত মোতাবেক পুনঃরপ্তানি হয়নি। প্রিন্স মুসা গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার এবং জালিয়াতি করে অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করেন। তিনি নিজেই গাড়িটি ব্যবহারকারী। এতে সরকারকে ২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা শুল্ককর ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
এমসি/জেএইচ