গেলো ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে দু’ছাত্রী ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি সাফাত ও সাদমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সিলেট জালালাবাদ থানার মদিনামার্কেট এলাকার রশীদ ভিলাতে আত্নগোপন করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে সিলেট থেকে তাদের দু’জনকে আটক করা হয়।
আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হবার পর ঢাকা থেকে পুলিশের একটি বিশেষ দল (টেকনিক্যাল) সিলেটে আসে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাত ৯টায় সাফাত ও সাদমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি কর্মকর্তা জেদান আল মুসা জানান, প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সাফাত ও সাদমানের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ।
অভিযানের আগে সিলেট মহানগর পুলিশের সহযোগিতা চাইলে পুলিশ ঢাকা থেকে আগত অভিযানকারী দলকে সহযোগিতা করে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, অভিযানের আগে পুরো বাসাটি ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল, যাতে কোনোভাবেই ভবন থেকে লাফ দিয়ে আসামিরা পালিয়ে যেতে না পারে।
ধর্ষণ মামলা করার পর আত্মগোপনে চলে যায় মামলার ৫ আসামি। এরপর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েও সফলতা পায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এর আগে সোমবার (৮ মে) সাফাত, সাদমানসহ পাঁচজন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার টিল্লাপাড়ার ‘রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে’ রুম ভাড়া নিতে গিয়েছিল। কিন্তু রুম ভাড়া দেয়ার আগে হোটেলের কর্মচারীরা তাদের কাছে ভোটার আইডি কার্ড চাইতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাফাত। এরপর সাফাত ও তার সহযোগীরা তড়িঘড়ি করে ওই হোটেল ছেড়ে চলে যায়। পরে আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্য প্রযুক্তির আশ্রয় নেয় পুলিশ।
রশীদ ভিলায় গিয়ে দেখা যায়, তিন তলা ভবনের পুরো বাড়িই খালি। বছরের বিভিন্ন সময়ে মামুনুর রশীদের পরিবারের কেউ আসলে এখানে কয়েক সপ্তাহ থাকেন বলে কেয়ারটেকার নুরুন্নবী জানিয়েছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বনানীর ধর্ষণের শিকার হওয়া ২ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী।
ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের খাস কামরায় তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়।
এর আগে ডিবির উপ-কমিশনার বলেছিলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারে বনানী থানা পুলিশের সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে আসামিরা কোথায় আছে, তা বলা যাবে না। তবে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।
এখনো কোনো আসামির দেশের বাইরে পালিয়ে যাবার তথ্য পুলিশের কাছে নেই এবং মামলাটির ‘ছায়াতদন্ত’ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২৮ মার্চ বনানীর ‘দি রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় গেলো শনিবার ৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়। এদের কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আসামিরা হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ (২৬), পিকাসো রেস্তোরাঁর মালিকের ছেলে সাদমান সাকিফ (২৪), একজন ঠিকাদারের ছেলে নাঈম আশরাফ(৩০) এবং অপর দুই আসামির একজন হলেন সাফাতের দেহরক্ষী ও আরেকজন হলেন গাড়িচালক।
এপি/জেএইচ