রোজা রেখে রক্ত দেওয়া যাবে কি না, জেনে নিন

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ০৩:৪৩ পিএম


রক্তদান
ছবি : সংগৃহীত

রক্তদান নিঃসন্দেহে ভালো কাজ। কারণ, আপনার দেওয়া রক্তে বেঁচে যেতে পারে কারও প্রাণ। রোজা রেখে রক্তদান করার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে নিষেধ নেই। অনেকেই এ সময়ে রক্ত দেওয়া নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তবে রোজা থাকা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত দিলে রোজা ভাঙে না। কারণ, এখানে রক্ত বের করে নেওয়া হচ্ছে, দেওয়া নয়। 

বিজ্ঞাপন

রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত দিলে রোজা ভাঙবে না। তবে কেউ যদি শারীরিকভাবে এমন দুর্বল হয় যে, রক্ত দিলে সে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবে, তাহলে তার জন্য রক্ত দেওয়া মাকরুহ। আহসানুল ফাতাওয়া: ৪/৪৩৫

হজরত আকরামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবি করিম (সা.) হজের জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন।

বিজ্ঞাপন

তাছাড়া রক্তদান একজন রোগীর সেবার অন্তর্ভুক্ত। কারণ পবিত্র কোরানে আছে, যে ব্যক্তি কোনো মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন পুরো মানবজাতিকে রক্ষা করল।

তবে রোজা রেখে রক্তদান করলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে রক্ত দেওয়ার পর রক্তদাতা শারীরিক সমস্যায় না পরেন।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামত অনুযায়ী একজন সু-সবল ব্যক্তির শরীরে প্রায় ১ থেকে দেড় লিটার বাড়তি রক্ত থাকে, তাই যেকোনো জরুরি অবস্থায় রক্তদান করলেও শরীরে ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়ে না। অবশ্য এই পরিমাণের চেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ হলে অন্য কথা। রক্তদান-পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তিন-চার লিটার পানি বেশি খেলে, রক্তদানজনিত ভলিউম–স্বল্পতা কেটে যায়। তবে কেউ যদি শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে, মনে করেন যে তিনি রক্ত দিলে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবেন, তাহলে তাঁর জন্য ইফতারের পর রক্ত দেওয়া বাঞ্ছনীয়। 

বিজ্ঞাপন

আমরা জানি, স্বাভাবিক প্রবেশপথ দিয়ে পেটে বা মস্তিষ্কে কোনো কিছু গেলে রোজা ভেঙে যায়। কিন্তু শরীর থেকে কোনো কিছু বের হলে রোজা ভাঙে না। তাই দুর্ঘটনায় পড়ে, হাত-পা ভেঙে বা কেটে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙবে না। রক্ত গড়িয়ে পড়লে অজু ভঙ্গ হয়, রোজা নয়। রক্তদানের পর রক্তদান কেন্দ্রে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে রক্তের ভলিউম ঠিক হয়ে যায়। এই বিশ্রামে শরীর ঝিমঝিম করা, মাথা হালকা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

রোজার দিনগুলোয় রক্তদানের পর ২-৪ ঘণ্টা ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। যেমন শারীরিক পরিশ্রম, সাইকেল চালানো, অধিক উচ্চতায় কাজ করা ইত্যাদি। রক্তদান পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তরলজাতীয় উপাদান যেমন ডাবের পানি, ফলের রস, খাওয়ার স্যালাইন, নরমাল পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ লিটার বেশি খেতে হবে।

মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ একজন ব্যক্তি রক্তদানের জন্য উপযুক্ত। রক্তদানের আগের রাতে ৬-৮ ঘণ্টার ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারপরও কোনো রকম অসুবিধা হলে রক্তদান কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অতএব রক্তদানে রোজা ভেঙে যাওয়ার কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে মানবসেবার তরে রমজান মাসে রক্ত দিতে প্রস্তুত থাকা উচিত। এতে করে রোজার সওয়াবের পাশাপাশি মানবসেবার সওয়াবও পাওয়া যাবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission