শত বছর বয়সে প্রেম, অতঃপর...

আরটিভি নিউজ

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪ , ০৭:০৩ পিএম


হ্যারোল্ড টেরেন্স এবং জেনি শার্লিন
হ্যারোল্ড টেরেন্স এবং জেনি শার্লিন/ছবি: রয়টার্স

পাত্রের বয়স ১০০, পাত্রী ৯৬। প্রেমের কোনো বয়স হয় না। গল্প-উপন্যাসে কিংবা বাস্তবে এর আগে বহুবার তা প্রমাণিত হয়েছে। ফের একবার সে কথা মনে করিয়ে দিলো নিউইয়র্কের বাসিন্দা হ্যারোল্ড টেরেন্স এবং জেনি শার্লিনের প্রেমকাহিনি। প্রেমের পর এবার বিয়ে করলেন দুজনে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৮ জুন) ফ্রান্সের নরমন্ডির ক্যারেন্টান-লেস-মারাইস টাউন হলে নবদম্পতি তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান উদযাপন করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মরণে ডি-ডে বার্ষিকীতে তারা বিয়ে সারেন। ফ্লোরিডার বাসিন্দা টেরেন্স ও সয়েরলিনের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।

বিজ্ঞাপন

বিয়ের পর টেরেন্স বলেন, বিয়ের এ দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা দিন।

উৎফুল্ল সয়েরলিন বলেন, জেনে রাখুন ভালবাসা কেবল তরুণ-তরুণীদের জন্য নয়, এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এখন প্রজাপতিতে পরিণত হয়েছি বলে মনে হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টেরেন্স মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের পর তিনি তিনি থেলমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। থেলমা ২০১৮ সালে মারা যান। পরে ২০২১ সালে সয়েরলিনের সঙ্গে টেরেন্সের পরিচয় হয়।

বিজ্ঞাপন

পড়াশোনা চলাকালীন বিমানবাহিনীতে যোগ দেন হ্যারোল্ড। হ্যারল্ডের বয়স তখন ২০। চাকরি সূত্রে পাড়ি দেন ইংল্যান্ড। কয়েক বছর সেখানেই ছিলেন।

হঠাৎই ইংল্যান্ড ছেড়ে যাযাবর হয়ে যান। ইউক্রেন, বাগদাদ, তেহরানসহ বিভিন্ন দেশে ঘুরে কাজ করতে থাকেন।বেশ কয়েক বছর এভাবে চলার পর জীবনে থিতু হতে চান তিনি। তাই আবার আমেরিকায় ফিরে আসেন।

নিজের মাটিতে ফিরে শুরু করেন নতুন জীবন। দীর্ঘ দিনের বন্ধু থেলমার সাথে সংসার পাতেন। বছর দুয়েকের মধ্যে তাদের ঘরে আসে দুই সন্তান।

স্ত্রী, সন্তানকে ছেড়ে কাজে ফেরার ইচ্ছা ছিল না হ্যারোল্ডের। কিন্তু স্ত্রীর জোরাজুরিতেই আবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। হ্যারল্ড চলে যাওয়ার পর সংসার এবং সন্তানের সমস্ত দায়িত্ব গিয়ে পড়ে থেলমার ওপর। অবশ্য দায়িত্ব পালনে কোনো ত্রুটি রাখেননি তিনি। সন্তানেরা বড় হয়ে নিজেদের মতো জীবন গুছিয়ে নেয়।

জীবনের বেশিভাগ সময় পরিজনদের সঙ্গ পাননি। জীবনের শেষটা এমন হোক, তা চাননি হ্যারল্ড। ২০২১ সালে চাকরি থেকে পুরোপুরি অবসর নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু নিয়তিতে যা লেখা থাকে, তার অন্যথা হওয়ার জো নেই।

হ্যারল্ড বাড়ি ফেরার মাসখানেকের মধ্যে মারা যান থেলমা। দুই ছেলে কাজের সূত্রে ভিন্‌দেশে। স্ত্রীর মৃত্যুর আবার একা হয়ে যান বৃদ্ধ হ্যারল্ড। তার এই নিঃসঙ্গ জীবনে হঠাৎই আলাপ জেনির সাথে।

জেনি ছিলেন অবিবাহিত মনের মতো কাউকে পাননি, তাই সংসারও পাতা হয়নি। ৯৬ বছর বয়সে হ্যারল্ডের সাথে আলাপ হওয়র পর জেনির মনে হয়েছিল, এ মানুষটিরই জন্যই তিনি অপেক্ষা করছিলেন। তাই সময় নষ্ট না করে নিজেই মনের কথা বলে দেন তিনি। দেরি করেননি হ্যারল্ড, জেনির সাথে জীবনের বাকি দিনগুলো হেসেখেলে কাটিয়ে দিতে চেয়ে নতুন করে শুরু করেন। সেই থেকে শুরু। অবশেষে দু’জনে বিয়ে করেন।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission