ঢাকাশুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার ৩০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১২ আগস্ট ২০২৪ , ০৯:২৯ এএম


loading/img
ছবি: বিবিসি

ইউক্রেনীয় সৈন্যরা রাশিয়ার অভ্যন্তরে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। প্রায় সপ্তাহখানেক আগে রাশিয়ার কুরস্ক শহরে প্রবেশ করে ইউক্রেনীয় সেনারা। সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলটিতে ট্যাংকসহ অন্যান্য ভারী অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে তারা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় রুশ আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এটিই রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয় সেনাদের সবচেয়ে গভীর এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অনুপ্রবেশ।

বিজ্ঞাপন

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই ঘটনার মাধ্যমে কিয়েভ ‘রাশিয়ার শান্তিপূর্ণ জনগণকে ভয় দেখানোর’ চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের বাহিনী টোলপিনো এবং ওবশচি কোলোদেজ গ্রামের কাছে ইউক্রেনীয় সেনাদের মুখোমুখি হয়েছে। অন্যদিকে কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় আক্রমণ ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত রাতে দেওয়া ভাষণে প্রথমবারের মতো সরাসরি রাশিয়ায় হামলার কথা স্বীকার করেন। পরে তিনি বলেন, চলতি গ্রীষ্মে রাশিয়ার কুরস্ক থেকে ২০০০টি আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ চালানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার কিয়েভ থেকে দেওয়া রাতের ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘কামান, মর্টার, ড্রোন। আমরা ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও রেকর্ড করেছি এবং এই জাতীয় প্রতিটি হামলাই ন্যায্য প্রতিক্রিয়ার দাবি রাখে।’

ইউক্রেনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, হাজার হাজার সৈন্য এই অভিযানে নিয়োজিত রয়েছেন। রাশিয়ান সীমান্ত রক্ষীদের প্রাথমিকভাবে যে ছোট অনুপ্রবেশের কথা বলা হয়েছিল এই সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি।

ইউক্রেনীয়-সমর্থিত বিভিন্ন নাশকতামূলক গোষ্ঠী মাঝে মাঝে রাশিয়ায় আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। তবে কুরস্ক অঞ্চলে এই আক্রমণটি কিয়েভের প্রচলিত বাহিনীর রাশিয়ান ভূখণ্ডে এই আক্রমণকে সবচেয়ে বড় সমন্বিত হামলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আক্রমণাত্মক। উদ্দেশ্য শত্রুদের অবস্থান আরও প্রসারিত করা, সর্বাধিক ক্ষয়ক্ষতি করা এবং রাশিয়ার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা কারণ তারা তাদের নিজস্ব সীমান্ত রক্ষা করতে অক্ষম।’

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার বলেছে, তাদের বাহিনী ‘সাঁজোয়া যানসহ শত্রুদের রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে প্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে’।

কিন্তু স্পষ্ট স্বীকারোক্তিতে কিয়েভের বাহিনী সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলের গভীরে অগ্রসর হয়েছে বলে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, টোলপিনো এবং ওবশচি কোলোদেজ গ্রামের কাছে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সঙ্গে তারা লড়াইয়ে নিযুক্ত রয়েছে। আর এই এলাকাটি রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ কিমি এবং ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

এছাড়া অনলাইনে প্রচারিত এবং বিবিসির যাচাইকৃত ভিডিও ফুটেজগুলোতে সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে লেভশিঙ্কা গ্রামের কাছে রাশিয়ান হামলা হতেও দেখা যায়।

অন্যদিকে ইউক্রেনের সেনারা কুরস্ক অঞ্চলে বেশ কিছু বসতি দখল করেছে বলে দাবি করেছে। রাশিয়ার অভ্যন্তরে প্রায় ৩ কিমি দূরে অবস্থিত গুয়েভোতে গ্রামে সৈন্যরা একটি প্রশাসনিক ভবন থেকে রাশিয়ার পতাকা অপসারণের ছবি সামনে এনেছে।

রাশিয়ার কুরস্কের সঙ্গে ইউক্রেনের সামি অঞ্চলটি অবস্থিত। বার্তাসংস্থা এএফপির সাংবাদিক সেখানে ইউক্রেনের সেনাদের ভারী অস্ত্রসস্ত্র দেখতে পেয়েছেন। সামির এক বাসিন্দা বলেছেন, রাশিয়ায় তাদের সেনারা যে হামলা চালিয়েছে এতে তিনি খুশি। কারণ এতে করে রাশিয়ার মানুষ বুঝতে পারবে যুদ্ধ আসলে কেমন।

এএফপির সাংবাদিক জানিয়েছেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের পূর্ব দিকে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। ওই স্থানে থাকা ইউক্রেনীয় সেনারা যেন স্বস্তি পান সেজন্য হয়তবা রাশিয়ার কুরস্কে এই আকস্মিক হামলা চালানো হয়েছে।

কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সুমি অঞ্চলে, বিবিসি সাংবাদিকরা সাঁজোয়া কর্মী বাহক এবং ট্যাঙ্কগুলির একটি অবিচ্ছিন্ন স্রোত রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হতে দেখেছেন।

রাশিয়া বলেছে, কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্ত এলাকা থেকে ৭৬,০০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যেখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |