মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ, ওয়াশিংটন যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সোমবার ফোনে কথা হয়েছে নরেন্দ্র মোদির। আলোচনার পর এক্স হ্যান্ডেলে বৈঠকের বিষয়ে জানিয়েছেন মোদি। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনার পর হোয়াইট হাউসও একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ভারত যাতে নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম আমেরিকার কাছ থেকে কেনে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বস্তুত এই আলোচনার শেষেই নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফর নিয়ে আলোচনা করেছেন দুই রাষ্ট্রনেতা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতেই প্রধানমন্ত্রী মোদি আমেরিকা সফর করতে পারেন। ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব ভালো।
আলোচনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন মোদি। সেখানে লিখেছেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষার বিষয়ে আমরা আশাবাদী। দুই দেশের মানুষ এবং ভূরাজনৈতিক শান্তি এবং সুরক্ষার বিষয়েও দুই দেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ট্রাম্প-মোদি সম্পর্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম টার্মেও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মোদি রাষ্ট্রনেতা হিসেবে প্রথম তাকে অভিনন্দন জানান। ট্রাম্পকে মোদি সম্বোধন করেছেন ‘ডিয়ার ফ্রেন্ড’ বলে।
২০১৯ সালে ট্রাম্পের আমলে আমেরিকায় ভারতীয় নাগরিকদের সভায় মোদি ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই সভার নাম ছিল হাউডি মোদি। ২০২০ সালে গুজরাতে এসে ট্রাম্প ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই সভার নাম ছিল নমস্তে ট্রাম্প। পুরোনো সেই সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চাইছেন মোদি। সোমবারের আলোচনায় সে কথাই আরও একবার স্পষ্ট হলো।
ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক
আমেরিকা ভারতের বিষয়ে আগ্রহী কারণ, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে চীনকে টক্কর দিতে হলে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। ভারতও চীনকে দেখাতে চায় যে, আমেরিকা তার পিছনে আছে। এই পরিস্থিতিতে জো বাইডেনের প্রশাসনও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেছে। বাইডেনের আমলে মোদি সরকার আমেরিকার কাছ থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে। তবে ট্রাম্পের আমলে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ক কোন পথে যাবে, তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা আছে। কারণ, ট্রাম্প ভারতকে ট্যারিফ কিং হিসেবে আগেই চিহ্নিত করেছেন।
ট্রাম্প যদি ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করেন, যেমন তিনি ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশের সঙ্গে করেছেন, তাহলে ভারতের ব্যবসা মার খাবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ভারতীয় সেনার সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল তথা সামরিক বিশেষজ্ঞ উৎপল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, চীনকে ঠান্ডা রাখতে আমেরিকার ভারতকে প্রয়োজন। চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ভারতের আমেরিকাকে প্রয়োজন। বাইডেনের সময়েও এই কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল। তবে ট্রাম্প-মোদির সুসম্পর্ক এই কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
আরটিভি/আরএ/এস
মন্তব্য করুন