কোরআন পোড়ানো ব্যক্তি হত্যার পেছনে বিদেশি শক্তি থাকতে পারে: সুইডেন
সুইডেনে কোরআন পোড়ানো এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার সঙ্গে বিদেশি শক্তি জড়িত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টাশন। বুধবার নিজ বাড়িতে ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে তাদের মধ্যে বন্দুকধারী আছেন কিনা তা জানানো হয়নি।
নিহত ব্যক্তির নাম সালওয়ান মোমিকা। তিনি ইরাকি খ্রিষ্টান শরণার্থী। ২০২৩ সালে বেশ কয়েকবার কোরআন পুড়িয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন মোমিকা। বৃহস্পতিবার তার স্টকহোমের জেলা আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল। সেদিন তার বিরুদ্ধে করা একটি জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়ানোর মামলার রায় হওয়ার কথা ছিল।
আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, নিরাপত্তা বাহিনী বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছে, কারণ, স্পষ্টতই এমন এক ঝুঁকি আছে যে, এর সঙ্গে একটি বিদেশি শক্তির সংযোগ আছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উপ-প্রধানমন্ত্রী এবা বুশ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন। এক্স-এ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, এটা আমাদের মুক্ত গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। সমাজের পূর্ণ শক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে অবশ্যই লড়তে হবে।
মোমিকা এবং তার সহ-প্রতিবাদকারী সালওয়ান নাজিমের বিরুদ্ধে গত ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে চারবার একটি জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।
চার্জশিটে বলা হয়, তিনি কোরআনে আগুন দেয়াসহ একাধিকবার ধর্মগ্রন্থটির অবমাননা করেছেন। এসব করার সময় মুসলমানদের জন্য মর্যাদাহানিকর নানা মন্তব্যও করেছেন তিনি। একবার স্টকহোম মসজিদের সামনে প্রতিবাদের আয়োজন করেন মোমিকা।
সালওয়ান মোমিকা-সালওয়ান নাজিম জুটির কোরআন পোড়ানোর আয়োজনকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুইডেনের সম্পর্ক ক্ষুন্ন হয়। সুইডেন পুলিশ বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দিলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করে। কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে দুইবার বাগদাদের সুইডেন দূতাবাসে হামলা চালায় প্রতিবাদকারীরা। দ্বিতীয়বার হামলার সময় সেখানে অগ্নিসংযোগও করা হয়েছিল। গত মার্চে নরওয়েতে আশ্রয় চেয়েছিলেন মোমিকা। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ রাখার পর নরওয়ে আবার তাকে সুইডেনে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। সুইডেনের অভিবাসন সংস্থা ২০২৩ সালে মোমিকাকে তার দেশে ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি, কারণ, ইরাকে তার ওপর নির্যাতন ও অমানবিক আচরণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন