ভারত ও পাকিস্তান কেউই যেন কাউকে দেখতে পারে না। তাদের সম্পর্কটা এরকমই সাপে-নেউলে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দু’দেশের চিরবৈরী মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে। তাইতো ভারতের হুমকির প্রতিবাদে এবার আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে)-সহ পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। খবর জিও নিউজের।
এর আগে, গত ২২ এপ্রিল ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২৬ পর্যটক হারান।
পরে এ ঘটনায় জড়িতদের ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে’ মদদ দেওয়ারও অভিযোগ আনেন তিনি।
এ ছাড়া ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তানও।
এ অবস্থায় স্থানীয় একটি দলের ডাকা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আজমল বালুচ নামের একজন ব্যবসায়ী আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এএফপিকে বলেন, ভারত যদি যুদ্ধে জড়াতে চায়, তাহলে প্রকাশ্যে এগিয়ে আসুক।
এ সময় আজমল এবং অন্য বিক্ষোভকারীরা সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিলসহ ভারতের ‘অগ্রহণযোগ্য’ নানা হুমকির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
২৫ বছর বয়সী মুহাম্মদ ওয়াইস বলেন, পানি আমাদের অধিকার এবং আল্লাহর ইচ্ছায়, আমরা এটি পুনরুদ্ধার করব। এমনকি যদি এর জন্য যুদ্ধের মাধ্যমেও কিছু করতে হয়, আমরা পিছু হটব না।
ভারতবিরোধী স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে মুজাফ্ফরাবাদের মূল শহরেও মিছিল হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায়ও বিক্ষোভ হয়েছে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সিনিয়র নেতা জাভেদ মীর বলেছেন, ভারত যদি আক্রমণ করার মতো ভুল করে, তাহলে পাকিস্তানি কাশ্মীরিরা সামনের সারিতে লড়াই করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পাকিস্তানের জন্য মরতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক রাজনীতি।
এরই মধ্যে ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এই দাবি তীব্রভাবে অস্বীকার করে একে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
এদিকে হামলার পরদিন বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত ও ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ উল্লেখযোগ্য।
পাল্টাপাল্টি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে বর্তমানে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যা হয়তো সামরিক সংঘাতে গড়াতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
আরটিভি/আইএম/এস