ইয়েমেনে গত তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে চরম অপুষ্টিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৮৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। ব্রিটেনভিত্তিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন তাদের এক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। খবর বিবিসির।
শীর্ষ এই আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাটি বলছে, এই সংখ্যাটা যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বার্মিংহামের পাঁচ বছরের কম বয়সী মোট শিশুর পরিমাণের সমান।
ইয়েমেনে পুষ্টিহীনতায় নিহত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়ে জাতিসংঘের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই সংখ্যা নির্ধারণ করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন। ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৭০১টি শিশুর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে তারা।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতের নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ণয় করা কঠিন, তবে দেশটির অর্ধেক ভূখণ্ডের স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে, সেখানে কোনোরকম চিকিৎসা সুবিধা কাজ করছে না। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা অবরোধের মুখে থাকায় অনেক মানুষকে অভাবে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
সৌদি আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে খাবারের দাম বৃদ্ধি ও দেশের মুদ্রার মূল্যমানের পতন হওয়ায় আরও অনেক পরিবার খাদ্যের অনিশ্চয়তায় রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
এক সময় ইয়েমেনের মোট খাদ্য আমদানির ৯০ শতাংশই হুদাইদাহ বন্দর দিয়ে আসতো। হুথিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বন্দরটি দখলে নেয়ার জন্য সৌদি সমর্থিত সন্ত্রাসীরা হামলা শুরু করায় বাণিজ্যিক আমদানি কমে যায়। সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, এ বন্দর দিয়ে বাণিজ্যিক আমদানির পরিমাণ এক মাসে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কমেছে।
প্রতিবেদনে সেভ দ্য চিলড্রেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যদি চরম অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শিশুদের চিকিৎসা না দেয়া হয় তবে বছরে প্রায় ২০-৩০ শতাংশ শিশু প্রাণ হারাবে।
অন্যদিকে জাতিসংঘ গত মাসেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইয়েমেনের এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরও কয়েকটি দেশের সহযোগিতায় ২০১৫ সালের মার্চ থেকে দরিদ্র প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে হামলা শুরু করেছে সৌদি আরব। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত শিশুসহ ১৪ হাজারের বেশি ইয়েমেনি নিহত হয়েছেন।
এ