যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভে পুলিশি হামলার শিকার সাংবাদিকরা
আফ্রিকান আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রে নিউজ সংগ্রহের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর টার্গেট হয়েছে অন্তত ডজনের বেশি সাংবাদিক। নিরপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এসময় তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও মরিচের গুড়া স্প্রে করে। খবর বিবিসির।
হামলার শিকার হওয়া অধিকাংশ সাংবাদিকই বলেছেন, তারা প্রেসের ডকুমেন্ট দেখার পরও হামলার শিকার হয়েছে। তবে সাংবাদিকরা যে কেবল নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছে, তা নয়। বিক্ষোভকারীদেরও রোষের মুখে পড়ে সাংবাদিকরা।
এমন হামলাকে সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা বলে বর্ণনা করেছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস
সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার শুরু হয় শুক্রবার। ওইদিন লাইভ সম্প্রচারের সময়ই সিএনএনের টিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সিএনএনের টিম ওই সময় মিনিয়াপোলিস থেকে বিক্ষোভের নিউজ কভার করছিল।তবে পরবর্তী কয়েকদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও বহু সাংবাদিক শারীরিকভাবে হামলার শিকার হওয়ার খবর সামনে আসে।
অলাভজনক একটি প্রজেক্ট ইউএস প্রেস ফ্রিডম ট্র্যাকার বলছে, গত তিনদিনে ১০০টির বেশি ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ভঙ্গের’ ঘট্না ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে ৯০টিই হামলার ঘটনা ছিল।
শনিবার রাতে রয়টার্স নিউজের টিভি ক্রুর দুজন সদস্য পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটে আহত হয়। কারফিউ ভেঙ্গে মিনিয়াপোলিসে বিক্ষোভের সময় তারা আহত হন। রয়টার্সের ক্যামেরাম্যান জুলিও-সিজার চাভেজ বলেন, একজন পুলিশ অফিসার, যাকে আমি ফিল্ম করছিলাম তিনি আমার দিকে ঘুরে সরাসরি তার রাবার বুলেট রাইফেল তাক করে। রয়টার্স জানিয়েছে, তারা মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগকে ভিডিও ফুটেজ দেয়ার পরও তারা কোনও মন্তব্য করেনি।
রোববার সন্ধ্যায় পুলিশি আক্রোশের শিকার হয় বিবিসির একজন ক্যামেরাম্যান। ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় এক দাঙ্গা পুলিশ অফিসার তার শিল্ড দিয়ে বিবিসির ওই ক্যামেরাম্যানের দিকে তেড়ে আসেন।
একই দিন ক্যালিফোর্নিয়ায়র লং বিচে একজন রেডিও রিপোর্টার আডোলফো গুজম্যান-লোপেজ বলেন, একজন পুলিশ অফিসারের ছোঁড়া রাবার বুলেট তার গলায় লেগেছে। পরদিন শহরের পুলিশ প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনা খতিয়ে দেখছেন।
শুক্রবার রাতে মুখোশ পরা বিক্ষোভকারীরা হোয়াইট হাউজের কাছে ফক্স নিউজের একজন ক্রুকে ধাওয়া করে। বর্ষীয়ান ফক্স করসপন্ডেন্ট লেল্যান্ড ভিট্টের্ট বলেন, তাহরির স্কয়ারে (মিশরের রাজধানী কায়রোয়) ধাওয়া খাওয়ার পর এটাই আমার সবচেয়ে ভীতিকর অভিজ্ঞতা।
ভাইস নিউজের সাংবাদিক মাইকেল অ্যান্থনি অ্যাডাস বলেছেন,শনিবার রাতে তার মুখে মরিচের গুড়া স্প্রে করে একজন পুলিশ অফিসার। এসময় তিনি তার কার্ড দেখিয়ে চিৎকার করে প্রেসও বলেছিলেন। শুক্রবার রাতে পুলিশের দিক থেকে ছোঁড়া এক প্রজেক্টাইল ফ্রিল্যান্স ফটোজার্নালিস্ট লিন্ডা টিরান্ডোর বাম চোখে লাগে। তার চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।
একই রাতে কেন্টাকির লুইসভাইলে স্থানীয় নিউজ স্টেশন ওয়েভ থ্রির একজন সাংবাদিক লাইভের সম্প্রচার গুড়া মরিচের বল হামলার শিকার হন। একজন পুলিশ অফিসার তাকে লক্ষ্য করে ওই বল ছোঁড়েন।
হামলার শিকার হয়েছেন জার্মানির আন্তর্জাতিক নিউজ ব্রডকাস্টার ডয়চে ভেলের একজন রিপোর্টারও। লাইভের প্রস্তুতি নেয়ার সময় পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে একটি প্রজেক্টাইল নিক্ষেপ করে। এসময় তিনি ‘প্রেস’ লেখা ভেস্টও পরেছিলেন এবং তারপরও তাকে গ্রেপ্তারেরও হুমকি দেয়া হয়।
এ
মন্তব্য করুন