গাজায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে ৪৩০ জনের বেশি মানুষকে হত্যার পর এবার স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান পুনরায় শুরু করেছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তাদের সেনারা গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।
হামলাকে ‘নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক’ অভিযান বলে উল্লেখ করেছে আইডিএফ।
আইডিএফ জানিয়েছে, তারা গাজাকে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোর দখলের জন্য এই অভিযান চালিয়েছে। এরই মধ্যে তারা একটি করিডোর দখল নিয়েছে।
গত মাসে যুদ্ধবিরতির চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল এই এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছিল।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এই স্থল অভিযান এবং নেটজারিম করিডোরে প্রবেশকে ‘নতুন এবং গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, ইসরায়েলি ট্যাংক প্রথমবারের মতো গাজা সিটির দক্ষিণে নেযারিমের কাছে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটের পৌঁছেছে এবং চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, আল-দিন স্ট্রিট রুটের ধরে দক্ষিণ দিকে যান চলাচল খোলা রয়েছে, যা আগে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীরা যানবাহনে উত্তরে ফিরে আসার জন্য ব্যবহার করত। গাজার পশ্চিমে উপকূলীয় আল-রশিদ স্ট্রিটটি এখনো খোলা রয়েছে, যেখানে মানুষ হাঁটতে পারে এবং উত্তর দিকে যেতে পারে।
এটি বন্ধের কারণ হিসেবে ইসরায়েল জানিয়েছে, এটি হামাস এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করার জন্য, বিশেষ করে যেহেতু ইতোমধ্যে হাজার হাজার গাজাবাসী ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নেযারিম করিডর থেকে প্রস্থানের পর দক্ষিণ থেকে উত্তর গাজায় চলে গেছে।
হামাস জানিয়েছে, এই পদক্ষেপকে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় চুক্তির পূর্ণ বিপর্যয় করেছে, যা গাজার অবরোধ আরও শক্তিশালী করেছে এবং এখানকার জনগণের জীবন আরও সংকটপূর্ণ করেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চিহ্নিত এলাকা থেকে সরে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে দেখা গেছে পরিবারগুলোকে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ গাড়িতে করে সাধ্যমতো জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বুধবার এক ভিডিও বার্তায় বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে দিতে ফিলিস্তিনকে ‘শেষবারের মতো সতর্ক’ করে দিয়েছেন।
ইসরায়েল বলছে, হামাস এখনও ৫৯ জনকে জিম্মি করে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছে বলে ধারণা করা হয়।
হামাসকে ‘শেষ হুঁশিয়ারি’ দিয়ে কাটজ বলেন, যদি কোনো দাবি মানা না হয়, তবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞই’ হবে বিকল্প।
বুধবার দেইর আল-বালাহ এলাকায় জাতিসংঘ দপ্তর প্রাঙ্গণে এক কর্মী নিহতের তথ্য সংস্থাটি জানানোর পর ইসরায়েলের স্থল সেনাদের তৎপরতা বাড়ানোর খবর এলো।
আরটিভি/এআর