নতুন মোড় নিল ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত। টানা ৯ দিন বিভিন্ন হুমকি-ধমকির পর অবশেষে এ সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘পরম বন্ধু’ ইসরায়েলের ডাকে সাড়া দিয়ে ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় একযোগে ভয়াবহ ক্লাস্টার বোমা হামলা চালিয়েছে দেশটি। হামলায় ব্যবহার হয়েছে ভয়ংকর বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন এই হামলা নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে; তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে। এ অবস্থায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনার টেবিলে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক।
রোববার (২২ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু নিউজ এজেন্সি।
বিবৃতির মাধ্যমে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে, ইরানে মার্কিন এই হামলা উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করেছে।
বিবৃতিতে তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কেবল আলোচনাই পারে পারমাণবিক বিরোধের সমাধান করতে। তাই সকল পক্ষকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান রইলো।
এদিকে মার্কিন হামলার পর আলোচনার টেবিলে ফিরতে ইরানের পক্ষ থেকে কী কী শর্ত থাকবে, জানতে চাওয়া হয় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির কাছে। তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে ওই নিউজ কনফারেন্সে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কূটনীতির টেবিলে ফিরে যাওয়া অপ্রাসাঙ্গিক। আমরা কূটনৈতিক পর্যায়ে মাঝামাঝি অবস্থানে ছিলাম। কিন্তু ইসরায়েল হামলা চালিয়ে সেখান থেকে আমাদের সরিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে পারমাণবিক কর্মসূচিতে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রেও আমরা মাঝামাঝি অবস্থানে ছিলাম। দুই দিন আগেও জেনেভাতে তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু মার্কিন হামলার মাধ্যমে সেই আলোচনাও এখন ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। সুতরাং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নিয়ে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২২ জুন) রাতে ইরানের বড় তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—ফর্দো, নাতানঞ্জ এবং ইস্পাহানে হামলা চালায় মার্কিন বোমারু বিমান। পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইরানে চালানো এ হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ সময় ইরানকে সতর্ক করে ট্রাম্প বলেন, হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য আরও অনেক বড় ট্র্যাজেডি হবে, যা আমরা গত আট দিনে দেখেছি। মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। আজ রাতটি ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক। কিন্তু যদি শান্তি দ্রুত না আসে তবে আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা এবং দক্ষতার সাথে অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে যাবো।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, এ হামলার উদ্দেশ্য ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা শেষ করে দেওয়া; সন্ত্রাসের মদদদাতা বিশ্বের এক নম্বরে থাকা দেশটির পারমাণবিক হুমকি থামিয়ে দেওয়া।
আরটিভি/এসএইচএম