আফগানিস্তানে অস্ত্রের মুখে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর দেশটির রাজধানী কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে এক ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে ১৩ জন মার্কিন সেনাসহ ১৮৮ জন আফগান নিহত হয়েছেন। তালেবানদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দলের পর এটি প্রথম কোনো বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটলো। এই হামলার বর্ণনা দিলেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। তবে গত বৃহস্পতিবার ভয়াবহ বোমা হামলার বর্ণনা দিলেন ওই স্থানে দায়িত্বরত মার্কিন কর্মকর্তারা। তাদের বর্ণনা দিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
সঙ্গে সঙ্গে কাবুল বিমানবন্দরের আবে ফটকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। তখন
তালেবান বাহিনী কাবুল দখলের পর দেশত্যাগ করেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এরপর থেকেই কাবুলে থাকা বিদেশি ও অনেক আফগান নাগরিক দেশত্যাগে কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) পড়ন্ত বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। তখন ঘড়ির কাটা ৫টা বেজে ৪৮ মিনিট। হামলাকারী পোশাকের নিচে ২৫ পাউন্ড ওজনের বিস্ফোরক লুকিয়ে রেখেছিলেন। হামলাকারী হেঁটে যাচ্ছিলেন আবে গেটে থাকা মার্কিন সেনাদের দিকে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তল্লাশির আগে হামলাকারী অপেক্ষা করছিলেন। মার্কিন সেনারা তল্লাশি শুরুর আগমুহূর্তে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ ঘটান হামলাকারী। আত্মঘাতি হামলায় সাধারণত যে ধরনের বোমা ব্যবহৃত হয়, এটি তুলনামূলক বড় বোমা ছিল। বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গেই হামলাকারী মারা যান।
বিমানবন্দরের বাইরে বোমা বিস্ফোরণের পরই তালেবান গুলি ছোড়ে। আবে গেটে গুলিতে আহত হতে পারে কয়েক মার্কিন ও আফগান।
সেনা কর্মকর্তারা আরও বলেন, আত্মঘাতি বোমা হামলাকারীর ২৫ পাউন্ডের বিস্ফোরক বহনের ঘটনা ছিল অবাক করার মতো। আত্মঘাতি হামলাকারীরা সাধারণত ১০ থেকে ২০ পাউন্ড বিস্ফোরক বহন করে। ২৫ পাউন্ডের বোমা বিস্ফোরণের পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিমানবন্দরের গেটে মার্কিন বাহিনী ও আফগানদের মুখোমুখি অবস্থানের কথা উল্লেখ করে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি বলেন, পরিস্থিতি যুদ্ধের মুখে পড়ার মতো। বিমানবন্দরে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার আগে আফগানদের অবশ্যই তল্লাশি করতে হবে। আর তা করতে গিয়ে যেকোনো সময় মার্কিন বাহিনী হামলাকারীর সম্মুখীন হতে পারে।
বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় এ পর্যন্ত ১৮৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় ২টার পর মার্কিন উড়োজাহাজে ১৩ মার্কিন সেনার লাশ নিয়ে যাওয়া।
এফএ