পরকীয়ায় ভারতের ৮ লাখ মানুষ
ভারতে পরকীয়ায় জড়িত অন্তত ৮ লাখ মানুষ। দেশটির বিবাহিত পুরুষ ও নারীদের মধ্যে সম্প্রতি একটি অনলাইন ডেটিং এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সার্ভিস অ্যাপ সমীক্ষা চালিয়েছে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, তালিকায় শীর্ষে বেঙ্গালুরু, মুম্বাই ও কলকাতার মানুষ।
পরকীয়া নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ডেটিং অ্যাপ এর মাধ্যমে পরকীয়ায় শীর্ষে আছেন বেঙ্গালুরুর পুরুষরা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুম্বাই এবং কলকাতার পুরুষেরা, তারপরে আছে দিল্লি।
পরকীয়ায় মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা বেশি। মেয়েদের দিক দিয়ে তালিকায় এগিয়ে আছে বেঙ্গালুরু, তারপর যথাক্রমে মুম্বাই ও চেন্নাই। পাশাপাশি তালিকায় কলকাতা শহরও রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে পরকীয়া আইনসিদ্ধ করে দেওয়ার পর থেকে পরকীয়ার ঘটনা বাড়ছে।
জিএ/পি
মন্তব্য করুন
দিল্লিতে কোথায় আছেন শেখ হাসিনা, জানাল ভারতীয় গণমাধ্যম
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তাকে এক মুহূর্তের জন্যও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময় গুঞ্জন ওঠে তিনি ভারত ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। তবে শেখ হাসিনা যে ভারতেই আছেন সেটি নিশ্চিত করলেও তার অবস্থান সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি মোদি সরকার। অবশেষে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’ শেখ হাসিনার অবস্থান নিশ্চিত করে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুই মাস ধরে নয়াদিল্লির লুটিয়েনস বাংলো জোনের একটি সেইফ হাউসে বসবাস করছেন।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, লুটিয়েন্স বাংলো এলাকাটিতে ভারতের মন্ত্রী, সিনিয়র এমপি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ির মতো একটিতে শেখ হাসিনাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রোটোকলসহ মাঝে মাঝে দিল্লির লোধি গার্ডেনে হাঁটাহাঁটি করেন। তার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
পলাতক হাসিনার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার রক্ষার স্বার্থে দ্য প্রিন্ট বাড়িটির প্রকৃত ঠিকানা বা রাস্তার বিবরণ প্রকাশ করেনি।
এদিকে, জুলাই-আগস্টে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে হাজিরের নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট একটি বিমানে করে ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ। বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পরপরই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও দেশটির উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর দুদিন পর তাকে হিন্দন বিমান ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরটিভি/আরএ/এসএ
ওড়িশায় স্থলভাগে আঘাত হেনেছে ‘দানা’
ভারতের ওড়িশায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যবর্তী স্থান হয়ে স্থলভাগ তছনছ করছে ঘূর্ণিঝড়টি। ইতোমধ্যে ঝড়ের সামনের অংশ পেরিয়ে মধ্যভাগ অতিক্রম শুরু করেছে। এই সময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি রয়েছে ১২০ কিলোমিটার।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শেষে মূল অংশ স্থলভাগ ছুঁয়েছে। ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ঝড়ের দাপট আরও বেড়ে গেছে ওড়িশায়। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলেও ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যে যখন প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন উপকূলে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
এদিকে কলকাতায় এখনও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে বিক্ষিপ্তভাবে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে। যা অন্যান্য সাধারণ বৃষ্টির মতোই অনুভূত হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কলকাতায় ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবের আশঙ্কা কম। দানা আরও এগিয়ে এলে এর প্রভাবে কলকাতায় হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার।
পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১২ মিনিটে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।
এর আগে বলা হয়েছিল, দানার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে বিপুল জলোচ্ছ্বাস দেখা যাবে। ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ৯ ফুট থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। সেই অনুযায়ী উপকূলের বাসিন্দাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। চার জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উপকূলের লাখো মানুষকে।
অপরদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতিভারি (২৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
আরটিভি/একে
বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক স্থগিত
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানিয়েছে, নভেম্বরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশের পরিকল্পনায় পরিবর্তনের কারণে বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে।
বিজিবি ও বিএসএফ প্রধানদের নেতৃত্বে বছরে দু’বার এ ধরনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে ঢাকায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার এ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ১৮ থেকে ২২ নভেম্বরের মধ্যে।
পিটিআই জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনা স্থগিতের কথা জানানো হয়। পরবর্তী সময়ে আলোচনার জন্য দ্রুত তারিখ ঠিক করতে কাজ চলছে বলে ঢাকার পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইকনোমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফ ও বিজিবির মহাপরিচালক পর্যায়ের এই বৈঠক হবে ৫৫তম। এতে প্রতিবেশী দুই দেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদকবিরোধী বিভাগ, কাস্টমস ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত রাষ্ট্রীয় সংস্থার কর্মকর্তারাও অংশ নেন। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে ঢাকায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আরটিভি/এমএ
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে: অমিত শাহ
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
রোববার (২৭ অক্টোবর) পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন ও মৈত্রী দ্বার উদ্বোধনের সময় তিনি একথা বলেন।
অমিত শাহ বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ হলেই কেবল পশ্চিমবঙ্গে শান্তি ও উন্নয়ন সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গের সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর মোদি সরকার। এখানকার উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখবে না বিজেপি।
তিনি আরও বলেন, নেপাল, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অংশীদারত্ব বাড়ানো হবে। অগ্রগতির দিক থেকে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পেট্রাপোল স্থলবন্দরের নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন (পিটিবি) ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণের পরিমাণ বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেনাপোল (বাংলাদেশ)-পেট্রাপোল (ভারত) বাণিজ্য ও যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত ক্রসিং। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থলভিত্তিক বাণিজ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ (মূল্য অনুসারে) এই স্থলবন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়।
পেট্রাপোল স্থলবন্দর ভারতের অষ্টম বৃহত্তম আন্তর্জাতিক অভিবাসন বন্দর এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বার্ষিক ২৩ লাখ ৫ হাজারেরও বেশি যাত্রী পরিবহন করে। সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
আরটিভি/আরএ
কেরালার মন্দিরে আতশবাজি প্রদর্শনীর সময় আগুন, আহত দেড় শতাধিক
ভারতের কেরালায় একটি মন্দিরে আতশবাজি প্রদর্শনীর সময় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে মন্দির চত্বর ও তার আশেপাশের এলাকায় দেড় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজ্যের উত্তর মালাবার অঞ্চলে অঞ্জুটাম্বালাম ভীরেকাভু মন্দিরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভয়াবহ চিত্রগুলোতে দেখা গেছে, আতশবাজি প্রদর্শনের সময় বিশাল আগুন এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী সৃষ্টি হয়। এ সময় মন্দির চত্বরে উপস্থিত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে নিরাপদ স্থানের খোঁজে ছুটতে শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মধ্যরাতের দিকে আতশবাজি প্রদর্শনী চলাকালে একটি আতশবাজি এমন এক জায়গায় পড়ে যেখানে আরও আতশবাজি মজুত ছিল। এতে নিমেষের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়।
তারা বলেন, ‘প্রথমে বিকট শব্দ শোনা যায় এবং তারপর আমরা আগুনের বল দেখতে পাই। তখনই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। প্রচুর ভিড় ছিল। অনেকেই আতশবাজির মজুদঘরের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তারা দ্রুত সরে যেতে পারেনি।’
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল বাহিনী। আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। জেলাশাসক, পুলিশ সুপারও রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মেঙ্গালুরু, কান্নুর এবং কসরগড়ের একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের।
এদিকে এ ঘটনায় মন্দির কমিটির দুই কর্মকর্তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
ভারতের ৪ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করায় ভারতের ৪ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) জো বাইডেন প্রশাসনের ঘোষণার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
ভারতের ওই ৪ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, ইউএস অ্যাসেন্ড এভিয়েশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, মাস্ক ট্রান্স, টিএসএমডি গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেড ও ফুত্রেভো।
ইউএস অ্যাসেন্ড অ্যাভিয়েশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে রাশিয়াভিত্তিক সংস্থাগুলোতে ৭০০টিরও বেশি চালান পাঠিয়েছে। এসব চালানে দুই লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ‘বিশেষ প্রযুক্তি’ আইটেম ছিল। ছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে উৎপাদিত বিমানের উপাদানও।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা আরেকটি ভারতভিত্তিক সংস্থা ‘মাস্ক ট্রান্স’। তারা ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত রাশিয়া-ভিত্তিক এস ৭ ইঞ্জিনিয়ারিং এলএলসিকে ৩০০,০০০ ডলারেরও বেশি মূল্যের বিমানের উপাদানের মতো ‘বিশেষ প্রযুক্তি’ এইটেম সরবরাহের সাথে জড়িত।
যুক্তরাষ্ট্র ‘টিএসএমডি গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের এরেকটি ভারতভিত্তিক সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে। তারা রাশিয়াভিত্তিক সংস্থাগুলোতে কমপক্ষে ৪৩০০০০ ডলার মূল্যের ‘বিশেষ প্রযুক্তি’ আইটেম পাঠিয়েছে।
এ ছাড়া ‘ফুত্রেভো’ নামক ভারতভিত্তিক আরেকটি সংস্থা নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। রাশিয়াভিত্তিক বিশেষ প্রযুক্তি কেন্দ্রের সঙ্গে ১.৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ‘বিশেষ প্রযুক্তি’ আইটেম সরবরাহের সঙ্গে জড়িত এই প্রতিষ্ঠান। তবে এসব কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনে ভারতের দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আওতায় বুধবার (৩০ অক্টোবর) ১২টির বেশি দেশের প্রায় ৪০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কারণে মস্কোর ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপ এড়ানো ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নিলো মার্কিন সরকার। এরমধ্যে রয়েছে চীন, হংকং ও ভারতের ওই চার প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এই দফায় মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ২৭৪, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২০টির বেশি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে সহায়তার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
আরটিভি/এসএপি/এসএ
ভারতীয় ১৯ প্রতিষ্ঠান ও দুই নাগরিকের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
ভারতীয় ১৯ প্রতিষ্ঠান ও দুই নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতা করার অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ অফিস (ওএফএসি) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।
একই অভিযোগে এর আগে বিভিন্ন দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে ভারতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এতদিন তেমন বড় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময় ভারতকে সতর্ক করা হলেও তারা বিষয়টি উপেক্ষা করে গেছে। শেষ পর্যন্ত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত হলো ভারতীয় প্রতিষ্ঠানও।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ একাধিক দেশের রাশিয়ার কাছে বিভিন্ন পণ্য ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য পণ্য বিক্রিতে বাধা দেওয়াই এই পদক্ষেপের লক্ষ্য। দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য এসব পণ্য যুদ্ধ ও শান্তি, উভয়ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়া এসব দেশের প্রতিষ্ঠানের অস্ত্র ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছে।
প্রসঙ্গত, রাশিয়াকে সহযোগিতা করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) নতুন করে ৪০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা রয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাসেন্ড অ্যাভিয়েশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪-এর মার্চ পর্যন্ত রাশিয়ায় ৭০০টি শিপমেন্ট পাঠিয়েছে তারা। এসব শিপমেন্টে ২ লাখ ডলারের সিএইচপিএল পণ্য রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বানানো বিমানের যন্ত্রাংশও রয়েছে।
এদিকে যে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তারা হলেন বিবেক কুমার মিশরা ও সুধীর কুমার। এ দুজনই অ্যাসেন্ড অ্যাভিয়েশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক পদে রয়েছেন।
রাশিয়ায় সিএইচপিএল পণ্য সরবরাহ করেছে আরেকটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মাস্ক ট্রান্স। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার সংস্থাকে তারা তিন লাখ ডলার মূল্যের সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা আরেক প্রতিষ্ঠান টিএসএমডি। রাশিয়ায় ৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য পাঠিয়েছে তারা। এগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে সহায়তা করেছে বলে ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর