ঢাকাসোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

৭ দিনের মধ্যে প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ যাচ্ছে হাইকোর্টে

আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ০১:২৬ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

দেশের চাঞ্চল্যকর ঘটনা কক্সবাজারের টেকনাফে গুলি চালিয়ে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যা। এ-সংক্রান্ত মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই সময়ে টেকনাফ থানার দায়িত্বে থাকা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (বরখাস্ত) ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে (বরখাস্ত) কক্সবাজার কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং আপিল ৭ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলমের সঙ্গে কথা বলে আরটিভি।

বিজ্ঞাপন

গতকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের আদালত তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।

কক্সবাজারের জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলম আরটিভি নিউজকে বলেন, কোনো ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী মামলার রায় হওয়ার সাত দিনের মধ্যে সমস্ত নথি, কেস ডায়েরি, সাক্ষী-প্রমাণাদিসহ কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এ সময় লালসালুতে মুড়িয়ে কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়ে থাকে। নিয়মানুযায়ী প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশের কপিও সেভাবে হাইকোর্টে পাঠানো হবে। পাশাপাশি তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চাইলে সেই আবেদনও পাঠানো হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলেন, যে কারও ফাঁসির আদেশ হাইকোর্টকে অবহিত করতে হয়। হাইকোর্টকে অবহিত না করা পর্যন্ত আদেশ কার্যকর করা যাবে না। এ ছাড়া আসামিপক্ষ চাইলে আপিল করতে পারে। মামলার রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার এখতিয়ার সবার রয়েছে।

জেল সুপার মো. নেছার আলম আরও বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড-সংক্রান্ত কাগজপত্র পাঠিয়ে এরপরই বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বরখাস্ত ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।

গতকাল সোমবার বিকালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল আলোচিত সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

রায়ে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও সাবেক পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৭ জন মামলা থেকে খালাস পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলো- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত ও বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

বেকসুর খালাস পাওয়া ৭ জন হলো- এপিবিএনের বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, বরখাস্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।

প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। তাদের জেল কোড অনুযায়ী সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়ার শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করেছিল।

সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সিনহা ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য সেসময় প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। ওই কাজে তার সঙ্গে ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।

তবে কক্সবাজারের পুলিশ সে-সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। 

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তদন্ত শেষে র‌্যাব ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

কেএফ/টিআই

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |