• ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
logo

কোন ভেষজ চায়ের কী গুণ? জেনে নিন তৈরির নিয়ম 

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ১৬ আগস্ট ২০২০, ১২:৪২
Herbal tea
ভেষজ চা: ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের এই সময় সুস্থ থাকতে অনেকেই ভেষজ নানা খাবারের প্রতি ঝুঁকে গেছেন। নানা রকমের ভেষজ চাও খাচ্ছেন কেউ কেউ। তবে ঘরোয়া টাটকা উপাদান দিয়ে নিজে চা বানিয়ে নিলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। চা তো অনেক রকমের আছে। কোন চা কখন খাবেন? কীভাবে পান করা উচিত ভেষজ চা? জেনে নিন।

তুলসি চা

একবাটি পানিতে একমুঠো তুলসি পাতা ফুটতে দিন। টগবগ করে ফুটলে আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ফোটান। এরপর এতে মেশান এক চামচ মধু আর দু-চামচ লেবুর রস। মধু দেবে এনার্জি, লেবুর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগবে। আর তুলসির প্রভাবে জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ কম থাকবে। নিয়মিত খেলে প্রদাহের প্রবণতা কমবে, বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

দ্বিতীয় নিয়ম হলো, এক লিটার পানিতে দু-চামচ আদা কুচি, চার চামচ ধনে ও একমুঠো তুলসি পাতা দিয়ে কম আঁচে ভালো করে ফোটান, যতক্ষণ না পানি অর্ধেক হয়ে যায়। এবার ছেঁকে নিয়ে মধু ও লেবু মিশিয়ে খান।


দারুচিনি চা

দারুচিনি, গোলমরিচ, লেবুর রস ও মধু দিয়ে বানাতে পারেন ভেষজ চা। এক চামচ দারুচিনির গুড়া, সিকি চামচ গোলমরিচ গুড়া, এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধুর মধ্যে এক কাপ ফুটন্ত পানি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে ছেঁকে নিন। দারুচিনির কুমারিন, গোলমরিচের পিপারিন প্রদাহের প্রবণতা কমাবে, বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। লেবুর ভিটামিন সি-এর কাজও তাই। সঙ্গে যুক্ত হবে মধুর এনার্জি। বেশ খানিকক্ষণ চাঙ্গা থাকার অব্যর্থ পানীয়। তবে কুমারিন বেশি খাওয়া ঠিক না। লিভারের ক্ষতি হতে পারে। আবার সুগার কমাতে পারে বলে যার ডায়াবেটিসের ওষুধ চলছে, তিনি বুঝেশুনে খাবেন।

হলুদ চা

আধ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা ও সিকি চামচ গোলমরিচের গুঁড়োতে ফুটন্ত পানি মেশান। এতে মেশান একটা গোটা লেবুর রস আর দেড় চামচ মধু। সকাল-বিকেল খেলে ইমিউনিটি নিয়ে আর ভাবতে হবে না।

পুদিনা চা

ফুটন্ত পানিতে মেশান রোজমেরি। তাতে দিন ১০-১২টা পুদিনা পাতা। দেওয়ার আগে একটু কুচি কুচি নেবেন যাতে গন্ধটা পুরোপুরি বেরোয়। ১৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখুন। তৈরি পুদিনা চা।

অশ্বগন্ধা চা

প্রতিদিন সকালে বা বিকেলে এক কাপ অশ্বগন্ধার চা খেতে পারেন। এক কাপ ফুটন্ত পানিতে এক চা-চামচ অশ্বগন্ধা মূলের গুড়া দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। ছেঁকে লেবুর রস ও মধু দিয়ে খান। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি প্রদাহের প্রবণতা কমবে। অশ্বগন্ধার জীবাণুনাশক গুণও আছে। কমবে মানসিক চাপ-অবসাদ ও বয়সজনিত ক্ষয়-ক্ষতির হার। ইন্ডিয়ান জার্নাল অব সাইকলোজিকাল মেডিসিনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই চা খেলে খুব সহজে সতেজ ও ফুরফুরে হওয়া যায়।

দুধ চা-এর ভক্ত হলে পানির বদলে ফুটন্ত দুধে অশ্বগন্ধার গুঁড়া মিশিয়েও চা বানাতে পারেন। তাতে এলাচ বা আদা মেশালেও কোনও বাধা নেই। তবে চিনির বদলে মধু মেশালে উপকার মিলবে বেশি।

আদা চা

এক চা-চামচ আদা কুচি, দুটো লবঙ্গ, এক ইঞ্চি দারুচিনি থেঁতো করে দু-কাপ পানি দিয়ে ফোটান। তাতে দিন ৩ ইঞ্চি কমলালেবুর খোসা। কম আঁচে ফোটান ১৫ মিনিট। দেড় চামচ মধু মিশিয়ে খান। জ্বর-সর্দি-গলা ব্যথা, সবের আরাম হবে।


চায়ের সঙ্গে অন্য খাবার

সাধারণ চায়ে ক্যাফেইন, ট্যানিন ইত্যাদি থাকে বলে খালি পেটে খেলে কারও কারও অম্বলের সমস্যা বাড়ে। ভেষজ চায়ে সে ভয় নেই। কাজেই চায়ের সঙ্গে অন্য খাবার না খেলে কোনও ক্ষতি নেই। বিস্কিট জাতীয় কিছুও খুব একটা না খাওয়াই ভালো। স্বাস্থ্যকর কিছু খান। কল বেরনো ছোলা বা মুগ খেতে পারেন। প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলের দৌলতে পুষ্টির পাশাপাশি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। লেবুর রস মিশিয়ে নিলে স্বাদ বাড়বে, বাড়বে পুষ্টিও। সব রকম বাদাম খেতে পারেন। চিনা বাদাম খেলেও উপকার হবে। পেট ভরা থাকবে অনেকক্ষণ। তবে সেটিও পরিমাপমতো।

কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে এই চা না খাওয়াই ভালো। যেমন-

  • গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খাবেন না। কারণ তুলসিতে আছে এস্ট্রাজল যা জরায়ুর সংকোচন বাড়াতে পারে।
  • ডায়াবেটিসের ওষুধ খেলে বা ইনসুলিন নিলে নিয়মিত খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। কারণ তুলসি রক্তে সুগারের মাত্রা কমায় বলে জানা গেছে।
  • রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ খেলেও সাবধান। কারণ তুলসিও রক্ত পাতলা রাখে।
  • বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, যাদের নিয়মিত অ্যাসিটামিনোফেন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খেতে হয়, তারা তুলসি খাওয়ার আগে দু-বার ভাববেন। কারণ দুইয়ের মিলিত প্রভাবে লিভারের কিছু ক্ষতি হতে পারে।

সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা।
জিএ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ৪ গুণিজন
গুণাহ মাফের ফরিয়াদ জানিয়ে শেষ হলো খুলনা জেলা ইজতেমা
জমিতে একসঙ্গে তিন ফসল, কৃষকের আয় হচ্ছে দ্বিগুণ
স্কুলে ভর্তি: সরকারিতে দ্বিগুণ, বেসরকারিতে ৮০ ভাগ আসন ফাঁকা