নাক ডাকার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা করবেন
আমাদের আশপাশে নাক ডাকার ঘটনা অহরহ দেখা যায়। বিষয়টি অনেকেই সাধারণভাবে নেন না। অনেক সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও নাট ডাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। আসলে নাক ডাকাটা সাধারণ কোনও ব্যাপার না। নাক ডাকা কোনও কোনও ক্ষেত্রে জটিল রোগের ইঙ্গিত।
ভারতীয় নাক-কান-গলা চিকিৎসক দেবর্ষি রায় বলেন, নাক-ডাকা নাক থেকে আসে বললে ভুল হবে। শব্দটা তৈরি হয় গলা আর নাকের মাঝখানের অংশ থেকে। সেখানে বাতাসের গতিবিধি কোনোভাবে বাধা পেলে শব্দের সৃষ্টি হয়। চিকিৎসাবিদ্যার পরিভাষায় এর নাম ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’। যদিও সব নাক-ডাকাই ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ নয়। ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ থাকলে নাক ডাকার সমস্যা থাকবেই।
নাক ডাকার কারণ-
নাকের ভিতরে শ্বাস চলাচলে বাধা পেলে, গলার পেছন দিকে আল-জিভ বা সফট প্যালেটের দিকে টিস্যু ঢিলা হয়ে গেলে ভাইব্রেশনের জন্য, জিভের নীচের অংশ (টাং বেস) থেকেও শব্দ হতে পারে, বয়সের সঙ্গেও নাক ডাকার সম্পর্ক রয়েছে।
এছাড়া সাইনুসাইটিস বা পলিপের (নাকের ভিতরে মিউকাস পর্দায়) সমস্যা, নাসিকাগহ্বরের মধ্যে নাকের ভিতরের অংশ ফুলে ওঠা থেকে, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা থাকলেও নাক ডাকে।
চিকিৎসক সুচির মৈত্র বলেন, ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’ প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে, ঘুমের মধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’-র সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে অতিরিক্ত ওজনের। তবে নাক ডাকা কিন্তু একটা সাধারণ সমস্যা। সে ক্ষেত্রে হাওয়া যাওয়ার পথ সরু হলে ভাইব্রেশন বেশি হয় বলে বেশি শব্দ হয়। স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে তাই শরীরের অক্সিজেন চলাচলে বেশি বাধা পড়লে সেটির ফলে হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। রক্তচাপের পরিমাণ বাড়ে, স্ট্রোক হতে পারে।
নাক ডাকার সমস্যা যেভাবে কমাবেন-
অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে, নাকের ভিতরে কোনও বাধা রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্যালেটাল সার্জারি বা অস্ত্রোপচার করা হয় কোনও ক্ষেত্রে। ডেভিয়েটেড সেপ্টামের (নাকের হাড় বাঁকা) জন্যও অনেক সময় শব্দ হতে পারে। ঘুমানোর আগে ভারী খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। খাবার খেয়েই শুতে যাবেন না। প্রতি দিন রাতে একই সময়ে ঘুমনোর অভ্যাস করুন।
এছাড়া এক দিকে পাশ ফিরে শুলে নাক ডাকার সমস্যা অনেকটা হ্রাস পায়। তাই চিত হয়ে শোয়ার অভ্যাস থাকলে তা বদলে ফেলুন।
সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা
আরও পড়ুন: দুপুরে ‘ভাত-ঘুম’ বাড়ায় কর্মদক্ষতা, স্মৃতিশক্তি!
জিএ
মন্তব্য করুন