যে খাবারের স্বাদ নিতে লাগবে কোটি টাকা
লোক মুখে শোনা যায়, শখের দাম লাখ টাকা। শখ পূরণ করতে মানুষ কত কিছুই না করে। আর শখের মধ্যে অন্যতম হলো ভিন্ন রকম খাবারের স্বাদ নেওয়া। অনেকে স্বাদ নিতে পকেট থেকে খরচ করে লাখ-কোটি টাকা!
বিশ্বে এমন তিনটি খাবার আছে যার স্বাদ নিতে খরচ করতে হয় কোটি টাকা।
অ্যালবিনো ক্যাভিয়ার : এটি আসলে এক ধরনের সামুদ্রিক মাছের ডিম। এই ডিমকে লবণ পানি এবং চাটনিতে রসিয়ে নেওয়া হয়। বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবারের একটি বলে গণ্য করা হয় এটিকে। এই ক্যাভিয়ার সংগ্রহ করে প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করার কাজটি খুবই দুরূহ। তবে তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে ক্যাভিয়ার খুবই বিরল। সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাভিয়ার আসে বেলুজা স্টার্জেন মাছ থেকে। কেবলমাত্র কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরে এই মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু এই মাছ এখন বিপন্ন প্রায়। খুব কম মাছের ডিমই এখন বৈধভাবে কেনাবেচা হয়। একটি বেলুজা ক্যাভিয়ার পূর্ণবয়স্ক হতে সময় লাগে প্রায় ২০ বছর। এরপরই কেবল এই মাছ ডিম পাড়ে। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের হিসেবে এক কিলোগ্রাম অ্যালবিনো ক্যাভিয়ারের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ৩৪ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্যাভিয়ার হলো আলমাস, যা বিপন্ন ইরানি অ্যালবিনো বেলুগা স্টার্জেন থেকে সংগ্রহ করা হয়। সুতরাং, হোয়াইট পার্ল অ্যালবিনো ক্যাভিয়ার পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বৈচিত্র্য। বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবারের একটি বলেও ক্যাভিয়ারকে গণ্য করা হয়।
আয়াম সিমানি : ইন্দোনেশিয়ার আয়াম সিমানি নামের বিরল এক জাতের কালো মুরগি দেখতে পাওয়া যায়। পায়ের নখ থেকে মাথার ঝুঁটি পর্যন্ত নিখাদ কালো। এমনই কালো যে, তাতে নীলচে একটি আভা দেখা যায়। তার চেয়েও বিস্ময়কর হচ্ছে, মুরগি-মোরগের ভেতরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও কালো। শুধুমাত্র এর রক্ত লাল। এ ধরনের মুরগি অত্যন্ত বিরল। ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগিটি মোটামুটি সস্তা ও পরিচিত হলেও, অন্যান্য দেশে এগুলো হাজার হাজার ডলারে বিক্রি হয়। এটি স্পোর্টস চিকেন নামেও বিখ্যাত।
কালো তরমুজ : বিশ্বে এমন একটি তরমুজ রয়েছে যা চিরকালই ব্যয়বহুল। শুধু ব্যয়বহুল বললে হয়তো দামের ধারণাও করতে পারবেন না। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফল মনে করা হয় ইউবারি মেলনকে (কালো তরমুজ)। এটি জাপানে উৎপন্ন হয়। শুধুমাত্র জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে পাওয়া যায় এই তরমুজ। এটা এতই বিরল যে এক বছরে মাত্র ১০০টি জন্মায়, ফলে জোগানও কম বাজারে। বিশ্বে প্রায় এক হাজার ২০০ প্রজাতির তরমুজ রয়েছে। ডেনসুক প্রজাতির এ তরমুজ বিক্রি হয় নিলামে। এ ছাড়া এ তরমুজ ব্যয়বহুল হওয়ায় খোলা জায়গায় বিক্রি হয় না, প্রতি বছর এগুলো বিক্রির জন্য নিলাম করা হয়। ঐতিহ্যগতভাবে, কালো তরমুজ জাপানিদের বিয়ের একটি মূল্যবান উপহার বলে মনে করা হয়।
মন্তব্য করুন