ঢাকাসোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

যে কারণে এড়িয়ে যাবেন মসলাদার ভাজা খাবার

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪ , ০২:১২ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

নিয়মিত মসলাদার ভাজা খাবার খেলে দেহে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কার্বোহাইড্রেইটস, চর্বি ও প্রোটিনের মধ্যে চর্বি অনেক ধীরে হজম হয়। পেটব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া হতে পারে। 

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেল্থ’য়ের তথ্যানুসারে, মসলাদার ও ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে। ফলে পেট খালি হতে দেরি হয়। খাবার বেশিক্ষণ পাকস্থলীতে থাকে বলে গ্যাস ‍সৃষ্টি হয়ে পেট ফোলা ও ব্যথা সৃষ্টি করে। যাদের বিভিন্ন রকম পেটের সমস্যা আছে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ে।

ওজন বাড়াতে পারে-

বিজ্ঞাপন

ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচ’য়ের তথ্যানুসারে, মসলাদার ভাজা খাবারে যেহেতু প্রচুর ফ্যাট বা চর্বি থাকে সেজন্য ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি স্থূলতার সমস্যা তৈরি করে এসব খাবার। যেমন- ১০০ গ্রামের একটি বেইকড করা আলু থেকে মিলবে ৯৩ ক্যালিরি ও ০.১ গ্রাম চর্বি। তবে একই পরিমাণ আলুভাজা বা ফ্রেঞ্চফ্রাই খেলে দেহে যাবে ৩১২ ক্যালরি ও ১৩ গ্রাম চর্বি। বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ মূলক গবেষণায় দেখা গেছে- ভাজাপোড়া খাবার ও ফাস্ট ফুড ওজন বাড়ায়।

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে-

যে কোনো ভাজা খাবার রক্তচাপ বাড়ায়, ভালো কোলেস্টেরল ‘এইডিএল’য়ের মাত্রা কমায় আর স্থূলতার সমস্যা তৈরি করে।

বিজ্ঞাপন

বস্টনের হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, কত ঘন ঘন ভাজা খাবার খাওয়া হচ্ছে সেটার ওপর ভিত্তি করে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে কানাডা’র ‘ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি’র ‘পপুলেইশন হেল্থ রিসার্চ ইন্সটিটিউট’য়ের ২২টি দেশের ওপর করা পর্যবেক্ষণে জানানো হয়, ভাজা খাবার, পিৎজা ও লবণাক্ত নাস্তা খাওয়ার জন্য তাদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে ১৬ শতাংশ।

ডায়াবেটিস হতে পারে-

ভাজা খাবার এবং মিষ্টি পানীয় পান- দেহের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ে যে কারণে বৃদ্ধি পায় ওজন, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমে, বাড়ে প্রদাহের মাত্রা। ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়- ইরানের শহীদ বেহেস্তি ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্থ’য়ের করা গবেষণায় এরকমই ফলাফল পাওয়া গেছে।

ব্রণের সমস্যা বাড়ায়-

জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অফ অসনাব্রুক’য়ের ত্বকবিজ্ঞান বিভাগের করা গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে- পরিশোধিত কার্ব, ফাস্ট ফুড ও মসলাদার খাবার ব্রণ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

আবার চীনের ‘হসপিটাল অফ চায়না মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র ত্বক-বিজ্ঞান বিভাগ ৫ হাজার চীনা তরুণদের ওপর পর্যবেক্ষণ করে জানায়- ভাজা খাবারের জন্য ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে তুরষ্কের ‘এস্কিসেহির ওসমানগাজি ইউনিভার্সিটি’র ত্বকবিজ্ঞান বিভাগ ২ হাজার ৩শ’ তরুণের ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে জানায় মসলাদার খাবার খাওয়ার জন্য তাদের মধ্যে ব্রণের সমস্যা বৃদ্ধি ঘটেছে ২৪ শতাংশ।

এ ছাড়া মিষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় সমস্যা তৈরি করতে পারে-

মসলাদার খাবার বেশি খাওয়া হলে দেখা দেয়- উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা। যা থেকে মস্তিষ্কের গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বার্মিংহামের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালাবামা’ ২ হাজার ৮৩ এবং যুক্তরাজ্যের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’ ১৮ হাজার ৮০ জনের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখতে পায়- মসলাদার খাবার খাওয়ার কারণে তাদের মস্তিষ্কের গঠন, কোষের ও কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মসলাদার খাবার এড়ানোর উপায়-

নানান পন্থায় মসলাদার ভাজাপোড়া ও মিষ্টিযুক্ত খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায়।

সেদ্ধ: সবজি, মাছ ও ডাম্পলিং তৈরির ক্ষেত্রে গরম পানিতে সেদ্ধ করা যায়। যা আসলেই স্বাস্থ্যকর।

এয়ার ফ্রাই: খাবারে চারদিকে গরম বাতাসের ঘুর্ণি তৈরি করে এয়ার ফ্রায়ার যন্ত্র রান্না করে। ফলে ভাজা খাবার তৈরিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ তেল কম প্রয়োজন হয়।

গ্রিল্ড: যে কোনো খাবার আগুনে পুড়িয়ে খেতে বেশি তেলের প্রয়োজন হয় না। মাংস ও সবজির ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়।

ওভেন ফ্রাই: ২৩২ ডিগ্রি সে. তাপে খাবার রান্না করলে অল্প বা কোনো তেল ছাড়াই খাবার মচমচে করে তৈরি করা যায়। ফ্রেঞ্জ ফ্রাইয়ের পরিবর্তে বা বড়া না তৈরি করে আলু এভাবে খাওয়া যেতে পারে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |