প্রচুর ফল খেলে শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে জানেন
ফল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এতে উপস্থিত ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু কোনও খাদ্যদ্রব্য খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়, তা ফল হলেও। অতিরিক্ত ফল খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদিও ফল স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে ধরা হয়। তবে ফল মানে প্রাকৃতিক চিনির উৎস। তাই ‘ন্যাচারাল ক্যান্ডি’ হিসেবে পরিচিত এই খাবার অতিরিক্ত খেলে স্বাস্থ্যের ওপর বাজে প্রভাব পড়তেও পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকা দরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুক্টোজ থাকে, যা স্থূলতা, দাঁত এবং হজমের সমস্যা হতে পারে। ওজন কমাতে বা সুস্থ থাকতে চাইলে শুধুমাত্র ফল না খেয়ে সম্পূর্ণ সুষম পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা:
বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, অনেকেই দ্রুত ওজন কমাতে যতটা সম্ভব ফল খান। এটা ঠিক না। উল্টে, মনে করা হয় যে, অতিরিক্ত ফল খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। ফলের মধ্যে ফ্রুক্টোজ থাকে, যা স্থূলতা বাড়ায়।
বেশি ফল খেলে কী হয়:
খুব বেশি ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। খুব বেশি ফল খেলে পেট ফুলে যাওয়া, ডায়েরিয়া এবং হজমের সমস্যার মতো সমস্যা হতে পারে। ফলের মধ্যে রয়েছে ফাইবার এবং প্রাকৃতিক শর্করা যা, স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। শুধু তাই নয়, ফলের মধ্যে পাওয়া প্রাকৃতিক অ্যাসিড এবং চিনি দাঁতের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এ কারণে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। ফলের মধ্যে পাওয়া প্রাকৃতিক শর্করার অতিরিক্ত পরিমাণ শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের জন্যও বেশি ফল খাওয়া ক্ষতিকর।
নির্দিষ্ট কিছু রোগীর ক্ষেত্রে যে রকম প্রভাব ফেলে:
‘প্রিডায়াবেটিস’ ও ‘ডায়াবেটিস’য়ে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেইট গ্রহণের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। আর ফলে প্রচুর পরিমাণে কার্ব থাকে।
‘টু-ডে ডায়াবেটিস ডায়েট’ বইয়ের মার্কিন লেখক ও পুষ্টিবিদ এরিন পালিনস্কি-ওয়েড এই বিষয়ে বলেন, যাদের এই সমস্যা রয়েছে তাদের প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও সাবধান থাকতে হবে। বেশিরভাগ ফলই কার্বোহাইড্রেইটে পরিপূর্ণ তাই সামঞ্জস্যতা রক্ষাই হল প্রধান চাবিকাঠি।
পরিমাণের পাশাপাশি কোন কোন ফল ও খাবার একসঙ্গে খাওয়া উচিত সেটা জানতে হবে।
পালিনস্কি-ওয়েড পরামর্শ দেন, যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা দিনে একবেলার খাবার হিসেবে বা নাস্তায় ফল খেতে পারেন। তবে অবশ্যই সঙ্গে থাকতে হবে প্রোটিন, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি বা তেল।
আবার যাদের ‘গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনল’ বা পেট ও অন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন তারা সকালে, দুপুরে বা রাতের খাবারের সময় ফল খেলেও জটিলতায় পড়তে পারেন। হতে পারে সেটা গ্যাসের সমস্যা বা ফোলাভাব।
পালিনস্কি-ওয়েড বলেন, আইবিএস’ সমস্যা একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হয়। তাই ফল খেয়ে জটিলতা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কোন ফলগুলো বাজে প্রভাব রাখবে না, সেগুলো বাছাই করতে হবে।
দিনে কতটা ফল খাওয়া উচিত:
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন ব্যক্তির দিনে মাত্র ৪-৫টি ফল খাওয়া উচিত। ফল, সবজি, আস্ত শস্য, মটরশুটি, উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের পাশাপাশি আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন