গলার স্বর বসে গেলে করণীয়
শীতের সময় গলার স্বর বসা বা ভেঙে যাওয়া স্বাভাবিক। সঙ্গীত বা ব্যান্ডশিল্পী এবং যাদের সবসময় কথা বলতে হয় যেমন- রাজনীতিবিদ, ক্যানভাসার তাদের এ সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। পরিবেশের দূষণ ও ধোঁয়া, নাক বন্ধ থাকা, মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়া, পেটের এসিড গলার ভেতর চলে আসা, ধূমপানকারী, গলা খাকারি দিয়ে গলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেও এ সমস্যা হয়ে থাকে।
ভোকাল কর্ডে রক্ত জমাট বেঁধে নডিউল, গলার পাতলা আবরণ বা মিউকোস ফুলে গিয়ে পলিপ, স্বরযন্ত্রে পানি জমে ইডিমা এমনকি স্বরযন্ত্রে টিবি বা সিফিলিস হলেও গলার স্বর বসে যেতে পারে। ঠাণ্ডা লাগা ও ইনফেকশন থেকেও এ সমস্যা হয়। গলার ক্যান্সার থেকেও এ সমস্যা হয়।
অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটি দেখা যায়। তবে ঠাণ্ডা ছাড়াও শ্বাসনালীতে ইনফেকশন বা সংক্রমণের কারণে স্বর বসে যেতে পারে। এই অবস্থায় গলার স্বরের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে প্রথমেই কথা বলা কমিয়ে দিতে হবে। সম্ভব হলে কথা বলা বন্ধ করে দিন। দেখবেন স্বস্তি পাচ্ছেন এবং এতে কয়েকদিনের মধ্যে আপনার স্বর স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
ঠাণ্ডার কারণে গলা বসে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। গলার সাধারণ ব্যথা বা গলা বসার জন্য ভালো একটি ওষুধ হলো গরম বাষ্প। ফুটন্ত পানির বাষ্প মুখ ও গলা দিয়ে টানলে গলার উপকার হয়। দৈনিক অন্তত দশ মিনিট এভাবে গরম ভাপ নিতে হবে। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
এছাড়া গরম পানি দিয়ে গড়গড় করলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে এমন সব চিকিৎসাও অনেক সময় কাজে দেয় না। দিনের পর দিন গলার স্বর বসে থাকে। গলা দিয়ে কথা বের হতে চায় না, স্বর বদলে যায়। ফ্যাসফ্যাসে আওয়াজ হয়। এ ধরণের পরিস্থিতিকে সব সময় বিপদের লক্ষণ হিসেবে ধরতে হবে।
গলা একবার বসে যাওয়ার পর চার সপ্তাহ বড় জোর ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেরি করা যায়। চিকিৎসকরা মনে করেন, কারো গলা ভাঙ্গা যদি ছয় সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তবে তাকে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ধরনের স্বর বসে যাওয়া অনেক সময়ই মারাত্মক রোগের লক্ষণ হয়ে আসে।
তবে প্রাথমিকভাবে ঘরেই নিতে পারেন কিছু চিকিৎসা- যেমন লবঙ্গ মুখে রাখতে পারেন। তবে দীর্ঘক্ষণ লবঙ্গ মুখে রাখলে সেটি জিহ্বার চামড়া পুড়িয়ে দিতে পারে। গরম পানিতে লবঙ্গ দিয়ে সেই পানি মুখে দিয়ে গড়গড়া করতে পারেন।
আদা, মধু, তুলশি পাতার রস দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে চায়ের সঙ্গে খেতে পারেন। এতে এক টুকরো আদা (দুই ইঞ্চি), এক মুঠো তুলশি পাতা ও এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে এটি তৈরি করে সারাদিন চা বা গরম পানি দিয়ে খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।
এস
মন্তব্য করুন