লকাডাউনের সময়টা অন্য কাজের সঙ্গে আলমারিটা গুছিয়ে রাখুন
আলমারি গোছানো কিন্তু ভারী কঠিন কাজ! যতই মাথা খাটিয়ে বের করুন, শাড়িগুলো এভাবে রাখবেন, ব্লাউজ রাখবেন খাপে পুরে, জিনস আর টপ আলাদা-আলাদা করে গুছিয়ে রাখবেন, গোছানোর কিছুদিন পরেই দেখবেন সব আবার যে-কে সেই হয়ে গিয়েছে! মহিলাদের আলমারিতে স্বাভাবিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি জিনিস থাকে।
এদিকে এমনও অনেকে আছে যারা জামাকাপড় কেনার ব্যাপারে যতটা আগ্রহী, তার ছিটেফোঁটাও থাকে না আলমারি গোছানোর সময়? ফলে কাজের সময় কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না, তাই বেশি বেশি করে পোশাক কিনতে হয়? আলমারি অগোছালো রাখলে বেশি জামা থাকুক বা কম, কাজের সময় কিছুই আর পাওয়া যায় না।
লকডাউনের সময়টা যখন হাতে খানিকটা বাড়তি সময় আছেই, তখন আলমারিটা গুছিয়ে ফেলুন ঝটপট। দেখে নিন আলমারি গোছানোর কিছু নিয়ম যেন কাজটি সহজ হয়ে যায়।
আলমারি গোছানোর আগের কাজ
আলমারি খালি হলে একটা শুকনো কাপড় নিয়ে প্রতিটা তাক ভাল করে মুছে ফেলুন। অনেক সময় আলমারির দরজায় কোণে ধুলো-ঝুল জমে। সেগুলোও ভাল করে পরিষ্কার করুন। কারণ, এখান থেকেই পরে পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ে।
প্রথমেই নিশ্চিত করুন আলমারিতে যা কিছু আছে
অনেক সময়ে হয় কী, জামাকাপড় এক আধবার পরে আমরা আলমারিতে তুলে রাখি। অভ্যাসটা নিঃসন্দেহে খারাপ। ঘাম আর ময়লা অন্য পোশাকের স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিটি পোশাক যেন ধোয়া ও ইস্ত্রি করা আছে কি না, তা দেখবেন। কাছাকাছি রঙের পোশাক একসঙ্গে ভিজিয়ে ধুয়ে। ডিটারজেন্টের মানের ব্যাপারে কোনও সমঝোতা করবেন না। তাতে কাপড়ের স্বাস্থ্যহানি হবে।
আগে আলমারি পুরো খালি করে সব জামাকাপড় খাটের উপর ডাঁই করে রাখুন। কী-কী পোশাক আলমারিতে রাখবেন আর কোনগুলি রাখবেন না, আগে থেকে তার একটা লিস্ট তৈরি করুন। যেমন ধরুন, বাড়িতে রোজকার পরার বেশিরভাগ পোশাকই আমরা হয় আলনায়, নয় অন্য কোনও ওয়ার্ডরোবে রাখি। আর ভাল পোশাক রাখি আলমারিতে। আপনিও যদি তেমনটা করেন, তা হলে এই লিস্টের প্রয়োজন আছে।
সব ধরনের পোশাক আলাদা, আলাদা করে স্ট্যাক করুন
এবার দেখুন, কোন পোশাক সবচেয়ে বেশি জায়গা জুড়বে। এখানে একটা মজা আছে। শাড়ি সংখ্যায় কম হলেও, জায়গা নেয় বেশি আর টপস ও কুর্তি সংখ্যায় বেশি হলেও জায়গা নেয় কম! সুতরাং, সংখ্যা দেখে ভুলবেন না, জায়গা কোনটা বেশি নিচ্ছে সেটা দেখুন। শাড়ি ঝুলিয়ে রাখতে চাইলে যথেষ্ট সংখ্যক হ্যাঙ্গার আছে কিনা দেখে নিন। হ্যাঙ্গার কিনবেন প্লাস্টিকের, কাঠের হ্যাঙ্গার কিন্তু বেশি জায়গা জোড়ে! পুরনো, বেশিদিন ধরে ব্যবহার করা পোশাক আর নতুন পোশাক আলাদা করে রাখুন।
টি-শার্ট, টপ, জিনস রাখুন ভাঁজ করে
যত টি-শার্ট, টপ বা ব্লাউজ আছে আপনার, সব ভাঁজ করুন সুন্দর করে, ভাঁজের উপর দিয়ে ইস্ত্রি চালিয়ে নিলে ভালো করবেন। জিনস ঝুলিয়ে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়, কিন্তু তাতে জায়গা লাগে বেশি। তাই ভাঁজ করে রাখলেও চলবে।
নিটেড টপ আর সোয়েটার কখনও ঝুলিয়ে রাখবেন না
নিটেড টপ আর সোয়েটারও ঝুলিয়ে না রেখে ভাঁজ করেই রাখা উচিত। তা না হলে সেগুলোর আকার খারাপ হয় যেতে পারে। ন্যাপথালিন বল ছোট-ছোট মলমলের কাপড়ে পুঁটুলি বাঁধুন। এবার তাকের বিভিন্ন জায়গায় সেগুলো গুঁজে দিন। যে পোশাকগুলো আপনি সাধারণতই কলেজে-অফিসে যাওয়ার সময় পরেন, সেগুলো হাতের কাছের তাকে রাখুন। আর যেগুলো কালেভদ্রে পরেন, সেগুলো রাখুন নীচের কিংবা উপরের তাকে।
আলমারির দরজায় মাল্টি ইউটিলিটি হ্যাঙ্গার ঝুলিয়ে রাখতে পারেন ওড়না কিংবা স্কার্ফ ঝুলিয়ে রাখার জন্য। আলমারির হ্যাঙ্গার ঝোলানোর তাকটিতে যেখানে শাড়ি ঝোলাবেন, তার তলায় বেশ কিছুটা জায়গা খালি থেকে যায়। এখানে ব্লাউজের খাপে ব্লাউজ পুরে রাখুন। এই ধরনের খাপেই রাখতে পারেন অন্তর্বাস।
আলমারির ড্রয়ার ব্যবহার করুন কস্টিউম জুয়েলারি রাখার কাজে। নীচের তাকে, যেখানে ভাল শাড়ি বা অন্য পোশাক রাখবেন, তারই একপাশে সাজিয়ে রাখুন আপনার ব্যাগের সম্ভার। আলমারির লকারে সাধারণত দামি গয়না রাখি আমরা। আপনার জরুরি কাগজপত্রও সেখানে রাখতে পারেন।
ময়েশ্চারের সমস্যা দূর করতে আলমারির তাকে ছোট-ছোট সিলিকা জেলের প্যাকেট রাখতে পারেন। ড্রয়ারে আরও বেশি কিছু রাখতে চাইলে ব্যবহার করুন ড্রয়ার অর্গানাইজার। এই ধরনের অর্গানাইজার আপনার তাকেও বাড়তি জায়গা তৈরি করে দিতে পারে।
এস
মন্তব্য করুন