শরীরকে বিষমুক্ত করে ডাবের পানি
ডাবের পানি শুধুমাত্র পানীয় হিসেবেই নয়, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লবণ ও নানারকম রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। যা অনেক জটিল রোগ নিরাময়ে বিশেষভাবে কাজ করে। ডাবের পানিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, মেঙ্গানিজ এবং জিঙ্ক নানাভাবে শরীরিক গঠনে সহযোগিতা করে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে ডাবের পানি খেলে একাধিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে চলুন জেনে নিই ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে।
হাড় মজবুত করে
গবেষণায় দেখা গেছে ডাবের পানিতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, হাড়কে শক্ত-পোক্ত করে তোলার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ডাবে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়ামও এক্ষেত্রে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। একারণে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হতে না চাইলে নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে ডাবের পানি খাওয়া উচিত।
শরীরকে বিষমুক্ত করে
শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে ডাবের পানির বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস ডাবের পানি খেলে নানাবিধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে
২০১২ সালের ফুড অ্যান্ড ফাংশন স্টাডিসে দেখা গেছে, ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ কারণে চিকিৎসকরা প্রতিদিনের ডায়েটে ডাবের পানিকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
কিডনির ক্ষমতা বাড়ে
ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে কিডনি সংক্রান্ত রোগ হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
শরীর এবং ত্বকের বয়স কমে
ডাবের পানিতে থাকা সাইটোকিনিস নামে একটি অ্যান্টি-এজিং উপাদান শরীরের ওপর বয়সের ছাপ পরতে দেয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বয়সের ছাপ বুঝতে দিতে না চাইলে প্রতিদিন সকালে ডাবের পানি খাওয়া শুরু করুন।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে
ডাবের পানিতে উপস্থিত ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মেডিকেল জানার্লে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে পটাশিয়াম শরীরে লবণের ভারসাম্য ঠিক রাখার মধ্যে দিয়ে ব্লাড প্রেসারকে স্বাভাবিক রাখে। এই কারণে যাদের পরিবারিক ভাবে এই রোগটি বিদ্যমান, তাদের নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া উচিত।
ওজন কমায়
ডাবের পানিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি এনজাইম হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাবলিজমের উন্নতিতেও সাহায্য় করে থাকে। ফলে খাবার খাওয়া মাত্র তা হজমের মাধ্যমে শরীরে মেদ জমার সুযোগ দেয় না। ওজন স্বাভাবিক থাকে। তাছাড়া ডাবের পানি খাওয়ার ফলে ওয়াটার রিটেনশন বেড়ে গিয়ে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
প্রতিদিন ডাবের পানি পান করলে শরীরের অন্দরের শক্তি এতটা বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা কোনওভাবেই ক্ষতি করার সুযোগ পায় না। কারণ এতে রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন এবং পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারি উপদানে ভরপুর। সেই সঙ্গে ডাবের পানিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমায়
শরীরে বাজে কোলেস্টেরল বা এলডিএল এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের জন্য ডাবের পানির কোনও বিকল্প নেই। শুধু তাই নয়, দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতেও ডাবের পানি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
মাথা যন্ত্রণা কমায়
ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে শীঘ্র এক গ্লাস ডাবের পানি খেয়ে নেয়া উচিত। কারণ ডাবের পানি মাথা যন্ত্রণা কমাতে দ্রুত কাজ করে।
এস
মন্তব্য করুন