অফিসে সহকর্মীর সঙ্গে সু-সম্পর্ক তৈরি হলে কাজের গতি বাড়ার সঙ্গে নিজের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। সপ্তাহের ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অফিসের সহকর্মীরা পরিবারের সদস্যদের মতোই হয়ে যান। এরপরও তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মতো ব্যবহার করা যায় না। কারণ নিজের পরিবারের সদস্য বাবা-মা, ভাই-বোন কিংবা অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করবেন অবশ্যই সহকর্মীদের সঙ্গে তা করবেন না।
সহকর্মীর সঙ্গে ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক-
পেশাদারী ব্যবহার
পরিবারের সদস্যদের সাথে যে ব্যবহার করেন তা যেন পেশাদারী কাজে না আসে। অফিসের সহকর্মীদের সাথে যতটুকু পেশাদারী ব্যবহার প্রয়োজন তা করুন। মনে রাখবেন খুব ঘনিষ্ঠ সু-সম্পর্ক বা যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোন সহকর্মীর সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সু-সংবাদ ও দুঃসংবাদ ভাগাভাগি করবেন না।
উচ্চস্বরে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন
অফিসে উচ্চস্বরে কথা বলা থেকে বিরত থাকা একজন ভদ্র সহকর্মীর কাজ। উচ্চস্বরে কথা বলায় নিজের সমস্যা না হলেও অফিসের অন্য সহকর্মীর বিরক্তির কারণ হতে পারে। সেখানে ধীরে এবং স্পষ্টভাবে কথা বলুন।
অন্যের কথা শুনুন
অফিসে দু’একজন সহকর্মী থাকেন যারা অন্যের কথা শোনার তুলনায় নিজেই কথা বলতে বেশি পছন্দ করেন। অফিসে এ ধরনের সহকর্মীদের অনেকে মনে মনে পছন্দ করেন না। সেজন্য সহকর্মীদের কথা শোনার চেষ্টা করুন। সহকর্মীর কথা শুনলে আপনি তার ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাবেন। এতে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে।
নালিশ নয়
সহকর্মীর আচরণে বিরক্ত হলে প্রথমে বিষয়টি তাকে ভদ্রভাবে বলুন। ভদ্রভাবে বলার পরেও সহকর্মীর সংশোধন না হলে তাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন। অফিসে কাজ করতে গিয়ে সহকর্মীর বিরুদ্ধে সরাসরি কর্তৃপক্ষকে নালিশ করলে সেটি আরও বিরোধের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে পরিস্থিতি যদি সামাল দেওয়ার মতো না হয় তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নিন।
সহকর্মীকে বিব্রত না করা
সহকর্মীকে বিব্রত বা বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ একসঙ্গে দীর্ঘ দিন কাজ করলেও সহকর্মী কিন্তু বন্ধু নন। সাজ-পোশাক নিয়েও হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয়
একই অফিসে ১০ জন সহকর্মী থাকলে এরমধ্যে দু’একজন সহকর্মীকে সবার তুলনায় একটু বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে পারে। এরপরও ওই ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলবেন না। কারণ মনে রাখবেন সহকর্মী আপনার দুর্বলতা কাজে লাগাতে পারে।
সহকর্মীর সম্মান
সহকর্মীদের সম্মান করুন। মনে রাখবেন সহকর্মী ও অফিসের মালিক এক নয়। এক অফিসে দীর্ঘ ১০ বছর কাজ করছেন কোন কারণে মালিক আপনাকে চাকরিচ্যুত করলেন। পরে অন্য অফিসে ফের জব করা শুরু করলেন। পূর্বের অফিসের মালিকের সঙ্গে আপনার খারাপ সম্পর্ক গড়ে উঠলেও সহকর্মীদের সঙ্গে যেন খারাপ সম্পর্ক গড়ে না ওঠে। আজকে আপনি সহকর্মীকে তার যোগ্য সম্মান দিলেই আপনিও আরও বেশি সম্মানিত হতে পারবেন সবার চোখে।
যোগাযোগ
আধুনিক বিশ্বে যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে মানুষ যত বেশি একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন সে ততবেশি শিখতে পারবেন। সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ সব সময়ে বজায় রাখা রাখুন। তবে বিনাপ্রয়োজনে বার বার সহকর্মীকে ফোন দিবেন না। বার বার ফোন দিলে আপনার সহকর্মী বিরক্ত হতে পারেন।
এফএ