বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নিয়ে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা বাড়ছে। অনেকে জানেন না, এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আইনি পদক্ষেপ নিতে হয়। চলুন এ বিষয়ে কিছু কথা জেনে নিই—
ব্ল্যাকমেইল কীভাবে হয়?
অনলাইন ব্ল্যাকমেইল: সাইবার অপরাধীরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে সেগুলো বিকৃত করে ম্যানিপুলেট করে। এরপর ফেক আইডি খুলে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।
ব্যক্তিগত সম্পর্কের ব্ল্যাকমেইল: কোনো সম্পর্কের সময় ধারণ করা ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও এমন ঘটনা ঘটে থাকে।
কী করবেন ব্ল্যাকমেইলের শিকার হলে?
ভয় পাবেন না: ব্ল্যাকমেইলকারীর ফাঁদে পড়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না। আত্মবিশ্বাস ধরে রাখুন।
প্রমাণ সংরক্ষণ করুন: হুমকি বা হয়রানির স্ক্রিনশট, চ্যাট, কল রেকর্ড, ছবি ও ভিডিও এবং আইডি লিংক সংরক্ষণে রাখুন।
আইনি ব্যবস্থা নিন
- পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত ব্ল্যাকমেইলে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করা যায়।
- থানায় সরাসরি গিয়ে জিডি বা অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব।
- সাইবার ট্রাইব্যুনাল (শুধু বিভাগীয় শহরে) এ মামলা করা যায়।
- নারী ভুক্তভোগীরা চাইলে নারী সুরক্ষা ইউনিটে অভিযোগ জানাতে পারেন।
- জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ হটলাইনে কল করুন।
সচেতনতা জরুরি
- অভিভাবকদের ভূমিকা: টিনএজারদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি। অভিভাবকদের উচিত সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা।
- ভুক্তভোগীর পাশে থাকুন: দোষারোপ না করে, সহানুভূতির সঙ্গে পাশে দাঁড়ান। আইনি পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করুন।
- সমাজের ভয় নয়: ‘কে কী বলবে’ ভাবনায় ভুগে অপরাধীদের ছাড় দেওয়া যাবে না। যথাযথ ব্যবস্থা নিন।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সতর্ক হোন
- প্রাইভেসি সেটিংস শক্তিশালী করুন
- অপরিচিত কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এড়িয়ে চলুন
- সন্দেহজনক গ্রুপ বা পেইজে যুক্ত হবেন না
- সন্দেহজনক কোনো রেস্টুরেন্ট বা হোটেলে দেখা করতে যাবেন না
- ছবি ও ভিডিও আপলোডের আগে যাচাই করুন কে তা দেখতে পারছে
- পাবলিক টয়লেট, হোটেল বা ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন
সাইবার ব্ল্যাকমেইল মোকাবিলায় ভয় নয়, সচেতনতা ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণই সঠিক পথ।
আরটিভি/জেএম