ফ্যাশন ও স্টাইল—এই দুই শব্দ প্রায়শই সমার্থক মনে করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এদের মধ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট পার্থক্য। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্যাশন বিশেষজ্ঞদের মতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছে শেষের কবিতায় অমিত রয়’এর সেই পুরনো উক্তিতেই নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি— ‘ফ্যাশনটা হলো মুখোশ, স্টাইলটা হলো মুখশ্রী।’
ফ্যাশন বনাম স্টাইল
ফ্যাশন মূলত একটি সাময়িক প্রবণতা, যা দ্রুত পরিবর্তিত হয় এবং বহিরাগত চাহিদার ওপর নির্ভরশীল। এটি সাধারণত ট্রেন্ড, ব্র্যান্ড, কিংবা বাজারের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। অন্যদিকে, স্টাইল হলো ব্যক্তির নিজস্ব স্বকীয়তা, যা তার ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন। ফ্যাশন যে কারও দ্বারা অনুসৃত হতে পারে, কিন্তু স্টাইল হলো স্বকীয় ও অনন্য।
সামাজিক প্রতিচ্ছবি
আজকের সমাজে ফ্যাশনের প্রতি মানুষের আগ্রহ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই ট্রেন্ড অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছেন। নামিদামি ব্র্যান্ডের পোশাক, চটকদার সাজসজ্জা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ট্রেন্ডে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে তরুণ প্রজন্ম। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের আসল স্বভাব বা রুচির প্রতিফলন আর দৃশ্যমান থাকে না। এই দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীতে স্টাইল এমন একটি ধারণা যা বাহ্যিক চাকচিক্যের চেয়ে ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ফ্যাশন ডিজাইনার ও স্টাইল বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্যাশন এবং স্টাইলের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ডিজাইনার অ্যালেকজান্ডার ম্যাককুইন বলেছিলেন, ‘ফ্যাশন ভেসে যায়, কিন্তু স্টাইল চিরস্থায়ী।’ তাই যে কোনো ট্রেন্ড অনুসরণ করার আগে ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য ও মানসিকতা বিবেচনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
‘ফ্যাশনটা হলো মুখোশ, স্টাইলটা হলো মুখশ্রী’—এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে বাহ্যিক সৌন্দর্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে যেন আমরা আমাদের আসল পরিচয়কে ভুলে না যাই। ফ্যাশনের পরিবর্তনশীল স্রোতে গা ভাসানোর চেয়ে নিজস্ব স্টাইল গড়ে তোলাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিত্বের স্বকীয়তা ধরে রেখে যদি ফ্যাশন অনুসরণ করা যায়, তবেই তা পরিপূর্ণ ও অর্থবহ হয়ে ওঠে।
আরটিভি/জেএম