ইভ্যালিকে নিয়ে নানা সমালোচনার মধ্যে আরেকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রিং আইডিকে নিয়ে ‘গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নিতে রিং আইডির নতুন ফাঁদ!’ শিরোনামে শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরটিভি অনলাইন। এই খবর প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য পাওয়া গেছে, যা আরটিভি অনলাইনের হাতে আছে। রিং আইডির বক্তব্য হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
‘‘রিং আইডি বাংলাদেশে তৈরী একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যা সামাজিক ব্যবসায়িক মূল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রিং আইডি একটি স্বদেশী সামাজিক ব্যবসায়িক যোগাযোগ মাধ্যম। এর প্রযুক্তিগত গবেষণা ও বিভিন্ন ফিচার নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে এর উদ্যোক্তাগণ কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৪ সালে ম্যাসেজিং, ভয়েসকল, ভিডিওকল ও নিউজফিড (টাইম লাইন) নিয়ে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে যাত্রা শুরু রিং আইডির এবং প্রাথমিক যাত্রাকালেই বিভিন্ন (প্রায় ২৫০ টিরও অধিক) অন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রশংসিত হয়। এর মধ্যে ডিজিটাল বাইবেল খ্যাত ফোবস, বাজফেড, ইয়াহু ফাইন্যাস্ন, টেক কো, ডিজিটাল জার্নাল, আই ডিজিটাল টাইমস্, দ্য টেকনিউজ, জুমইট, আর্গাম, আকবারিলিয়াম ও বারসাম উল্লেখযোগ্য। সেখানে বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের এমন সাহসী ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি গর্বের বিষয় যে, রিং আইডি ডিজিটাল ক্ষেত্রে এমন প্রথম প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান যারা সিক্রেট চ্যাট এর মতো স্বয়ংক্রিয়-মুছনিয় খুদে বার্তা প্রযুক্তির সাথে নেটিজেনদের পরিচয় করিয়ে দেয়। যেই জন্য রিং আইডিকে স্ন্যাপচ্যাট এর মতো বহুল জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক একটি অ্যাপ থেকেও ব্যবহারকারী বান্ধব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। একই সাথে রিং আইডি বিশ্বে প্রথম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যারা ইন্টারেক্টিভ লাইভ ভিডিও প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় বিশ্বকে।
-
আরও পড়ুন... গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নিতে রিং আইডির নতুন ফাঁদ!
যে কোন ডিজিটাল অ্যাপ্লিকেশন এর মূল লক্ষ্যই থাকে ব্যবহারকারীর যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আকৃষ্ট হয় অ্যাপ এর প্রতি। আর রিং আইডির অন্যতম লক্ষ্যই যেহেতু ব্যবহারকারীগণের সামাজিক যোগাযোগের পাশাপাশি আয়ের সুযোগ তৈরী করে দেয়া, তাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিষেবার সংযোজনের মাধ্যমে রিং আইডি ব্যবহারকারীগণের আয়ের সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে রিং আইডি চালু করেছে ব্রান্ড-প্রমোটার নামে নতুন একটি পরিষেবা, যেখানে যেকোন রিং আইডি ব্যবহারকারী ১২,০০০/- অথবা ২২,০০০/- টাকার বিনিময়ে রিং আইডি ব্রান্ড প্রোমোটার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবেন; যা তিনি যেকোন সময় চাইলেই বাতিল করতে পারবেন। এটি একটি সামাজিক শ্রমবিক্রি (কমিউনিটি জবস্) প্রক্রিয়া, যেখানে ব্রান্ড প্রোমোটারকে রিং আইডি কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব সম্পাদন করতে হবে। কমিউনিটি জবস্ এর ধরন সময় ও প্রাপ্যতা অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে। কন্টেন্ট দেখা ও শেয়ার করা, পণ্য বিক্রয়, সেবা বিক্রয় কিংবা অন্যান্য প্রদত্ত কাজের সফল সমাপ্তির বিপরীতে প্রতি কাজের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন প্রদান করা হয়।
এই বিষয়ে রিং আইডি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম জানান, ‘কমার্শিয়াল কন্টেন্ট ছাড়াও যেকোন রাষ্ট্রীয়/সামাজিক প্রচারণার ক্ষেত্রেই এই ব্রান্ড প্রমোটারগণ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। যেমন- রাষ্ট্রীয় জরুরি ঘোষণা, পজেটিভ ও উন্নয়ন বার্তা, গুজব প্রতিহত করা, একই সাথে সহিংসতা প্রশমন। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- এর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যে সকল দুষ্কৃতকারী/গুজব রটনাকারী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী করার চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের নিমিষেই চিহ্নিত করা সম্ভব।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ, ২০২১ সালে যা সম্ভাব্য ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে যাচ্ছে, শুধু ডিজিটাল অ্যাড এর নামে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অথচ অ্যাড প্রদানকারী ও ভোক্তা দু-ই আমাদের দেশের নাগরিক কিন্তু আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে নব্য ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানি। এই অর্থ (ডিজিটাল অ্যাড-এর) দেশের সীমানা অতিক্রম করতে না দেয়া এবং সেই অর্থ থেকে ভোক্তাকে আংশিক প্রদানপূর্বক স্বদেশী অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহী করে তোলা ও আয়ের একটা ভিন্ন মাধ্যম তৈরী করাই রিং আইডি’র লক্ষ্য। একই সাথে আমরা চাই যারা ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নন ডিজিটাল বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রায় তারাও যেন পিছিয়ে না থাকে।’
-
আরও পড়ুন... গ্রাহকদের জন্য ইভ্যালির জরুরি নোটিশ
জানা যায়, অন্তত চারটি বহুজাতিক কোম্পানি ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানে এবং আগাম বিনিয়োগকারী হিসেবে হ্রাসকৃত ম্যূল্যমান ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার-এ রিং আইডিতে তাদের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে; যা চলমান (Due diligence) রয়েছে এবং যার সফল সম্পাদন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখবে। একই সাথে সেই প্রাপ্তি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। বিশ্ব দরবারে যা বাংলাদেশকে পৌছে দিবে এক অনন্য উচ্চতায়। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের নিমিত্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যকে করবে আরো সুদৃঢ় ও বিশ্বকে জানান দিবে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার। নতুন এই ডিজিটাল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন এর উপায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ভাবে ভিন্নতার সাথে উপস্থাপন করবে; যা হবে অন্যদেশগুলোর জন্য অনুকরণীয়।
পি