২০২২ সাল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং বছর। গত আট বছরের অভিজ্ঞতাকে সাথে নিয়ে এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য জেদ্দা, দাম্মাম, মদিনা, রিয়াদসহ শারজাহ, আবুধাবীতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে বেসরকারি এই সংস্থাটি। সোমবার (১ নভেম্বর) কক্সবাজারের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম।
এছাড়া আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন ক্যাটাগরি-ওয়ান অর্জন করতে পারলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে নিউইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
কামরুল ইসলাম বলেন, এছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্য বিশেষ করে লন্ডন, আমস্টারডাম, রোম, প্যারিসসহ বেশ কয়েকটি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইনশাআল্লাহ ২০২৩ সালের মধ্যে আমাদের বিমান বহরে আরও ৮টি এয়ারবাস ৩২১-এলআর সিরিজের এয়ারক্রাফট যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে সবগুলি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। সাতটি এটিআর ৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। এছাড়া বোয়িং ৭৩৭-৮০০ দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে ক্রস কাউন্ট্রি ধারণা থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যশোর থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং উত্তরবঙ্গের একমাত্র সচল বিমানবন্দর সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। খুব শিগগিরই সৈয়দপুর থেকে কক্সবাজার, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার রুটেও ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে করে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে।
কামরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ইউএস-বাংলা ঘোষণা করেছে আগামী ১৯ নভেম্বর হতে ঢাকা থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে প্রথমবারের মতো সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে। আগামী বছরের শুরুতে ঢাকা থেকে কলম্বো রুটেও ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে ইউএস-বাংলার। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটকে আরও বেশি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নতুন রুট ও ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধির পরিকল্পনার সাথে চলতি বছরের শেষে এবং আগামী বছরের শুরুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বহরে আরও তিনটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৪টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট বহরে যোগ করতে যাচ্ছে।
নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তার জন্য আবেদন করেছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো। বিশেষ করে অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, জেটফুয়েল প্রাইসকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিরূপণ করা ইত্যাদি। এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম গঠনমূলক লেখনীর মাধ্যমে ভূমিকা রাখতে পারবে।
এ সময় কামরুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন আধুনিক বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলোতে সেলফ চেক-ইন করার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে আমাদের দেশে সেলফ চেক-ইনের কোনো সুযোগ নেই। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স খুব শিগগিরই প্রথমবারের মতো সেলফ চেক-ইনের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। যা ইউএস-বাংলার এগিয়ে যাওয়ার নিদর্শন। ইউএস-বাংলার ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ারদের জন্য ঢাকায় আলাদা চেক-ইন কাউন্টারের ব্যবস্থা করেছে। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি বিমানবন্দরে স্কাইস্টার গ্রাহকদের জন্য আলাদা চেক-ইন কাউন্টার করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
করোনাকালে ইউএস-বাংলার কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক বিখ্যাত এয়ারলাইন্স কোভিড-১৯ এর সময় এয়ারলাইন্সকে টিকিয়ে রাখার জন্য কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে। কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্মীদের নিজের পরিবারে রেখে দেওয়ার মানসিকতা দেখিয়েছে। সব কর্মীদের বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করতে সহযোগিতা করেছে।
এনএইচ/এসকে