ই-ভিসা জটিলতাসহ যাত্রী সংকটের কারণে বারবার হজফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। এ নিয়ে বিমানের মোট ৬টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। ফলে হজযাত্রীরা শিকার হচ্ছেন চরম বিড়ম্বনায়।
সবশেষ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শিডিউল হজফ্লাইট বিজি-৩০৩৯ ও বিজি-৩০৩১ বাতিল করা হয়েছে। সোমবার ১০টা ২৫ মিনিটের এবং মঙ্গলবার ৮টা ৫৫ মিনিটের হজফ্লাইটটি ছেড়ে যাবার কথা ছিল।
এর আগে রোববার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের বিজি-১০২৭ নম্বর ফ্লাইটটি, সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটের বিজি-৫০২৭ নম্বর ফ্লাইটটিও বাতিল করা হয়েছে। এর আগে শনিবার সকাল ৫টা ৫৫ মিনিট এবং সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিট জেদ্দা যাবার দুটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, আমাদের হজফ্লাইটগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিন্তু হজযাত্রী পাচ্ছি না। তাদের ভিসাসহ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি বলে এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের ফ্লাইটে তুলছে না। ফলে নির্ধারিত ফ্লাইট যেতে পারছে না। হজযাত্রী সংকটের কারণে ফ্লাইট বাতিল করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে পাসপোর্টে স্টিকার লাগানো হতো। যা ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস ইস্যু করতো। কিন্তু এবার ভিসা অনলাইনে করা হয়েছে। পাসপোর্টে কোনো ভিসা থাকছে না। হজে যাবার সময় পাসপোর্টের সঙ্গে আলাদা কাগজে ই-ভিসার প্রিন্ট করা কপি সঙ্গে রাখার বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। সাদা কাগজে প্রিন্ট করা এই ই-ভিসা দেখে অনলাইনে চেক করে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ পাস দিচ্ছে। অনলাইনেই হচ্ছে সবকিছু। কিন্তু সার্ভারের সিস্টেম জটিলতা দেখা দিচ্ছে ক্রমাগত। অনলাইনে ই-ভিসার প্রিন্ট নেয়ার সমস্যা হচ্ছে। সার্ভার জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর প্রিন্ট করতে গিয়ে অনেকের ভিসা প্রিন্ট হচ্ছে না। পরে দৌড়াতে হচ্ছে সৌদি দূতাবাসে। সেখানেও দ্রুত সমস্যা মিটছে না। আবেদন সৌদি দূতাবাসে পাঠানোর পর ভিসা নিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। আর পাসপোর্টের সঙ্গে ই-ভিসার প্রিন্ট করা কপি না থাকলে এয়ারলাইন্স অফিসাররা ফেরত পাঠাচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজারসহ মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এবারের হজফ্লাইট শুরু হয় ২৪ জুলাই। চলবে আসছে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত।
মূলত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সব হজ এজেন্সিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের আসন নিশ্চিত করে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু এজেন্সি মালিকরা টিকিট সংগ্রহ না করায় যাত্রী সংকটের কারণে ফ্লাইট বাতিল করছে বিমান সংস্থা দুটি।
এদিকে ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিমান সংস্থাগুলো একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে, তেমনি শেষ মুহূর্তে হজযাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে সংকট তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমসি/সি