রাজধানীর আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আসন্ন ঈদুল আজহায় আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসাতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (১৪ জুন) বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন।
গত ১৫ মে পরিবেশ সংরক্ষণের দাবিতে আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। পরে ২২ মে আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসাতে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এরপর চেম্বার আদালত হয়ে বিষয়টি আজ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে।
উল্লেখ্য, গত ২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহে আলমের সই করা ইজারা বা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করা হয়। দরপত্রে ঈদুল আজহার দিনসহ পাঁচ দিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তির পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর আফতাব নগরের আবাসিক এলাকায় কোরবানির ঈদে গরু-ছাগলের হাট না বসাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে আবেদন করেন শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল। ওই আবেদনে বলা হয়, অস্থায়ী হাট বসানোর কারণে আফতাব নগরের জহিরুল ইসলাম সিটিতে বসবাসরত লোকজন ঈদুল আজহার আগে ও পরে প্রায় এক মাস ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেন। ওই এলাকায় চলাচলের প্রধান সড়কটিতে অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসানোর ফলে নাগরিকদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সময় কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। কেউ মারা গেলেও মরদেহ বহন করাও কষ্টকর হয়ে যায়। এ ছাড়া গরু-ছাগলের হাট বসানোর ফলে আবাসিক এলাকাটির পরিবেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
আবেদনের পর ১১ মে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার সচিব, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ছয় জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে কোনো সাড়া না পেয়ে ১৮ মে ঈদুল আজহায় আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।