প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের বান্ধবী নাহিদা রুনাইয়ের জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে তার বান্ধবী ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাহিদা রুনাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলার তদন্ত চলছে।
শনিবার (৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করে দুদক। এ সময় দুদকে পক্ষ থেকে হাইকোর্টে বলা হয়, নাহিদা রুনাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলার তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় জামিনে থাকলে তা তদন্তে প্রভাব ফেলবে। তাই জামিন বাতিল হওয়া দরকার।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পায় পি কে হালদারের বান্ধবী নাহিদা রুনাই।
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্রায় ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর আদালত পি কে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এই পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা, ফাস ফাইন্যান্স থেকে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, পি কে হালদারের অর্থপাচারের বিষয়গুলো দেখভাল করতেন নাহিদা রুনাই। এই নাহিদা রুনাই বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের ওপর মহলকে ম্যানেজ করতো। আর এসব কাজের পুরস্কার হিসেবে নাহিদাকে শূন্য থেকে কোটিপতি বানায় পি কে হালদার। নাহিদা রুনাই তার টাকা পাচারেরো অন্যতম সহযোগী ছিলেন। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হচ্ছে সেই হিসাবও রাখার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
এর আগে পিকে হালদারের অর্থপাচারের সহযোগিতার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুটপাটে এই দুজন পিকে হালদারকে সহযোগিতা করেছে বলে জবানবন্দি দিয়েছেন এক আসামি।
উল্লেখ্য, পিকে হালদারের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এ পর্যন্ত ৩৪টি মামলা হয়েছে। তার সহযোগীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ১২ জনকে গ্রেপ্তারও করেছে দুদক। এদের মধ্যে ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।