ঢাকাবুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

আইন পেশার টাইটেলে ব্যারিস্টার শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৭ জুলাই ২০২৩ , ০৫:৪৪ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিদেশি রাষ্ট্রের আইন পেশার টাইটেল ‘ব্যারিস্টার’ শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৭ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ দিয়েছেন। তিনি নিজেই বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। নোটিশে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আইনজীবীদের একমাত্র বৈধ পেশাগত টাইটেল হলো ‘অ্যাডভোকেট’। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এই অ্যাডভোকেট শব্দ ছাড়া বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের আইন পেশার টাইটেল ব্যবহার করা বৈধ নয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বিদেশি ও সাবেক ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ইংল্যান্ডের আইনজীবীদের টাইটেল ‘ব্যারিস্টার’ ব্যবহার করছেন যা পুরোপুরি অবৈধ। উক্ত ‘ব্যারিস্টার’ শব্দ ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশের আইন পেশার বৈধ টাইটেল ‘অ্যাডভোকেট’ শব্দটি অবমূল্যায়িত হচ্ছে। এর ফলে বিচার প্রার্থী ক্লায়েন্টরা ‘ব্যারিস্টার’ ও ‘অ্যাডভোকেট’ শব্দের মধ্যে বিভ্রান্তিতে পতিত হচ্ছেন এবং অ্যাডভোকেটরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক বিদেশি রাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে পারেন এবং সেই দেশের আইনজীবী তথা ‘ব্যারিস্টার’ হতে পারেন। কিন্তু তার উদ্দেশ্য যদি হয় ইংল্যান্ডের আইন পেশার টাইটেল ‘ব্যারিস্টার’ ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ক্লায়েন্টদের প্রভাবিত করা তাহলে বিষয়টি সম্পূর্ণ অবৈধ ও অনৈতিক।

বিজ্ঞাপন

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এর আগে ১৯৪৭ সালে আমরা ২০০ বছরের ব্রিটিশদের গোলামী থেকে মুক্তি লাভ করেছি। বাংলাদেশ এখন আর কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের উপনিবেশ নয়, বরং এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এবং দ্য বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনারস অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী বাংলাদেশে আইনজীবীদের ‘অ্যাডভোকেট’ নামে অভিহিত করা হবে। বাংলাদেশে আইনজীবীদের একমাত্র পেশাগত উপাধি হলো অ্যাডভোকেট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের আইনজীবীদের বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। ইংল্যান্ডে যারা আইন পেশার নিয়োজিত তাদের ‘ব্যারিস্টার’ বলা হয়, আমেরিকায় আইনজীবীদের ‘অ্যাটর্নি ইন ল’ বলা হয়, চীনে আইনজীবীদের লুশী বলা হয়, জাপানে আইনজীবীদের বেঙ্গোশি বলা হয়। মূলত একেক দেশে আইনজীবীদের তাদের দেশের আইন অনুযায়ী বিভিন্ন টাইটেলে ডাকা হয়। ব্যাপারটি হলো, বাংলাদেশে আমরা যাকে ‘পানি’ বলি, ভারতের কলকাতায় সেটাকে ‘জল’ বলা হয়, জাপানে পানিকে মিজু এবং আমেরিকায় সেটাকে ওয়াটার বলা হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, পৃথিবীর একেক দেশের আইন একেক রকম। বাংলাদেশের আইন ইংল্যান্ডের আইন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অন্যদিকে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়াসহ সব দেশের আইন একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এ জন্য প্রত্যেকটি দেশে তাদের আইনের ছাত্রকে সেই দেশের আইনের ওপর পড়াশোনা করতে হয়। কারণ, বিশ্বের একেক দেশের আইন একেক রকম। বাংলাদেশ এখন আর ব্রিটিশদের উপনিবেশ নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশে যারা আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন তারাই একমাত্র এদেশের আইনের ধারক ও বাহক। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আইনজীবীদের একমাত্র বৈধ পেশাগত টাইটেল হলো ‘অ্যাডভোকেট’। তাই বাংলাদেশে অবিলম্বে বিদেশি ও সাবেক ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ইংল্যান্ডের আইন পেশার টাইটেল ‘ব্যারিস্টার’ শব্দের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ‘অ্যাডভোকেট’ হতে গেলে দেশের কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |