প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশের পর করণীয় ঠিক করতে চলতি সপ্তাহ বৈঠকে বসবে প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে আপিলের নিষ্পত্তি না হলে আগামী ৯ জুন থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় ধাপের ভাইভা আপাতত স্থগিত রাখা হবে।
হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, রায়ের কপি পেলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। আপাতত এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, এ রায়ের পর করণীয় ঠিক করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) বা বৃহস্পতিবার এ বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তার মধ্যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলা হবে। আপিলে যদি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয় তাহলে ভাইভা নিতে কোনো সমস্যা থাকবে না।
তিনি বলেন, আগামী ৯ জুন থেকে ভাইভা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে আপিল করা যাবে কি না, তা অনিশ্চিত। যদি আপিল না করা যায় তবে ভাইভা স্থগিত রাখা হবে।
এর আগে, তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলা) লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয় গত ২২ এপ্রিল। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। নির্বাচিতদের ভাইভা পরীক্ষা চলমান রয়েছে।
আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। আর এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে অনেকে পরীক্ষা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে প্রকাশিত ফল নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাই প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ঘটনার তদন্ত এবং পরীক্ষা প্রক্রিয়া স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকজন পরীক্ষার্থী। হাই কোর্ট তাদের আবেদন শুনেছেন এবং এ ধাপের নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।