ঢাকাশুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘একদিন তো মরতে হবেই’ আবেগঘন চিঠি লিখে আর ফিরলেন না আনাস

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ , ০১:২৪ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সরকার পতনের আন্দোলনে গিয়ে রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান দশম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার খান আনাস। ওইদিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে, মাকে উদ্দেশ করে আবেগঘন একটি চিঠি লিখে রেখে যান তিনি। 

বিজ্ঞাপন

হৃদয়স্পর্শী সে চিঠিতে আনাস লেখেন.....

‘মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। আমি নিজেকে আর আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। সরি আব্বুজান। তোমার কথা অমান্য করে বের হলাম। স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। আমাদের ভাইরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিচ্ছে। একটি প্রতিবন্ধী কিশোর, ৭ বছরের বাচ্চা, ল্যাংড়া মানুষ যদি সংগ্রামে নামতে পারে, তাহলে আমি কেন বসে থাকব ঘরে। একদিন তো মরতে হবেই। তাই মৃত্যুর ভয় করে স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে সংগ্রামে নেমে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যু অধিক শ্রেষ্ঠ। যে অন্যের জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেয় সে-ই প্রকৃত মানুষ। আমি যদি বেঁচে না ফিরি, তবে কষ্ট না পেয়ে গর্বিত হয়ো। জীবনের প্রতিটি ভুলের জন্য ক্ষমা চাই।’

বিজ্ঞাপন

চাঁনখারপুলের সেই গণহত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রোববার (২৫ মে) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এদিন, এ বিষয়ে শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতের অনুমতি নিয়ে ‘আনাসের মাকে লেখা তার হৃদয়স্পর্শী চিঠিটি’ পড়ে শোনান। এসময় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কিছুক্ষণের জন্য পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। পরে শুনানি শেষে ট্র্যাইব্যুনাল এ মামলায় (ফরমাল চার্জ) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে আদেশ দেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য ৩ জুন দিন ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, চাঁনখারপুলের ওই গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। এরপর গত ২১ এপ্রিল চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সেই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। 

মামলার আসামিরা হলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

আট আসামির মধ্যে চারজন এখন কারাগারে, অন্যরা পলাতক। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ইন্সপেক্টর আরশাদ, কনস্টেবল মো. সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

আরটিভি/আরএ/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |