বর্তমান ইন্টারনেট দুনিয়ায় সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে ফেসবুক। বিশ্বব্যাপী ছোট বড় সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয় এই যোগাযোগমাধ্যমটি।কিন্তু সেই ফেসবুকের ভেতরে কী চলছে, তা আমাদের অনেকেরই জানা নেই।
এবার ফেসবুকের হাজারো পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র ও নথি ফাঁস করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। যে গবেষণাগুলো ফেসবুক নিজস্ব খরচে অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য করেছিল। ফেসবুক ছাড়ার পর গতকাল সোমবার (৪ অক্টোবর) তিনি মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসেন।
ফ্রান্সেস হাউগেন ২০১৯ সালে ফেসবুকে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এর আগে তিনি কাজ করেছেন গুগল ও পিন্টারেস্টে।
ফ্রান্সেস হাউগেন জানান, মুখ খোলার জন্য ফেসবুক তাকে ‘শেষ’ করে দেবে। তবে তার ধারণা, ‘যতদিন ফেসবুক আড়ালে কাজ করে যাচ্ছে, ততদিন তারা কারও কাছে জবাবদিহি করবে না।’ সে কারণেই তিনি সামনে এসেছেন।
ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা, পণ্য নিরাপত্তা ও তথ্যের সুরক্ষাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট উপকমিটির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ফ্রান্সেস হাউগেনের লিখিত বক্তব্য সংগ্রহ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। আজ মঙ্গলবার তার সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে । লিখিত বক্তব্য হাউগেন বলেন, ‘আমি যা করেছি, তা সঠিক করেছি এবং সাধারণের ভালোর জন্য বলেই আমার বিশ্বাস। তবে আমি জানি, ফেসবুকের সম্পদের শেষ নেই, যা ব্যবহার করে আমাকে নিঃশেষ করে দিতে পারে।’
হাউগেন যোগ করেন, ‘সামনে এসেছি, কারণ আমি একটি ভীতিকর সত্য দেখেছি। আর তা হলো বাইরে প্রায় কেউই জানে না ফেসবুকের ভেতরে কী চলছে।’
প্রতিষ্ঠানটির মিথ্যা তথ্যের প্রসার রোধে কাজ করা দলটিতে পণ্য ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ৩৭ বছর বয়সী সাবেক এই কর্মী। ফেসবুকের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফেসবুক ছাড়ার আগে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নথি সঙ্গে নিয়ে যান হাউগেন। নথিগুলো প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দিলে তিন সপ্তাহ ধরে পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি; যা ‘ফেসবুক ফাইলস’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে হাউগেন বলেন, ফেসবুক যে মানুষের ক্ষতি করছে, সহিংসতা ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, তা শীর্ষ নির্বাহীরা জানতেন। তবে জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেননি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। উল্টো প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা করেছেন।
‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানটি প্রচারের পর ফেসবুকের এক মুখপাত্র সিএনএন বিজনেসকে বলেন, ‘ভুয়া তথ্য ও ক্ষতিকর কনটেন্টের প্রসার রোধে আমাদের অগ্রগতি নিয়মিত। খারাপ কনটেন্ট ছড়ানোয় আমরা উৎসাহ দিই—এমনটা বলা সত্য নয়।’
এমএন/টিআই