মৌসুমি বায়ুর বিদায়ের সময় সাধারণত বৃষ্টি বেড়ে যায়। তাছাড়া দেশে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা গরমের কারণে বেড়েছে মেঘ। তাই ঝরছে বৃষ্টি। অপরদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা লঘুচাপ ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ায় এর প্রভাবেও বেড়েছে বৃষ্টি। তাই, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ঢাকায় এ বছর অল্প সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে নীলফামারীর ডিমলায়। সেখানে ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। আর রাজধানীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ঝরেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী দু-তিন দিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার কারণে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। চলতি মাসের মধ্যে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা থেকে বিদায় নেওয়া শুরু করতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বৃষ্টি সাধারণত কিছুটা বেড়ে যায়।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত প্রতিবছর রাজধানী এবং এর আশপাশ এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়ে থাকে। গত বছর ২৫ অক্টোবর রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এ ধরনের অতি ভারী বৃষ্টি সাধারণত দিনের বেলা হয়ে থাকে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের বৃষ্টি সন্ধ্যার পর শুরু হয়ে চলে সারা রাত। এর ফলে রাজধানীসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
এদিকে, আগামী পাঁচ দিনে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা কমতে পারে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অভি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ভারতের বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উত্তরাংশে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।