দোয়ার মাধ্যমে কি ভাগ্য বদল হয়
ভাগ্যে বিশ্বাস করা ছাড়া কোনো ব্যক্তি মুমিন হতে পারে না। আর ভাগ্যে বিশ্বাস করার অর্থ হলো, এটা বিশ্বাস করা যে জীবনের ভালো ও মন্দ, আনন্দ ও দুঃখ, জীবিকা ও সম্পদ, জীবন ও মৃত্যু ইত্যাদি বিষয় আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। ভাগ্য আল্লাহর এক রহস্যময় জগৎ। এই জগৎ সম্পর্কে আল্লাহ কাউকে অবগত করেননি।
পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেবো। নিশ্চয়ই যারা অহংকার করে আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা মুমিন, আয়াত ৬০)
আবার দোয়ার চেয়ে মহান আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত কিছু নেই। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে দোয়া অপেক্ষা মর্যাদাবান আর কিছু নেই। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩৮২৯; তিরমিজী, হাদিস: ৩৩৭০)
অন্যদিকে হাদিস অনুযায়ী মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায় বান্দার রিজিক, কর্ম ও মৃত্যুর সময়ের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ হয়ে থাকে। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন- তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি তার মাতৃ উদরে ৪০ দিন জমাট থাকে। এরপর অনুরূপ ৪০ দিনে রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়। এরপর একইভাবে ৪০ দিনে তা একটি মাংসপিণ্ডের রূপ নেয়। এরপর আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা পাঠানো হয়। ওই ফেরেশতা তাতে রুহ ফুঁকে দেন। আর তাকে চারটি বিষয় লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেগুলো হলো- তার রিজিক, তার মৃত্যুক্ষণ, কর্ম এবং বদকার ও নেককার হওয়া। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৪৮২)
তাহলে প্রশ্ন হলো- বান্দার ভাগ্য যখন পূর্বনির্ধারিত তাহলে কি দোয়ায় তা পরিবর্তন হয়? এ ক্ষেত্রে আলেমদের মত, কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো পুরোপুরি নির্ধারিত। যা কখনো পরিবর্তন হবে না, যেমন মৃত্যু। আর কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো পুরোপুরি নির্ধারিত নয়, ভালো কাজের মাধ্যমে বা দোয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন সম্ভব।
হাদিসে এমনটাই এসেছে। সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদীর (ভাগ্য) রদ করতে পারে না। আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই বয়সে বৃদ্ধি ঘটায় না। (তিরমিজী, হাদিস: ২১৪২)
আরটিভি/একে
মন্তব্য করুন