মুসাফিরের জুমার নামাজ ছুটে গেলে করণীয়
কোনো ব্যক্তি যদি ৪৮ মাইল রাস্তা অতিক্রম করে কোনো স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের শহর থেকে বের হন তাহলে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফিরের বিধিবিধান পালনের ক্ষেত্রে ইসলামে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। যেমন রমজান মাসে রোজা রাখা মুসাফিরের ওপর ফরজ নয়। তবে অন্য সময় তা কাজা করতে হবে। এ ছাড়া মুসাফিরের জন্য প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো কসর বা সংক্ষিপ্ত করে পড়তে হয়।
কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তারা রাসুলকে (সা.) তার মিম্বারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, মানুষ যেন জুমার নামাজ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে, অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর তারা গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (মুসলিম, হাদিস : ৮৬৫)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমার নামাজ পরিত্যাগ করে তার নামে মুনাফিক উপাধি লেখা হয় এমন কিতাবে, যার লেখা মোছা হয় না এবং পরিবর্তনও করা হয় না। (কিতাবুল উম্মাহ : ১/২৩৯)
তবে শুক্রবার বা জুমার দিন জুমার নামাজ আদায় করা মুসাফিরের জন্য ওয়াজিব নয়। মুসাফিরের সম্ভব না হলে জুমার নামাজ ছেড়েও দিতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্র জোহরের নামাজ আদায় করতে হবে। জোহরের চার রাকাত নামাজের জায়গায় দুই রাকাত আদায় করতে হবে। তবে যদি সফরের ক্লান্তি, যানবাহনের সমস্যা বা এ জাতীয় কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে যথাসম্ভব জুমার নামাজে শরিক থাকতে চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে তার জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই।
রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ইমান আছে, তাদের ওপর জুমা ওয়াজিব। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও ক্রীতদাসদের ওপর জুমা ওয়াজিব নয়। (বায়হাকি, দারাকুতনি)
মুসাফির অবস্থায় জুমার নামাজ ছুটে গেলে মুসাফির ব্যক্তি জোহর নামাজ আদায় করে নেবে। এ ক্ষেত্রে জোহরের জামাত করা যাবে না। কেননা যে এলাকায় জুমার জামাত হয়, সেখানে জোহরের জামাত করা মাকরুহে তাহরিমি।
আরটিভি/এফএ/এআর
মন্তব্য করুন