আইফোনের ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়াতে যে তিন পরামর্শ দিলো অ্যাপল
আইফোন পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ও অন্যতম জনপ্রিয় ফোনগুলোর একটি। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে একটি আইফোন ব্যবহার করার। অনেকেই আবার এটিকে সামাজিক অবস্থান বা স্ট্যাটাসের প্রতীক মনে করেন।
একটি আইফোনে বেশ কয়েক বছর সফটওয়্যার ও নিরাপত্তার আপডেট দেয় অ্যাপল। তাই ব্যবহারকারীরা অনেক দিন একটি আইফোন ব্যবহার করতে পারে। তবে ব্যাটারির ক্ষেত্রে অ্যাপলের সেট নিয়ে অনেকেই বিরক্ত হন। এক বছর ব্যবহারের মধ্যে ব্যাটারির কার্যক্ষমতা কমে যায় ও প্রসেসরে পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে ফোনের গতি ধীর হয়ে যায়। এর জন্য ব্যাটারির হেলথ পরীক্ষা করেন ব্যবহারকারীরা। তবে অ্যাপেল বলছে, আইফোনে থাকা তিন ধরণের সুবিধা ব্যাটারির কার্যক্ষমতা ব্যাটারির স্থায়িত্ব দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আইফোনে থাকা অটো-ব্রাইটনেস, অটো-লক এবং লোকেশন সার্ভিস সুবিধা ব্যবহারে সামান্য পরিবর্তন আনলেই ব্যাটারির স্থায়িত্ব দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
ব্যাটারির স্থায়িত্ব আইফোনের তিন সেটিংস পরিবর্তনের কৌশলগুলো দেখে নেওয়া যাক।
১- অটো-ব্রাইটনেস
অটো-ব্রাইটনেস এমন একটি ফিচার যা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এ ছাড়া এটি চারপাশের আলো অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করে। এটি বিল্ট-ইন লাইট সেন্সর ব্যবহার করার মাধ্যমে চারপাশের আলো অনুযায়ী স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা বাড়ায় কমায়। যা পড়ার সুবিধা বাড়ায়, চোখের চাপ কমায় এবং ডিভাইসের ব্যাটারি জীবন বাড়াতে সাহায্য করে।
অটো-ব্রাইটনেস খুঁজে পেতে, Settings খুলুন এবং Accessibility-এ যান। এরপর Display and Accessibility নির্বাচন করুন এবং Display and Text Size-এ যান। সেখানে স্ক্রল করে Auto-Brightness অপশনটি বন্ধ করে দিন। এটি ডিভাইসকে চারপাশের পরিবেশ অনুযায়ী উজ্জ্বলতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করা থেকে বিরত রাখবে।
এ ছাড়াও এই মেনু থেকে Night Shift চালু করা ব্যাটারি স্থায়ীত্ব বাড়াতে সাহায্য করবে। এই ফিচারটি সময় এবং আপনারআইফোনের জিওলোকেশন ব্যবহার করে সূর্যাস্তের সময় অনুযায়ী স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে পরিবেশের আলো অনুযায়ী সামঞ্জস্য করে।
২- অটো-লক
এই ফিচারটি ডিভাইস নির্দিষ্ট সময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ ও লক করে দেয়। এটি যত কময় সময় নিয়ে সেটাপ করা থাকবে তত কম সময়ে ফোনের স্ক্রিন ওপেন থাকবে। অ্যাপেল বলেছে, ব্যবহারকারীদের এই ফিচারটি চালু রাখা উচিত।
এটি খুঁজতে, Settings-এ যান এবং Display and Brightness নির্বাচন করুন। এরপর স্ক্রল করে Auto-Lock অপশনটি খুঁজুন এবং ব্যাটারি জীবন বাড়াতে সময় কমিয়ে দিন।
অ্যাপলের পরামর্শ, Always-On ফিচারটি বন্ধ করে দিন। এই ফিচারটি লকড অবস্থায়ও নোটিফিকেশন প্রদর্শন করতে স্ক্রিনকে ডিম করে চালু রাখে। যদিও এই ফিচারটি ব্যাটারি ড্রেন কমানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বন্ধ করলে ব্যাটারি আরও সাশ্রয় হতে পারে। এই সেটিংটি ডিফল্টভাবে চালু থাকে এবং Auto-Lock ফিচার খুঁজতে যেভাবে যান, সেভাবেই পাওয়া যাবে।
৩- লোকেশন সার্ভিসেস
অনেক অ্যাপ ইনস্টল করার সময় ব্যবহারকারীর অবস্থান শনাক্তের জন্য অনুমতি চেয়ে থাকে। এর জন্য লোকেশণ সার্ভিস চজালু রাখতে হয়। তবে লোকেশন সার্ভিস চালু থাকলে অ্যাপগুলো জিপিএস ব্যবহার করে ক্রমাগত ডেটা সংগ্রহ করে, যা ব্যাটারির ওপর বাড়তি চাপ ফেলে থাকে।
লোকেশন সার্ভিসেস বন্ধ করা ব্যাটারি সাশ্রয়ে সহায়ক। কারণ, জিপিএস (GPS) ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর অবস্থান ক্রমাগত ট্র্যাক করা ব্যাটারি শক্তি ব্যাপকভাবে ক্ষয় করে।
এই সেটিং বন্ধ করতে, Settings-এ যান এবং Privacy & Security নির্বাচন করুন। সেখান থেকে, অ্যাপ নির্বাচন করুন এবং Location Services খুলুন। আপনি যেসব অ্যাপ লোকেশনে প্রবেশ করতে পারে তা দেখতে পাবেন। অ্যাপগুলোর জন্য Location Services বন্ধ করে দিন অথবা শুধুমাত্র যেগুলোর ট্র্যাকিং চান না, সেগুলো বন্ধ করুন।
অ্যাপলের তথ্যমতে, আইফোনে ডিফল্টভাবে সক্রিয় থাকলেও সুবিধাগুলোর সেটিংস পরিবর্তন করে আইফোনে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানো সম্ভব।
এ ছাড়াও Low Power Mode চালু করে ব্যাটারি খরচ কমানো যায়। তবে এটি ব্যবহারের মসৃণতা এবং ডিসপ্লের গুণমানে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।
আরটিভি/এএ
মন্তব্য করুন