চলতি বছরের জানুয়ারি মাস জুড়ে কিছুটা চাপের মুখে দেশের অর্থনীতি। একদিকে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি অপরদিকে কিছুটা বেড়েছে রেমিটেন্স।
জানুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.১৫ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৫.০৩ শতাংশ। অপরদিকে জানুয়ারিতে দেশে রেমিটেন্স এসেছে ১শ’ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। যা ডিসেম্বরে ছিল ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
এদিকে জানুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৫৩ শতাংশ। যা ডিসেম্বরে ছিল ৫.৩৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৩.১০ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪.৪৯ শতাংশ। গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৯২ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪.৪৬ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.২৮ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪.৭৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ২.৫২ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৩.৮৮ শতাংশ।
শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৫৭ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৬.৭ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.১১ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৬.৭৪ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৯১ শতাংশে, যা আগের মাসে ছিল ৫.৩৫ শতাংশ।
অপরদিকে ডিসেম্বরের তুলনায় সদ্যসমাপ্ত জানুয়ারি মাসে দেশের রেমিটেন্স ৫ কোটি ডলার বেড়েছে। তবে আগের অর্থবছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় এবারের রেমিটেন্স ১৪ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ডলার কমেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জানুয়ারি মাসে ১১৫ কোটি ৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ উপাত্ত থেকে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে বাংলাদেশে ৮শ’ ৬৩ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল। কিন্তু চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে ৭শ’ ১৮ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের রেমিটেন্স ১৪৫ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৭৩ শতাংশ কমেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি নিয়ে বলেন, জানুয়ারিতে মোটা চালের দাম বৃদ্ধি এবং বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তির সময় হওয়ায় এ ব্যয় বেড়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়েছে। সাধারণত জানুয়ারি ও জুনে দেশে মুল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়। তবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
রেমিটেন্সের পরিমাণ কম বাড়ার কারণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের বড় অবদান রয়েছে। এর ইতিবাচক ধারা যেন অব্যাহত হয়, সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সক্রিয় রয়েছে। এলক্ষ্যে বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অ্যাপস্ তৈরি করে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিকাশ এতোদিন এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও দূতাবাসগুলোর নজরদারিতে এর সত্যতা মিলেছে। এই ধরনের কাজে সম্পৃক্ত থাকায় ইতোমধ্যে ২৫ জনকে জরিমানাও করা হয়েছে।
বর্তমানে ছোট অঙ্কের টাকা পাঠাতে কেউ আর ব্যাংকিং চ্যানেলে যাচ্ছেন না। তারা খুব সহজে স্বল্প সময়ে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এমতবস্থায় ছোট অঙ্কের রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যয় ফ্রি করা যায় কি-না বা ব্যাংকগুলো যেসব নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করে তাদের চার্জ বেশি কি-না, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এসব বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে।
এমসি/এমকে