ঢাকাসোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আবারও দরকার শেখ হাসিনার সরকার

অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ হাসান খান

সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮ , ০৮:৫০ পিএম


loading/img

শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার, আওয়ামী লীগ সরকার বারবার দরকার।  মাত্র ক মাস পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যা  নিয়ে এখনই জনসাধারণের মাঝে নানারকম আলোচনা চলছে। যারা নতুন ভোটার হয়েছেন তারাও ভাবছেন কাকে ভোট দেবেন। তবে নতুন বা পুরাতন আপনি যে ভোটারই হোন না কেন আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি বাংলাদেশ মানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ মানে শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ মানে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ মানে নৌকা । যাদের রাজনৈতিক ঐতিহ্যের তুলনা কেবল তারা নিজেই। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এযাবতকালে বাংলাদেশে যত সরকার এসেছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল  রাষ্ট্রনায়ক,  বিশ্বে প্রভাবশালী নারী প্রধানমন্ত্রী, অনুকরণীয় অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।

বিজ্ঞাপন

তৃতীয়বারের মত দেশ পরিচালনা করছেন  শেখ হাসিনা। তার শাসনামলে দেশে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, মূল্যবোধ, কৃষি, অর্থনীতি, রেমিটেন্স, বৈদেশিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশবাসীকে যুগান্তকারী সাফল্য এনে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু আর্থিক বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, দেশ থেকে জঙ্গীবাদ নির্মূল হয়েছে, বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন রকমের সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। যে দেশে মানুষের খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি ছিল সে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বর্তমানে রপ্তানি করছে। শিক্ষার হার বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ এক দশক আগেও শিক্ষা ব্যবস্থার এত উৎকর্ষ লক্ষ্য করা যায়নি। এক সময় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীচক্র টিটকারি বিরুপ মন্তব্য করত। আর আজ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ এখন শেষ হওয়ার পথে। এখন আমরা এখন একটি অগ্রসর জাতি।

শুধু দেশেই নয় আন্তজার্তিক অঙ্গনেও তাঁর কাজের স্বীকৃতি মিলেছে। বাংলাদেশের সফলতা ও নেতৃত্বগুণের জন্য তিনি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন ও নানাবিধ সম্মানে ভূষিত হয়ে বাংলাদেশের নাম বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল করেছেন। বিশ্বের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ এখন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। বিশ্ব গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা এখন বহুল আলোচিত ও প্রশংসিত নেতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনা ছাড়া এমন গুণাবলি সম্পন্ন আর কোনো নেতা বাংলাদেশের মানুষ পায়নি। এ কারণে তাঁর সাথে অন্য কোনো নেতার তুলনা চলে না, শেখ হাসিনা নিজেই নিজের তুলনা। শেখ হাসিনা সামনের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় আসবেন এই আশাবাদ বিশ্ব নেতাদের।

বিজ্ঞাপন

-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ফেসবুকই হোক ফেসবুক আসক্তির প্রতিকার
-------------------------------------------------------

এবার আমরা একটু পিছনে ফিরে দেখি , ঘটনাকাল ১৯৭৫, ১৫ আগস্ট। স্বপরিবারে জাতির জনকের হত্যাকান্ড এবং সেই সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। সংবিধান নষ্ট হল ঘাতকের বুলেটের খোচায়। জিয়াউর রহমান কে স্বধীনতার ঘোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হল। ধর্মের রাজনীতির উত্থান হল। ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষের মনে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢেলে দেয়া হল। ধর্মান্ধতাকে উস্কে দেয়া হল। গোলাম আযম এর মত কুখ্যাত রাজাকারকে নাগরিকত্ব দেয়া হল। সাজা প্রাপ্ত কারাবন্দী যুদ্ধঅপরাধীদের ছেড়ে দেয়া হল। জিয়াউর রহমান সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিদেশে রাষ্ট্রদূতের চাকরী দিল। আর ৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে আমরা আরও ভয়াবহ দৃশ্য দেখলাম। যুদ্ধাপরাধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা মন্ত্রী হয়েছে। ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজ পতাকাকে গাড়িতে উড়িয়েছে। আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মত একজন রাজাকারকে প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত করা হয়। দুর্নীতি দেশকে চ্যাম্পিয়ন করা হল, মুক্তিযোদ্ধারা লাঞ্ছিত হল। ধর্মান্ধতাকে এমন ভাবে ছড়ান হল যা পরবর্তীতে জঙ্গিবাদের জন্ম দেয়। হরকাতুল জিহাদের  মত জঙ্গিদলের জন্ম দিল, যারা উদীচি শিল্পগোষ্ঠীর উপর হামলা করে। আর বাংলাদেশ উন্নতির পথে যাত্রা রেখে অবনতির দিকে যাত্রা শুরু  করে। আমরা এই সব দুঃসহ অতীত থেকে মুক্তি পেলাম ৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের মাধ্যমে।

আমাদের সৌভাগ্য আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছি। ৩য় বারের মত তিনি দেশ পরিচালনা করছেন। এদেশের মানুষের ভাগ্য ভাল তিনি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসেছিলেন তা না হলে একাত্তরের ঘাতক দালাল জামাতগোষ্ঠী কে আমাদের আাজীবন সহ্য করতে হত। বিএনপি জামাত জোট সরকার কে আজীবন ক্ষমতায় দেখতে হত। বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত হত। বাংলাদেশের কান্ডারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যদি আওয়ামী লীগের হাল না ধরতেন তবে আজকে দেশ অধঃগতির চূড়ান্ত ধাপে দাঁড়িয়ে থাকত হেনরি কিসিঞ্জার এর  ‘তলাবিহিন ঝুড়ি’,তে পরিনত  হত।

বিজ্ঞাপন

বলতে গেলে জীবনকে উৎসর্গ করার নিমিত্তে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। কারন তার ফিরে আসা এত সহজ ছিল না। প্রবাসে যাওয়ারপূর্বে বাবা মা, ভাই  সব ছিল। ফিরে এসে দেখলেন কেউ নেই । তদানিন্তন সামরিক শাসকের বাধা জয় করে দেশে ফিরলেন শোককে শক্তিতে পরিনত করলেন। শপথ নিলেন জাতির জনকের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার । আর কোন নেতার পক্ষে সব হারিয়ে এমন স্থির থাকা সম্ভব হত কিনা তা আমার জানা নেই। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে এদেশের মানুষকে বঙ্গবন্ধুর মতই ভালোবেসে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এসেছেন। তিনি পরিবার হারিয়ে বাংলার মানুষকে পরিবার হিসেবে নিয়েছেন। জীবন বাজি রেখে রাজনীতিতে আসা বঙ্গবন্ধুরকন্যা শেখ হাসিনাকেও দেশের মানুষও ভালোবেসে বুকে জড়িয়ে নিয়েছেন। ‘এদেশের মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে যদি আমার মৃত্যুও হয় তবুও আমি পিছপা হব না।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষনে দেখা যায় এ দেশে শেখ হাসিনা সরকার এলে স্বাধীনতার চেতনা অক্ষুন্ন থাকে।  বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মাথা উচু করে দাঁড়ায়। মুক্তিযোদ্ধাদের উপযুক্ত সম্মান দেয়া হয়। সেই সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি, জঙ্গীবাদ, মাদক, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ভোটের আগে সাধারন জনগন কে এগুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। আপনারা চিন্তা করুন আপনারা কি যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে  পতাকা দেখতে চান ? আলবদর রাজাকারদের পুনর্বাসন চান ? দেশে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ দেখতে চান ? নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অক্ষুন্ন ও উন্নয়নের ধারা  অব্যাহত রাখতে চান ?  সে বিবেচনার ভার দলের একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের হাতেই তুলে দিলাম।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৫২, ১৯৬৬, ১৯৭০, ১৯৭১  সহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। সফল হয়েছে। দেশ ও মানুষের জন্য বিগত একশত বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীবৃন্দ রাজপথে থেকেছে, রক্ত দিয়েছে, দমন পীড়ন জেল জুলুম সহ্য করেছে। আগেই বলেছি আওয়ামী লীগের মত ঐতিহাসিক সাফল্যমণ্ডিত দল আর একটিও নেই এই দেশে। এ কারণে কেউ যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল নিবেদিত দলকে ভোট দিতে চান তবে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আবার জনগণ যদি দেশের সবচেয়ে সফল নেতাকে ভোট দিতে চান তাহলে জননেত্রী শেখ হাসিনাকেই ভোটটা দিতে হবে। দল ও দলপ্রধান বিবেচনায় সচেতন বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষ কোন ভাবেই আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা ছাড়া অন্য কোন প্রতিককে ভোট দিতে পারবে না।

আবারও বলছি, আাপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও জয়যুক্ত করুন।  বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এর কোন বিকল্প নেই।      

আরও পড়ুন :

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |