করোনা আতঙ্কে সম্মেলন বাতিল করল ফেসবুক
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে ফেসবুক তাদের সবচেয়ে বড় বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলন ‘এফ ৮’ বাতিল করেছে। বৃহস্পতিবার 'এফ ৮' ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
এক পোস্টে বলা হয়েছে, আমাদের ডেভেলপার সহযোগী, কর্মী ও এফ ৮ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এ বছরের এফ ৮ সম্মেলন বন্ধ করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
ফেসবুকের প্ল্যাটফর্ম পার্টনারশিপ বিভাগের প্রধান কনসটানটিনোস পাপামিলটাডিয়াস ব্লগে এক পোস্টে বলেন, বড় আকারের অনুষ্ঠান করার পরিবর্তে স্থানীয় পর্যায়ে ছোট ছোট অনুষ্ঠান করা হবে।
চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবারের 'এফ ৮' সম্মেলন।
এমকে
মন্তব্য করুন
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর ইউটিউব চ্যানেল হ্যাকড
জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে মাওলানা মিজানুর রহমানের টিম চ্যানেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে মালয়েশিয়া থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিজানুর রহমান আজহারীর মিডিয়া ম্যানেজার সাঈদ হক।
তিনি বলেন, প্রথমে ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাক করা হয়। এরপর চ্যানেলে কিছুক্ষণ ক্রিপ্টোকারেন্সির লাইভ দেওয়া হয়। পরে চ্যানেলটি প্রাইভেট করে রাখেন হ্যাকাররা।
বর্তমানে চ্যানেলের কোনো নিয়ন্ত্রণ মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী কিংবা তার টিমের কারও হাতে নাই বলে নিশ্চিত করেছেন সাঈদ হক। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ইউটিউবে অসংখ্য ভক্ত রয়েছে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর। সেখানে নিয়মিত তার বয়ান ও আলোচনা আপলোড করা হয়। নিয়মিত লাইভ প্রশ্ন-উত্তর পর্বও অনুষ্ঠিত হয় সেখানে।
আরটিভি/এসএইচএম
স্ত্রীকে নিজের ডিজাইনের গাড়ি উপহার দিলেন মার্ক জাকারবার্গ
নিজের ডিজাইন করা গাড়ি স্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ। সেই গাড়ি তৈরি করেছে বিশ্বখ্যাত মোটারগাড়ি নির্মাতা পোরশে।
এছাড়া নিজের জন্যও একটি পোরশে গাড়ি কিনেছেন, তবে সেটির নকশা মার্কের করা নয়। দুটি গাড়ি পেছনে রেখে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নিজেদের ছবিও প্রকাশ করেছেন মার্ক জাকারবার্গ।
স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানের জন্য জাকারবার্গের নকশায় তৈরি করা গাড়িটির নাম পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যান। সাধারণত এমন গাড়ি পোরশে বানায় না। শুধু মার্ক জাকারবার্গের জন্যই ওয়েস্ট কোস্ট কাস্টমস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় মিনিভ্যানটি তৈরি করেছে পোরশে। জাকারবার্গের নিজের জন্য কেনা গাড়িটির মডেল পোরশে ৯১১ জিটি৩। দুটি গাড়ির রংই ধূসর।
প্রসঙ্গত ওয়েস্ট কোস্ট কাস্টমসের মাধ্যমে ক্রেতারা চাইলেই নিজের মতো করে গাড়ির নকশা ও বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আনতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই নিজের পছন্দের নকশায় স্ত্রীর জন্য পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যান গাড়িটি তৈরি করেন মার্ক জাকারবার্গ।
ইনস্টাগ্রামে মার্ক জাকারবার্গ লিখেছেন, ‘আরেকটা নতুন গল্প। প্রিসিলা একটি মিনিভ্যান চেয়েছিল, তাই আমি এমন কিছু নকশা করেছি। আমি নিশ্চিতভাবে এমন একটি নকশা করেছি, যা একটি পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যান। আরেকটি ম্যানুয়াল জিটি–৩ নিয়েছি। পোরশে ও ওয়েস্ট কোস্ট কাস্টমকে ধন্যবাদ।’
গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজ বাড়ির পেছনের উঠানে স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানের বিশাল ভাস্কর্য উন্মুক্ত করেন মার্ক জাকারবার্গ। রুপালি চাদরে আচ্ছাদিত ভাস্কর্যটিতে প্রিসিলা চ্যানের চেহারা সবুজ রঙে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও হাইপারবিস্ট
আরটিভি/এফআই
দেশে দুই মাসে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে ২ লাখের বেশি
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রতি মাসে দেশের ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর আগস্টের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
এতে দেখা গেছে, জুলাই মাস থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক সংখ্যায় ভাটা পড়েছে। গত আগস্ট মাসেও দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক কমেছে ৫৫ হাজার। এর আগে, টানা পাঁচ মাস দেশে গ্রাহক সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। দুই মাসের ব্যবধানে গ্রাহক কমেছে ২ লাখ ২০ হাজার।
বিটিআরসির তথ্যমতে, গত জুন মাসে দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক ছিল ১২ কেটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার। জুলাই মাসে তা কমে দাঁড়ায় ১২ কেটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার। আর সবশেষ জুলাই মাসে গ্রাহক সংখ্যা কমে ১২ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজারে নেমেছে।
মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক কমে যাওয়ায় দেশের মোট ইন্টারনেট গ্রাহকও কমে গেছে। জুন মাসে দেশে মোট ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ১৪ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার। জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজারে এবং সবশেষ আগস্টে তা আরও কমে ১৪ কোটি ৫০ হাজারে নেমেছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বৃদ্ধিও গ্রাহক কমার একটি কারণ উল্লেখ করে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন কারণে গ্রাহক সংখ্যা কমতে বা বাড়তে পারে। ঠিক কী কারণে গ্রাহক কমেছে, সংস্থা হয়তো তা খতিয়ে দেখবে। তবে এতে খুব বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই।
ছাত্র-জনতার সরকার পতন আন্দোলনে প্রচুরসংখ্যক মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে উল্লেখ করে একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির কমিউনিকেশন্স বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, জুলাই ও আগস্ট মাস আমাদের (অপারেটর) জন্য খুব ভয়াবহ ছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সরকার দফায় দফায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। সেসময় অনেক গ্রাহক হারিয়েছি আমরা। অনেকে নিয়মিত প্যাকেজ কেনাও বন্ধ করেছেন সেসময় থেকে। এখন নানা ধরনের অফার দিয়ে সেই গ্রাহকদের আবারও সক্রিয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতি হয়তো খুব শিগগিরই স্বাভাবিক হবে।
আরটিভি/টিআই
সাইবার হামলার ঝুঁকিতে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বিরাট অংশ
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনগুলোর বিরাট একটা অংশ সাইবার হামলার ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তা সংক্রান্ত গবেষকেরা। মূলত, কোয়ালকমের অন্তত ৬৪টি মডেলের প্রসেসরে নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পেয়েছেন তারা, যা কাজে লাগিয়ে সহজেই সাইবার হামলা চালানো সম্ভব বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
নিজেদের প্রসেসরে থাকা নিরাপত্তাত্রুটির বিষয়টি স্বীকার করেছে কোয়ালকম কর্তৃপক্ষও। তারা জানিয়েছে, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ব্যবহৃত কোয়ালকমের তৈরি বিভিন্ন সংস্করণের প্রসেসরে সিভিই-২০২৪-৪৩০৪৭ নামের জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা প্যাঁচ উন্মুক্তের আগে হ্যাকাররা যদি সেই ত্রুটি ব্যবহার করতে পারে, তখন সেটিকে জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি বলা হয়। কোয়ালকমের তৈরি প্রসেসর যেহেতু বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়, তাই এই জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটির কারণে অনেক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী সাইবার হামলার শঙ্কায় রয়েছেন।
অবশ্য গুগল থ্রেট অ্যানালাইসিস গ্রুপ (টিএজি) জানিয়েছে, এই জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে সাইবার হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। ফলে সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের ওপর হামলার শঙ্কা নেই।
কোয়ালকমের তথ্যমতে, ৬৪টি মডেলের প্রসেসরে এই নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়া গেছে। স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ১ ও স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮+ প্রসেসরের পাশাপাশি নিরাপত্তাত্রুটি থাকা জনপ্রিয় প্রসেসরের তালিকায় স্ন্যাপড্রাগন ৬৬০ ও স্ন্যাপড্রাগন ৬৮০–এর মতো প্রসেসরও আছে। স্মার্টফোনের প্রসেসর ছাড়াও ওয়াই–ফাই এবং ফাইভ–জির জন্য ব্যবহৃত কোয়ালকমের ফাস্টকানেক্ট ৬৭০০, ৬৮০০, ৬৯০০ ও ৭৮০০ মডেমের মডিউলে এই নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়া গেছে।
কোয়ালকমের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসে নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখন স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সফটওয়্যারে এই নিরাপত্তা প্যাঁচ যুক্ত করে সিকিউরিটি আপডেট হিসেবে ব্যবহারকারীদের জন্য প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী নিরাপত্তা হালনাগাদে এ ত্রুটির সমাধান পেতে পারেন ব্যবহারকারীরা।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর
যে কারণে ৮৪ লাখের বেশি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল হোয়াটসঅ্যাপ
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে মেটার হোয়াটসঅ্যাপ। এই অ্যাপের মেসেঞ্জার হলো একটি আন্তর্জাতিকভাবে উপলব্ধ ফ্রিওয়্যার, ক্রস-প্ল্যাটফর্ম, সেন্ট্রালাইজড ইন্সট্যান্ট মেসেজিং এবং ভয়েস-ওভার-আইপি পরিষেবা। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের পাঠ্য এবং ভয়েস বার্তা পাঠাতে, ভয়েস এবং ভিডিও কল করতে এবং ছবি, নথি, ব্যবহারকারীর অবস্থান এবং অন্যান্য শেয়ার করতে দেয়।
নিজেদের প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রায়ই কাটছাঁট চালায় মেটা। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নিয়মও আনে প্রতিষ্ঠানটি, যেগুলো অমান্য করলেই শান্তির আওতায় আনা হয় ব্যবহারকারীদের। এবার এসব নিয়ম না মানায় সম্প্রতিপ্রায় ৮৪ লাখ (৮.৪ মিলিয়ন) অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ।
জানা গেছে, হোয়াটসঅ্যাপ তাদের নিজস্ব সুরক্ষা প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এবং অন্যান্য প্রযুক্তির সাহায্যে প্ল্যাটফর্মে অপব্যবহার রোধে কাজ করছে। বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী থাকায় হ্যাকাররা মেটা মালিকানাধীন অ্যাপটিকে বারবার টার্গেট করে। এর ফলে নতুন নিয়ম আনে অ্যাপটি। সম্প্রতি এই নিয়ম না মানার কারণে ভারতের প্রায় ৮৪ লাখ হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে মেটা। বন্ধ করে দেওয়া অ্যাকাউন্টগুলোর বেশিরভাগই স্প্যাম বা অটোমেটেড বার্তা পাঠানোর কারণে বাতিল করা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি নিয়ম ২০২১-এর ধারা ৪(১)(ডি) এবং ধারা ৩এ(৭) মেনে হোয়াটসঅ্যাপের নীতি লঙ্ঘন বা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা মূলত হোয়াটসঅ্যাপের প্রো-অ্যাকটিভ ডিটেকশন মেকানিজমের মাধ্যমে হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৬১ হাজার অ্যাকাউন্ট কোনো ব্যবহারকারীর অভিযোগ দায়ের করার আগেই বন্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের আগস্টে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে ১০ হাজার ৭০৭টি অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে ৯৩টির বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
আরটিভি/এসএপি/এআর
যেভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন
বর্তমানে চাইলে ঘরে বসেই খুব সহজে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। আয়কর অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ঝামেলায় পড়তে হবে না। এছাড়াও ই-রিটার্ন থাকার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটা দিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন, ই-পেমেন্ট করতে পারবেন। এমনকি ঘরে বসেই সনদ, আয়কর রিটার্নের কপি নেওয়া যাবে এবং রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোর আবেদন করার সুযোগ রয়েছে অনলাইনে। অন্যান্য বারের মতো এই অর্থবছরেও (২০২৪-২৫) বাসায় বসেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করা যাবে।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রতিটি ধাপ কীভাবে পেরোবেন, তা তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে—
যাদের জন্য আয়কর প্রযোজ্য:
বাংলাদেশে ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সময় ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। রিটার্ন দাখিলের আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইট থেকে চলতি অর্থবছরের কর নির্দেশাবলী পড়তে ভুলবেন না।
এনবিআরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে তাকে আয়কর দিতে হবে। তবে নারী ও ৬৫-ঊর্ধ্ব নাগরিকদের করমুক্ত আয়ের সীমা চার লাখ টাকা। আর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এটি পাঁচ লাখ টাকা।
এছাড়া, পূর্ববর্তী কর মূল্যায়ন, শহরে বাসস্থান, গাড়ির মালিকানা, নির্দিষ্ট কিছু পেশার সদস্যপদ, ব্যবসা পরিচালনা এবং দরপত্র বা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্যও আয়কর পরিশোধ করতে হয়। এটি নিবন্ধিত কোম্পানি ও এনজিওগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আর মনে রাখবেন, করদাতা সনাক্তকরণ নাম্বার (টিআইএন) থাকলে আপনার করযোগ্য আয় থাকুক বা না থাকুক, আপনাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতেই হবে। করযোগ্য আয় না থাকলে শূন্য রিটার্ন দাখিল করা যাবে। সেটা না করলে আইনে শাস্তি ও জরিমানার বিধান আছে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
কর দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র—ইটিআইএন, জাতীয় পরিচয় পত্রের (এনআইডি) ফটোকপি, বিস্তারিত ঠিকানা এবং আগের বছরের রিটার্নের নথি সরবরাহ করুন। একাধিক আয়ের উৎস থাকলে প্রয়োজন মোতাবেক কাগজপত্র সংগ্রহ করুন। বিনিয়োগের বিবরণ, সম্পত্তির তথ্য এবং করমুক্ত আয়ের সার্টিফিকেট অন্তর্ভুক্ত করুন।
টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নাম্বার) সনদধারী প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য প্রতিবছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। বয়স ১৮ অতিক্রম করলে টিআইএন সদন নেওয়াও বাধ্যতামূলক। আপনি যখন টিআইএন-এর জন্য আবেদন করবেন, আপনাকে কর দাখিলের জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা বরাদ্দ করা হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে তখন আপনাকে আয় বিবরণী জমা দিতে হবে। এরপর নিজে গিয়ে অথবা কোনো
প্রতিনিধির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কর অফিসে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে চাইলে প্রথমে এনবিআরের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করতে, ওয়েবসাইটের ই-রিটার্ন শাখায় ক্লিক করুন। সেখানে ‘সাইন আপ’ অপশনে গিয়ে প্রথম বক্সে আপনার টিআইএন নাম্বার লিখুন। দ্বিতীয় বক্সে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত মোবাইল নাম্বারটি লিখুন (প্রথম শূন্য বাদ দিয়ে)। এরপর ক্যাপচা কোড দিয়ে ‘ভেরিফাই’ বাটনে ক্লিক করুন। ফোনে আসা ওটিপি ব্যবহার করে আপনার ফোন নাম্বারটি নিশ্চিত করুন। সবশেষে ই-রিটার্ন সিস্টেমে লগ ইন করতে একটি পাসওয়ার্ড ঠিক করুন।
১. ই-রিটার্ন সিস্টেমে প্রবেশ
একবার নিবন্ধন করা হয়ে গেলে এরপর আপনি ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার টিআইএন, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা দিয়ে সাইন ইন করতে পারবেন। এরপর একটি ড্যাশবোর্ড পাবেন। এর বাম দিকে থাকা 'রিটার্ন সাবমিশন' অপশনে ক্লিক করতে হবে।
২. কর যাচাইয়ের তথ্য
ই-রিটার্ন ফরমের শুরুতেই থাকবে ‘ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট ইনফরমেশন’। সেখানে আয়কর সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য– রিটার্ন স্কিম, আয়ের সাল ও উৎস দিতে হবে। আপনার আয় যদি করমুক্ত হয়, তাহলে আয়ের পরিমাণের পাশাপাশি ‘রেসিডেন্ট স্ট্যাটাস’ দিতে হবে।
৩. আয়ের বিবরণ
এই পর্যায়ে, 'হেডস অফ ইনকাম'-এ গিয়ে আপনার বিভিন্ন আয়ের উৎস দিন। এখানে আপনার বেতন, নিরাপত্তা সুদ, বাড়ি-সম্পত্তি থেকে আয়, কৃষি আয়, ব্যবসা থেকে আয়, মূলধন লাভ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আয় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
যদি আপনার বেতন আপনার আয়ের একমাত্র উৎস হয়, তাহলে ‘স্যালারি’ অপশনে ক্লিক করুন। এর বাইরে আয় থেকে থাকলে ‘ইনকাম ফ্রম আদার সোর্সেস’ অপশনে ক্লিক করুন। সেখানে অন্যান্য যেসব উৎস থেকে আয় করে থাকেন, তাতে ক্লিক করুন। এরপর ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
৪. অতিরিক্ত তথ্য
এই ধাপে একটি ড্রপডাউন মেনু থেকে আপনার প্রাথমিক আয়ের উৎসের স্থান ঠিক করবেন। সেখানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মতো অনেকগুলো অপশন থাকবে।
আপনি যদি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির আইনি অভিভাবক হয়ে থাকেন, সেটিও এখানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এছাড়া, বিনিয়োগের জন্য আপনি করমুক্তির দাবিদার কি না এবং আপনি কোনো সংস্থার শেয়ারহোল্ডার পরিচালক কি না, তা 'হ্যাঁ' বা 'না'-এর মাধ্যমে উত্তর দেবেন।
৫. আইটি১০বি পূরণ
যদি আপনার সম্পূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা বা তারচেয়ে বেশি হয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই স্টেটমেন্ট ফর্মের ব্যয় বিভাগটি পূরণ করতে হবে। এজন্য ‘আইটি১০বি ফর্ম’ পূরণ করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখের কম হলে তা পূরণ করতে হবে না। এক্ষেত্রে, আপনার ও আপনার পরিবারের বার্ষিক খরচের হিসেব দিতে হবে। এরপর ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
৬. আয়ের বিবরণ
অন্যান্য উৎস থেকে আসা আয়, বৈদেশিক আয় বা কর-অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয়ের বিবরণ দিন। বেতন বা করযোগ্য বিনিয়োগ ছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে আসা আয়ের তথ্য দিতে আপনি ড্রপডাউন মেনুতে বিভিন্ন অপশন পাবেন।
‘এনি আদার ইনকাম’ অপশনে ক্লিক করলে সেখানে আপনার অন্য আয়ের উৎস, অর্থ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ, প্রাপ্ত সর্বশেষ আয়ের তারিখ ও পরিমাণ, এবং সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের হিসেব দিতে হবে। এসব তথ্য দেওয়ার পর আপনার নেট আয়ের হিসেব দেখানো হবে। আবার ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
৭. বিনিয়োগ বিভাগ
আপনি যদি বর্তমানে জীবন বীমা প্রিমিয়াম, ডিপোজিট প্রিমিয়াম সার্ভিস (ডিপিএস), অনুমোদিত সঞ্চয়পত্র, সাধারণ প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনেভোলেন্ট ফান্ড, গ্রুপ বীমা প্রিমিয়াম, অনুমোদিত স্টক বা শেয়ার, কিংবা অন্যান্য ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করে থাকেন, সেগুলো এখানে উল্লেখ করবেন।
ধরুন আপনি যদি ‘ডিপিএস’ অপশনে ক্লিক করেন, তাহলে সেখানে ব্যাংকের নাম, অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দিতে হবে। এভাবে অন্যান্য অপশনে গেলেও আপনাকে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। আবার ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
৮. ব্যয়
এই বিভাগে, মোট আয়ের বিপরীতে আপনার মোট ব্যয় পর্যালোচনা করতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের বিভাগ থাকবে। খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান (পরিবহন, গৃহস্থালি, ইউটিলিটিসহ), বাচ্চাদের শিক্ষা এবং অন্য কোনো ব্যয়ের খাত থাকলে তা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এই বিবরণগুলো পূরণ করলে আপনার বকেয়া করের হিসেব দেওয়া হবে।
৯. কর এবং পেমেন্ট
এখানে আপনি ইতোমধ্যে কোনো উৎস কর এবং অগ্রিম কর প্রদান করে থাকলে তার হিসেব দিতে পারবেন। এই হিসেব দেওয়ার পর আপনার মোট প্রদেয় করের পরিমাণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যাবে। আপনার আয়ের উপর কোনো কর বকেয়া না থাকলে আপনার প্রদেয় করের পরিমাণ হবে শূন্য। একে 'শূন্য রিটার্ন' বলা হয়।
১০. রিটার্ন ভিউ
‘অনলাইন রিটার্ন’ অপশনে ক্লিক করলে আপনি রিটার্ন ফর্মটি দেখতে পাবেন। তার নিচে 'ইয়েস' অপশনে ক্লিক করলেই আপনার রিটার্ন চলে যাবে। কোনো তথ্য নিয়ে সন্দেহ থাকলে আপনি 'নো' অপশনে ক্লিক করতে পারেন এবং আবার সব তথ্য দেখে নিতে পারেন।
১১: রসিদ ডাউনলোড করুন
যদি আয়কর রিটার্ন সফলভাবে জমা হয়, তাহলে আপনাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা লেখা দেখবেন। সেখানে আপনি একটি রেফারেন্স আইডি ডাউনলোড করার অপশন পাবেন। সেটি ডাউনলোড করে অনলাইনেই আপনি আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। অথবা সেটি প্রিন্ট করে আয়কর অফিসে পাঠাতে পারেন।
এই প্রক্রিয়াটি জটিল মনে হলে আপনি কোনো কর আইনজীবীর দ্বারস্থ হতে পারেন। এছাড়া, বিডিটেক্স এবং শাপলা ট্যাক্সের মতো অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম ও অ্যাপ্লিকেশন আছে, যেগুলো আপনাকে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সাহায্য করবে।
আরটিভি/এফআই/এআর
রয়্যাল এনফিল্ড বাজারে আসছে সোমবার, থাকছে যেসব ফিচার
অবশেষে অনুমোদনের দীর্ঘ এক বছর পর দেশের বাজারে আসছে ‘রয়্যাল এনফিল্ড’। সোমবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশে লঞ্চ হতে যাচ্ছে চার মডেলের ৩৫০ সিসির বাইক। বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ডের একমাত্র প্রস্তুতকারক ও পরিবেশক ইফাদ মোটরস বাজারে নিয়ে আসছে এই আইকনিক ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল।
নতুন মডেলের নাম ও দামের বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানায়নি কোম্পানিটি। তবে অভ্যন্তরীণ সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দুপুরে চারটি ৩৫০ সিসির মডেল—হান্টার, বুলেট, ক্লাসিক ও মিটিয়র—অনলাইনে লঞ্চ করা হবে। পরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে রয়্যাল এনফিল্ডের ফ্ল্যাগশিপ শোরুমে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মডেলগুলো উন্মোচিত হবে।
টেস্ট রাইডাররা বলছেন, নতুন প্রজন্মের রয়্যাল এনফিল্ড মডেলগুলো ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি আরও উন্নত পারফরম্যান্স নিশ্চিত করবে।
মডেলগুলোর দাম কত হবে, তা এখনো জানানো না হলেও ধারণা হচ্ছে, চারটি মডেলের মধ্যে হান্টার ৩৫০-এর দাম হতে পারে সবচেয়ে কম, প্রায় ৪ লাখ টাকা। বুলেট, ক্লাসিক ও মিটিয়র মডেলগুলোর দাম ক্রমান্বয়ে বেশি রাখা হবে। এই চারটি মডেলে থাকবে উন্নত ফুয়েল ইনজেকশন সিস্টেম এবং পরিমার্জিত সিঙ্গেল-সিলিন্ডার 'জে' (J) সিরিজের ইঞ্জিন। এছাড়া রং ও ব্রেকিং সিস্টেমে ওপর ভিত্তি করে আলাদা ভেরিয়েন্টও থাকবে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানা তৈরি করেছে ইফাদ মোটরস।
দীর্ঘ দুই দশক ইঞ্জিন সক্ষমতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখার পর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিন সক্ষমতার মোটরসাইকেলের অনুমোদন দেয়।
একনজরে রয়্যাল এনফিল্ড:
রয়্যাল এনফিল্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনের যাত্রা শুরু ১২৩ বছর আগে, ইংল্যান্ডে। মূলত সামরিক ব্যবহারের জন্য মোটরসাইকেলটির উৎপাদন শুরু হয়। এটি এখনো চালু থাকা বিশ্বের প্রাচীনতম টু-হুইলার ব্র্যান্ড।
১৯৫০-এর দশকে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে যৌথভাবে 'এনফিল্ড ইন্ডিয়া' গঠন করে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য বুলেট ৩৫০ মোটরসাইকেল সংযোজন শুরু করে। পরের কয়েক দশকে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতীয় মোটরসাইক্লিংয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে। যুক্তরাজ্যে ১৯৭০ সালে এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে রয়্যাল এনফিল্ড ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আইশার মোটরসের শতভাগ নিয়ন্ত্রণাধীন। ৫০টিরও বেশি দেশে বিক্রি হয় রয়্যাল এনফিল্ড। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির বিক্রি রেকর্ড ৯ লাখ ইউনিট পেরিয়েছে। ২০২৩ সালে ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার পর নেপালে পঞ্চম সংযোজন কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে রয়্যাল এনফিল্ড।
চলুন জেনে নেওয়া যাক বাইকগুলোর ফিচার সম্পর্কে—
রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০: রয়্যাল এনফিল্ড পরিবারের সবচেয়ে আধুনিক সদস্য হচ্ছে হান্টার। অবশ্য ক্লাসিক মডেলের ধারা অব্যাহত রেখে এর একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিনের ক্ষমতা একই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ৬,১০০ আরপিএমে ১৪.৮৭ কিলোওয়াট এবং চার হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম টর্ক। সামগ্রিক নকশা অনুসারে এই সিরিজ শহুরে পরিবেশের জন্য উপযুক্ত। স্টিলের ফ্রেমটি ন্যাভিগেশন এবং চালক ও যাত্রী দুজনের ফুটপেগের সহায়ক। এখানেও আছে সামনের সাসপেনশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনের সাসপেনশনে টুইন সাইড সুইং আর্ম। হান্টার-৩৫০’ এর আকার ও সর্বোচ্চ ১৮১ কেজি ওজন শামাল দিতে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মোটরসাইকেল চালককে হিমশিম খেতে হয় না। ৩১.১ ইঞ্চি বা ৭৯০ মিলিমিটারের উচ্চতায় বসার জায়গাটি যেকোনো চালক ও যাত্রীর জন্য স্বাভাবিক। তাছাড়া চলন্ত অবস্থায় সুরক্ষার জন্য সামনে এবং পিছনে এবিসসহ হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক তো থাকছেই। বাইকটির যন্ত্রাদি ডিজিটাল হওয়ায় পাওয়ার আউটলেট, হার্ডসাইড কেস এবং স্টোরেজ কভারের সুবিধা আছে। অ্যালুমিনিয়ামের চাকাগুলোতেও লাগানো আছে টিউবলেস টায়ার।
রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০: প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির এক সঙ্গত সংমিশ্রণ রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০। বাতাস চলাচলের মাধ্যমে শীতলীকরণ প্রক্রিয়া সমৃদ্ধ একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিন একটি আদর্শ মোটরসাইকেল হিসেবে মডেলটিকে ন্যায্যতা দেয়। ৬,১০০ আরপিএম (ইভোলিউশন পার মিনিট)-এর সঙ্গে রয়েছে ২০.২ বিএইচপির (ব্রেক হর্সপাওয়ার) হর্সপাওয়ার এবং চার হাজার আরপিএমের সঙ্গে প্রতি ফুট দূরত্বে ১৯ পাউন্ডের টর্ক। তাই শহুরে যানজট বা খোলা-রাস্তা উভয় ক্ষেত্রেই চালনায় ভারসাম্য নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।
এনফিল্ড ঐতিহ্যের সমগ্র নান্দনিকতার ছোঁয়া পড়েছে নকশায়। স্টিলের ফ্রেমটি চালক ও যাত্রী উভয়ের জন্যই স্বাভাবিক হ্যান্ড গ্রিপ্স, হ্যান্ডেলবার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ফুট পেগ নিশ্চিত করে। বাইক চড়ার মুহূর্তগুলোকে আরামদায়ক করার জন্য সামনের সাসপেনশনে রয়েছে ৪১ মিলিমিটার টেলিস্কোপিক ফর্ক আর পেছনেরটাতে একটি টুইন সাইড সুইং আর্ম। যথাযথ নিরাপত্তার স্বার্থে এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম) হিসেবে কাজ করবে সামনে এবং পিছনে উভয় দিকের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক। সতর্ক সংকেত দেওয়ার জন্য যন্ত্রাংশ প্যানেলে রয়েছে চিরাচরিত স্পিডোমিটার ও একটি ফুয়েল লেভেল লাইট। এছাড়াও সঙ্গে বহন করার জন্য আছে হার্ডসাইড কেস, পেছনের র্যাক ও ব্যাগ লাইনারসহ আনুষঙ্গিক নানাবিধ সংযোজনের ব্যবস্থা।
রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০: অন্যান্য সিরিজগুলোর সঙ্গে খুব একটা তারতম্য নেই রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০-এর। ৩৪৯ সিসির একক সিলিন্ডার ইঞ্জিনে অপরিবর্তিত আছে চার হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম (নিউটন-মিটার) টর্ক এবং ৬,১০০ আরপিএমে ২০.২ বিএইচপির ক্ষমতা। টেকসই ও পালিশ করা সর্বাঙ্গে জেনুইন মোটরসাইকেল এক্সেসরিজের (জিএমএ) বিশাল বহর। ইঞ্জিন এবং গিয়ারের মাঝে সুষ্ঠু যোগসাজশ এক মসৃণ রাইডিং অভিজ্ঞতা দেয়। প্রতি ঘণ্টায় গতি ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেলেও কম্পন অনুভূত হবে না। মিটিওর-৩৫০ ও সমস্বরে জানান দেয় স্টিল ফ্রেম এবং সামনের ও পেছনের সাসপেনশনে যথাক্রমে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও টুইন সাইড সুইং আর্মের উপস্থিতি। গ্রাউন্ড থেকে ৩০.১ ইঞ্চি বা ৭৬৪.৫ মিলিমিটারের উচ্চতায় ডুয়্যাল সিট এবং সামনের-পেছনের দুই চাকাতে এবিএসের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক পূর্ণ নিরাপত্তার পরিপূরক। স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, ট্রিপ ওডোমিটার, কম্পাস এবং ন্যাভিগেশন সিস্টেমের ডিজিটাল যন্ত্রাংশ বিশ্বমানের সুবিধা হিসেবে আলাদা আকর্ষণ রাখে।
রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট ৩৫০: বুলেট মডেলকে রয়্যাল এনফিল্ড ঐতিহ্যের প্রতীক বলা যেতে পারে। ক্লাসিকের মতো এটাতেও রয়েছে ৩৪৯ সিসির জে-সিরিজ ইঞ্জিন ও ৬,১০০ আরপিএম-এ ২০.২ বিএইচপি হর্সপাওয়ার। পাশাপাশি এটি চার হাজার আরপিএম-এ প্রতি ফুট দূরত্বে ১৯.৯ পাউন্ড টর্ক দিতে সক্ষম। অর্থাৎ উচ্চগতির জন্য নয়; এটি বরং প্রতি ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ মাইল যাত্রার জন্য উত্তম। সিরিজটি ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মোটরসাইকেল ডিজাইন। ১৯৫৫ সালে মূল প্রতিষ্ঠান এনফিল্ড সাইকেল কোম্পানি ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গঠন করেছিল এনফিল্ড অব ইন্ডিয়া। মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) কেন্দ্রিক এনফিল্ড সাইকেলের উত্তরসূরি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল এই রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট অ্যাসেম্বলির মাধ্যমেই। বুলেটের চিত্তাকর্ষক নকশায় এখনও সেই ঐতিহাসিক ছাপ বিদ্যমান, যা অনায়াসেই যেকোনো মোটরসাইকেল চালকের মন জয় করে নেয়। বুলেটের ভিনদেশী নকশা এবং ইউএসবি চার্জিং পোর্ট বিশেষভাবে নজর কাড়ে। স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হ্যান্ডলিং, সাসপেনশন, এবং ডুয়্যাল সিট সেটআপ একা একা বা কাউকে সঙ্গে নিয়ে চালানো উভয় ক্ষেত্রে ন্যাভিগেশনটা চালকের জন্য সহজাত করে তোলে। সিটটি মোটা-প্যাডের হওয়ায় তা ৮০৫ মিলিমিটার উচ্চতায় চালক ও যাত্রী দুইজনের জন্যই বেশ সহজসাধ্য এবং আরামপ্রদ। ১৩ লিটার ধারণক্ষমতার জ্বালানি ট্যাঙ্ক একবার ভরে নিলে ৩০০ মাইলেরও বেশি নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করা যাবে।
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ এর সম্ভাব্য মূল্য: রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেলের স্থানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইফাদ মোটরস বাইকটির দাম গ্রাহকদের জন্য সারপ্রাইজ রেখেছে। তবে সূত্রে জানা গেছে, রয়্যাল এনফিল্ডের ৩৫০ সিসির বাইকটি দাম হতে পারে সাড়ে ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকার মধ্যে। তবে এর আগে ইফাদ মোটরস জানিয়েছিল, উদ্বোধনকালীন বাজার পরিস্থিতি এবং ডলার মূল্যের ওপর বাংলাদেশে মোটরসাইকেলগুলোর দাম নির্ভর করছে। ডলার রেট প্রায় ১২৫ (বাংলাদেশি) টাকা হলে রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ সিরিজগুলোর দাম হতে পারে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশে ৩৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেলের অনুমতি দেয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে উচ্চ সিসির মোটরসাইকেল স্থানীয় বাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়।
এই সিসিতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা রয়েল এনফিল্ড কখন পাওয়া যাবে, তা নিয়ে দেশের বাইকারদের মধ্যে অধীর আগ্রহ দেখা দেয়। সেই সময় দেশে রয়্যাল এনফিল্ড উৎপাদন এবং বিপণনের ঘোষণা দেয় ইফাদ মটরস।
আরটিভি/এফআই/এআর