স্লো পয়জনিং ধরা পড়ার ভয়ে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কৃষক দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সালেহ প্রিন্স বলেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় স্লো পয়জনিং করে সরকার খালেদা জিয়ার জীবনকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেলে তা ধরা পড়বে। সে কারণেই হয়তো খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিতে চায় না। খালেদা জিয়ার কিছু হলে সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিক-কৃষকবান্ধব সরকার নয়। এই সরকারের আমলে কৃষক, শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় নাই। দুর্নীতি, লুটপাট করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। দেশে-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ছে।
তিনি আরও বলেন, সকল জুট মিল, সুগার মিলসহ অন্যান্য মিল-কারখানা সরকার বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিক, কর্মচারীদের বেকার করে তাদের পরিজনকে দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে।
সরকার কৃষি ও কৃষকের অবস্থা শোচনীয় করে তুলেছে। কৃষক উৎপাদিত ধান ও পাটসহ কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় না। অথচ, ডিজেল, সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া চাল, ডাল, চিনি, তেল, কাপড়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এই অবস্থা চলতে পারে না। কৃষক, শ্রমিক দলের নেতাকর্মীসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা সোমবার পৃথক দুই সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছেন। এর মধ্যে সকালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও দুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
হালুয়াঘাট পৌর শহরের অগ্রযাত্রা কনভেনশন সেন্টারে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হালুয়াঘাট উপজেলা শ্রমিক দলের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবদুল গণি। উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ জেলা ও বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আবু সাঈদ। দুপুর ২টায় একই স্থানে অনুষ্ঠিত হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষক দলের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কৃষক আবদুস সাত্তার। উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবুল বাশার আকন্দ।
উভয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, আবু হাসনাত বদরুল কবীর, বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, আরফান আলী, আবদুল মান্নান মল্লিক, হামিদ, আলী আশরাফ, আবদুল আজিজ খান, হোসনে আরা নীলু, মিজানুর রহমান মিজান, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, ইসহাক হোসেন মাস্টার, মফিজ উদ্দীন মেম্বার, আনোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, ময়মনসিংহ বিভাগীয় শ্রমিক দলের সহসভাপতি মনিরুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক দেবব্রত দাস দুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লু মিয়া, শেরপুর জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জুন, ধোবাউড়া উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক নয়ন মণ্ডল, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুব দলের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল মালেক, উত্তর জেলা ছাত্র দলের সিনিয়র সহসভাপতি আসাদুজ্জামান আসিফ, হালুয়াঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দুলাল, উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাইমুর আরেফীন পাপন, পৌর ছাত্র দলের সদস্য সচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, উপজেলা তাঁতি দলের আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম, আবদুল লতিফ, আবদুল জলিল প্রমুখ। সম্মেলনে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত বিপুলসংখ্যক কাউন্সিলর, ডেলিগেট উপস্থিত ছিলেন।
শ্রমিক দলের কাউন্সিল অধিবেশনে হালুয়াঘাট শ্রমিক দলের সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবদুল গণি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কাউন্সিলরদের গোপন ভোটে মশিউজ্জামান নির্বাচিত হন। কৃষক দলের কাউন্সিলে আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও আবদুল হান্নানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
আরএ/টিআই