সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে ঘোষণা করেছেন। ইশতেহারে ‘সংসদে-রাজপথে সংগ্রামের অঙ্গীকার করেছে জাতীয় নেতারা। জাসদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করলে দলের নির্বাচনী ইশতেহারের ভিত্তিতে সংসদীয় ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি রাজপথে রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন।
ইশতেহারে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট-সংকট-সম্ভাবনা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপট, সংকট-সম্ভাবনার যুগে আমাদের অত্যাবশ্যক জাতীয় পুনর্জাগরণকে কাঠামোবদ্ধ করার জন্য বিদ্যমান সংবিধানের পর্যালোচনা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য সংবিধানের অসঙ্গতি দূর করতে জরুরি ভিত্তিতে ‘সংবিধান পর্যালোচনা’র প্রস্তাব রেখেছে দলটি।
রাষ্ট্র-রাজনীতি-অর্থনীতি-বাজার নিয়ন্ত্রণকারী লুটেরা-দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট দমন, সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা, বৈষম্য-বঞ্চনার অবসান এবং বাংলাদেশের ‘জন্ম শত্রুদের’ মূলোৎপাটন করে জাতীয় বিকাশ অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় পুনর্জাগরণের লক্ষে সংগ্রামের অঙ্গীকারও করা হয়েছে ইশতেহারে।
প্রচলিত আসনভিত্তিক নির্বাচনের বদলে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথাও বলা হয়েছে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। এ ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনার রাজনৈতিক নীতি, সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি, উন্নয়ন নীতি, খাতওয়ারী নীতি, বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য নীতি, জাতীয় নিরাপত্তা নীতি ও পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে দলের বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরা হয়েছে। বিকেন্দ্রীকরণ ও স্তরে স্তরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে জনগণের স্বশাসন কায়েম করা, শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী মেহনতি জনগণের অধিকার-মর্যাদা-কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘উচ্চকক্ষ’ গঠন করাসহ দ্বিকক্ষ-বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা চালু করার কথা বলেছে দলটি।
জাসদের সহসভাপতি ফজলুর রহমান বাবুল, সহসভাপতি শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন ও শ্রমিক নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুন্নবী ইশতেহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জাসদের ৬৬ জন প্রার্থী এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ জন দলীয় প্রতীক ‘মশাল’ এবং দলীয় প্রধান হাসানুল হক ইনুসহ তিনজন ১৪ দলীয় জোটের ‘অভিন্ন প্রার্থী’ হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ৬৬টি আসনের বাইরে বাকি ২৩৩টি আসনে জাসদ ১৪ দলের ‘অভিন্ন প্রার্থীদের’ সমর্থন দিয়েছে।