সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়: কর্নেল অলি
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রায় ২ মাস সময় পূর্ণ করেছে। এই সরকারের কাছে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক। তবে এখনও মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কাজ করছে। কারণ, সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। কোনো অবস্থাতেই দেশের মানুষকে নিরাশ করা যাবে না। সরকারকে সাহায্য করার জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মগবাজারের এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
কর্নেল অলি বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে মনে হয় যে, তাদের অনেকেই ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি দুর্বল। অথচ আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকার গণ-আন্দোলনের সময় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বিশেষত গত ১৫ বছরে গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন ও ফ্যাসীবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন পদ্ধতি ধ্বংস করেছে। সর্বস্তরে আত্মীকরণ ও দলীয়করণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম-খুন, জনগণের ওপর নির্যাতন-জুলুম, মেগা প্রকল্পের আড়ালে ব্যাপক দুর্নীতি, বিশাল ঋণ নিয়ে লুটপাট, এবং বিদেশে লাখো কোটি টাকা পাচার এসব নজিরবিহীন অপরাধ সংঘটিত করেছে। সুতরাং এই দেশে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নাই।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করতে গিয়ে ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন হয়, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তাতে এ যাবৎ সর্বমোট ১৫৮১ জন শহীদ হয়েছেন। সরকারের উচিত জনসম্মুখে তুলে ধরা- কতজন ছাত্র-ছাত্রী, কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে শহীদ হয়েছেন? কোন রাজনৈতিক দলের কতজন শহীদ হয়েছেন এবং সাধারণ মানুষ কতজন শহীদ হয়েছেন? এ ছাড়াও অনুরূপভাবে আহতদের তালিকাও প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এতে করে জনগণ একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবে। এলডিপির শহীদ হয়েছে ৪ জন, অঙ্গহানি হয়েছে ৪ জনের, আহত হয়েছেন ১৫ জন।
কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার অহেতুক সময়ক্ষেপণ করছে। তাদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয়, তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা করছে। কারণ, প্রায় দুই মাস সময় অতিক্রান্ত করার পরও এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের আদালতগুলোতে স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োগ দেওয়া পিপিরা কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়াও আওয়ামীপন্থী বিচারকরা নিজ নিজ অবস্থানে বহাল তবিয়তে আছেন। ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, পাহাড়ি এলাকার কিছু সদস্যদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্মুখে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করতে দেখা যায়। যা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্ত পরিবেশের বিষয়টি হালকাভাবে দেখলে সমস্যা বৃদ্ধি পাবে। সমস্যা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে আমরা কোনো গোষ্ঠীর নিকট ইজারা দিইনি। প্রয়োজনে আর্মির সংখ্যা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পারাপার বন্ধ করতে হবে।
আরটিভি/ ডিসিএনই
মন্তব্য করুন